2ND SUMMATIVE EVALUATION
CLASS 9 (IX) WBBSE
BENGALI QUESTION PAPER
Class 9 Bengali 2nd Unit Test Question Paper Set-1 wbbse | নবম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন সেট-১
📌নবম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র সমস্ত বিষয় | Class 9 All Subject Unit Test Question Paper Click Here
📌 নবম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
Set-1
দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
নবম শ্রেণি বিষয় : বাংলা
সময় : ১.২০ মিনিট পূর্ণমান : ৪০
১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো : ১x১২=১২
১.১ সংস্কৃত ভাষা—
(ক) পরনির্ভরশীল (খ) আত্মনির্ভরশীল
(গ) ভাষা নির্ভরশীল (গ) শব্দ নির্ভরশীল।
উত্তরঃ (খ) আত্মনির্ভরশীল।
২ হিন্দির ‘বঙ্কিম’ বলা হয়—
(ক) রবীন্দ্রনাথকে (খ) শরৎচন্দ্রকে
(গ) নজরুলকে (ঘ) প্রেমচন্দ্রকে।
উত্তরঃ (ঘ) প্রেমচন্দ্রকে।
১.৩ ভাটিয়ালি হল–
(ক) ধৰ্ম (খ) দর্শন (গ) গান (ঘ) যাত্রা।
উত্তরঃ (গ) গান।
১.৪ স্বামী বিবেকানন্দ চিঠিটি লিখেছেন—
(ক) ৩০ জুলাই, ১৮৯৭ (খ) ৩০ জুলাই, ১৮৯৮
(গ) ২৯ জুলাই, ১৮৯৮ (ঘ) ২৯ জুলাই, ১৮৯৭
উত্তরঃ (ঘ) ২৯ জুলাই, ১৮৯৭
১.৫ স্বামী বিবেকানন্দ যাঁকে উদ্দেশ্য করে চিঠিটি লিখেছেন—
(ক) মিঃ ই টি স্টার্ডি (খ) মিস মুলার
(গ) মিস্ নোবল (ঘ) মিসেস কুল।
উত্তরঃ (গ) মিস্ নোবল।
১.৬ স্বামী বিবেকানন্দ যে স্থান থেকে চিঠি লিখেছেন—
(ক) দার্জিলিং (খ) শিলং (গ) আলমোড়া (ঘ) দেরাদুন।
উত্তরঃ (গ) আলমোড়া।
১.৭ রাধারাণী রথ দেখতে গিয়েছিল—
(ক) পুরীতে (খ) জয়নগরে (গ) মাহেশে (খ) শ্রীরামপুরে।
উত্তরঃ (গ) মাহেশে।
১.৮ রাধারাণীদের সম্পত্তি ছিল প্রায়—
(ক) পাঁচলক্ষ টাকার (খ) দশ লক্ষ টাকার
(গ) বারো লক্ষ টাকার (ঘ) কুড়ি লক্ষ টাকার।
উত্তরঃ (খ) দশ লক্ষ টাকার
১.৯ ‘আকাশে সাতটি তারা’ কবিতাটি যে কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত—
(ক) বনলতা সেন (খ) ধূসর পাণ্ডুলিপি
(গ) রূপসী বাংলা (ঘ) সাতটি তারার তিমির।
উত্তরঃ (গ) রূপসী বাংলা।
১.১০ ‘আসিয়াছে শান্ত অনুগত _____________’—
(ক) গোধূলি (খ) কালো সন্ধ্যা
(গ) নীল সন্ধ্যা (ঘ) সোনালি সন্ধ্যা
উত্তরঃ (গ) নীল সন্ধ্যা
১.১১ ‘আবহমান’ কবিতার কবি—
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (খ) নজরুল ইসলাম
(গ) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (ঘ) সুকান্ত ভট্টাচার্য।
উত্তরঃ (গ) নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।
১.১২ ‘আবহমান’ কথাটির অর্থ—
(ক) বর্তমান (খ) অতীত (গ) চিরকালীন
(ঘ) প্রাচীনকালের।
উত্তরঃ (গ) চিরকালীন।
২. কমবেশি ১৫টি শব্দে উত্তর দাও : ১×৮=৮
২.১ পদ কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে সকল বিভক্তিযুক্ত অর্থবোধক শব্দ বাক্য গঠনে ব্যবহৃত হয় সেগুলি প্রত্যেকটি এক একটি পদ অর্থাৎ যখন কোনো শব্দ বা ধাতু বিভক্তিযুক্ত হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে পদ বলে।
২.২ উপসর্গ দিয়ে একটি করে শব্দ গঠন করে দেখাও : খোশ, দর।
উত্তরঃ খোশ— খোশমেজাজ, দর— দরকাঁচা।
২.৩ অনুসর্গের অপর নাম কী ?
উত্তরঃ অনুসর্গের অপর নাম পরসর্গ, কারণ এটি শব্দের পরে বসে এবং কারক ও অকারক পদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে।
২.৪ দুটি মৌলিক ধাতুর উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ যেসকল ধাতুকে ভাঙা বা বিশ্লেষণ করা যায় না তাদের মৌলিক বা সিদ্ধ ধাতু বলে। উদাহরণ: √কর্, √চল, √দেখ্, √খেল,√পড়, √খা।
২.৫ শব্দদুটির ব্যুৎপত্তি নির্ণয় করো : গন্তব্য, দাশরথি।
উত্তরঃ ‘গন্তব্য’ শব্দটি এসেছে ‘গম্’ (গম্) ধাতু এবং ‘তব্য’ প্রত্যয় থেকে। ‘গম্’ মানে যাওয়া বা গমন করা এবং “তব্য” একটি সংস্কৃত প্রত্যয় যা কর্তব্য বা উচিত অর্থে ব্যবহৃত হয়।
‘দাশরথি’ শব্দটি ‘দশরথ’ শব্দ থেকে এসেছে, যেখানে “ষ্ণি” (বা “ই”) প্রত্যয় যুক্ত হয়ে “দাশরথি” গঠিত হয়েছে। এর অর্থ “দশরথের পুত্র”।
২.৬ তৎসম শব্দ কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে সমস্ত সংস্কৃত শব্দ কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়াই বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে তাকে তৎসম শব্দ বলে।
২.৭ দুটি বিদেশি শব্দের উদাহরণ দাও, যা বাংলা শব্দভাণ্ডারে প্রচলিত।
উত্তরঃ চেয়ার, টেবিল।
২.৮ পিলে, হরতাল– কোন্ প্রাদেশিক ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় এসেছে ?
উত্তরঃ ‘পিলে’ শব্দটি এসেছে ফারসি ভাষা থেকে, আর ‘হরতাল’ শব্দটি এসেছে গুজরাটি ভাষা থেকে। উভয় শব্দই বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে।
৩. যে কোন একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : (১৫০ শব্দ) ৫×১=৫
৩.১ সৈয়দ মুজতবা আলী সংস্কৃত ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল বলেছেন কেন ? ইংরাজি ও বাংলা ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল নয় বলেছেন কেন ? ২+৩
উত্তরঃ প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত’নব নব সৃষ্টি’ রচনাংশে লেখক সংস্কৃত ভাষাকে আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলেছেন। কারণ, তিনি মনে করেন,কোন নতুন চিন্তা,নিজের অনুভূতির প্রকাশের জন্য নতুন শব্দের প্রয়োজন হলে সংস্কৃত ভাষা অন্য কোন ভাষা থেকে শব্দ ধার করে না। নিজের শব্দ ভান্ডারে এমন কিছু ধাতু বা শব্দ খোঁজ করে, সামান্য কিছু অদল বদল করে নতুন শব্দটি তৈরি করা যেতে পারে। এই কারণেই সংস্কৃতিকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং আত্মনির্ভরশীল ভাষা বলা হয়েছে।
প্রাচীন যুগের সংস্কৃত ভাষা তো বটেই, তা
ছাড়া হিব্রু, গ্রিক, আবেস্তা প্রভৃতি সব ভাষাই ছিল আত্মনির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমান যুগের ইংরেজি ও বাংলা ভাষা আত্মনির্ভরশীল নয়। কারণ, প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা থেকে শব্দ গৃহীত হয়েছে ও হচ্ছে। পাঠান-মোগল শাসন যুগে আইন-আদালত, খাজনাখারিজ ব্যাপারে নতুন নতুন শব্দের জন্য আরবি ও ফারসি ভাষা থেকে শব্দ নিতে হয়েছিল। তার পরবর্তী ইংরেজ শাসন যুগে ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে নিতে হয়েছে কিংবা হচ্ছে অন্যান্য ভাষা থেকে শব্দ। ইংরেজির মাধ্যমে প্রচুর ইউরোপীয় শব্দ আমাদের বাংলা ভাষায় ঢুকেছে। কাজেই বর্তমান বাংলা ভাষা আত্মনির্ভরশীল নয়।
৩.২ রাধারাণী ও তার মায়ের দুর্বস্থার পরিচয় দাও।
উত্তরঃ লেখক বঙ্কিমচন্দ্র রচিত পাঠ্যাংশটির প্রথমেই, রাধারানী নামের একটি বালিকার কথা পাওয়া যায়। বড়ো ঘরের মেয়ে হলেও বাবা মারা যাওয়ার পর, তার বিধবা মায়ের সঙ্গে জ্ঞাতির সম্পত্তিগত বিরোধের কারণে তারা নিঃস্ব, রিক্ত ও সর্বহারা হয়ে পড়ে। তাদের অনাহারে, অর্ধাহারে, শারীরিক অসুস্থতাজনিত নানা কারণে কোনো রকমে দিন কাটে। রথের দিন রাধারাণীর মা প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়লে, মায়ের জন্য পথ্য জোগাড় করতে বনফুলের মালা গেঁথে বিক্রি করতে রাধারাণী রথের মেলায় যায়। কিন্তু প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টিতে রাধারাণীর মালা বিক্রি হয় না। প্রচণ্ড দুর্যোগে একা একা বাড়ি ফেরার পথে একজন পুরুষের সঙ্গে রাধারাণীর পরিচয় হয়। সেই ব্যক্তি নিজের পরিচয় না জানিয়ে রাধারাণীর অবস্থা জানতে পেরে রাধারাণীর তৈরি করা মালাটি অন্ধকারে বেশি পয়সা দিয়ে কিনে নেয়। এমনকি রাধারাণীর কাপড়ের অপ্রতুলতার কথা শুনে, সে কৌশলে পাশের কাপড়ের দোকানিকে দুখানি তাঁতের শাড়ি তাদের বাড়িতে দিয়ে যেতে বলে। পরে ঘরের মধ্যে রাধারাণী তার নাম লেখা একটি নোট খুঁজে পায়। সেই নোটে ওই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির নামও লেখা ছিল। সেখান থেকেই সে, ওই সহৃদয় ব্যক্তির নাম জানতে পারে। পরে তারা মা ও মেয়ে মিলে রুক্মিণীকুমারের অনেক অনুসন্ধান করল। কিন্তু শ্রীরামপুর বা তার নিকটবর্তী কোথাও তার সন্ধান পেল না। নোটটি তারা ভাঙাল না। তুলে রাখল, ফিরিয়ে দেবে বলে।
৩.৩ ভারতবর্ষে কাজ করতে গেলে কেমন বাধার সম্মুখীন হতে হবে বলে বিবেকানন্দ মিস্ নোবলকে জানিয়েছেন ?
3. যে কোন একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : (১৫০ শব্দ) ৫×১=৫
৪.১ “এরই মাঝে বাংলার প্রাণ” – কার মাঝে কীভাবে বাংলার প্রাণের অস্তিত্ব কবি লক্ষ্য করেছেন ?
উত্তরঃ কবি “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় বাংলার প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের মাঝে বাংলার প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন। হিজল, কাঁঠাল, বট ইত্যাদি গাছ, ধান গাছ, কলমি শাক, মুথা ঘাস, পুকুর, মাছ, এমনকি কিশোর-কিশোরী-সহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও তিনি বাংলার প্রাণ স্পন্দন অনুভব করেছেন। এছাড়াও, সান্ধ্যকালীন প্রকৃতির রূপে, ঘনায়মান অন্ধকারের গন্ধ ও স্পর্শে তিনি বাংলার প্রাণের অস্তিত্ব উপলব্ধি করেছেন।
কবি জীবনানন্দ দাশ, “আকাশে সাতটি তারা” কবিতায় বাংলার প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানকে বাংলার প্রাণের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করেছেন। তিনি গ্রাম বাংলার পরিচিত দৃশ্য, যেমন— ধান গাছ, পুকুর, হিজল, কাঁঠাল, বট গাছের মতো বৃক্ষরাজি, এবং কলমি শাক, মুথা ঘাস, মাছ ইত্যাদির মধ্যে বাংলার প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পান। এছাড়াও, গ্রাম বাংলার সন্ধ্যা বেলার দৃশ্য, যেখানে প্রকৃতির বুকে অন্ধকার নেমে আসে, সেই সময়ের নীরবতা, এবং বাতাসের মধ্যে এক ধরণের গন্ধের মধ্যে তিনি বাংলার প্রাণের স্পন্দন অনুভব করেন। তিনি মৃত মুনিয়ার মতো রাঙা মেঘের মধ্যেও বাংলার প্রাণের একটি ভিন্ন রূপ দেখতে পান।
এইভাবে, কবি বাংলার প্রকৃতির উপাদান এবং সন্ধ্যার প্রকৃতির মাঝে বাংলার প্রাণের অস্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলেছেন।
৪.২ ‘আবহমান’ কবিতার মূল বক্তব্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ ‘আবহমান’ কবিতার মূল বক্তব্য হলো জন্মভূমি এবং শেকড়ের প্রতি মানুষের গভীর টান, যা কালের স্রোতে বয়ে চললেও, কখনো শেষ হয় না। কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এই কবিতায় গ্রামবাংলার প্রকৃতির পটভূমিতে মানুষের চিরন্তন এই অনুভূতিকেই ফুটিয়ে তুলেছেন।
এই কবিতার মূল বিষয়গুলো হলো—
(i) জন্মভূমির প্রতি আকর্ষণঃ কবিতাটিতে শহরের কর্মব্যস্ত জীবনের মধ্যেও গ্রামবাংলার প্রকৃতির স্মৃতি ও ফেলে আসা বাড়ির কথা মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষ যেখানেই থাকুক না কেন, তার শিকড়ের প্রতি আকর্ষণ সবসময় বিদ্যমান থাকে।
(ii) প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কঃ গ্রামবাংলার প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদান, যেমন – উঠোন, লাউমাচা, পুকুর ইত্যাদি মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলো মানুষের মনে এক ধরনের শান্তি ও স্বস্তি এনে দেয়, যা শহরের যান্ত্রিক জীবনে অনুপস্থিত।
(iii) অবিচ্ছেদ্য বন্ধনঃ কবিতাটিতে বোঝানো হয়েছে যে, প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যে একটি গভীর ও অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে, যা সময়ের সাথে সাথে ম্লান হয় না, বরং আরও দৃঢ় হয়।
(iv) আবেগময় স্মৃতিচারণঃ শহর এবং গ্রামের মধ্যেকার জীবনযাত্রার বৈপরীত্য তুলে ধরে, কবি স্মৃতিরোমন্থনে অতীতের দিনগুলির কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন, যা পাঠককে আবেগাপ্লুত করে।
(v) অবিরাম যাত্রাঃ ‘আবহমান’ শব্দের অর্থ হলো যা চলে অবিরাম। এই কবিতাটি জীবনের অবিরাম যাত্রাপথের প্রতীক, যেখানে মানুষ তার শিকড়ের সন্ধানে ফেরে, প্রকৃতির সান্নিধ্যে শান্তি খোঁজে।
এইভাবে, কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী “আবহমান” কবিতার মাধ্যমে জন্মভূমি ও প্রকৃতির প্রতি মানুষের গভীর ভালোবাসাকে তুলে ধরেছেন, যা কালের যাত্রায় শাশ্বত ও অক্ষয়।
৫. যে কোন একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : (১৫০ শব্দ) ৫×১=৫
৫.১ ‘কর্ভাস গল্পে কর্ভাসের আশ্চর্য প্রতিভা ও বুদ্ধিমত্তার যে পরিচয় পাও তা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তরঃ কর্ভাস গল্পে, কর্ভাস নামক কাকটির অসাধারণ মেধা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। প্রফেসর শঙ্কুর “অরনিথন” যন্ত্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে কর্ভাস মানুষের মতো বুদ্ধি ও ভাষা বুঝতে শেখে। গল্পের এক পর্যায়ে, জাদুগর আর্গাস যখন কর্ভাসকে চুরি করার চেষ্টা করে, তখন কর্ভাস তার বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে আর্গাসের চশমা নিয়ে পালিয়ে যায় এবং প্রফেসর শঙ্কুর প্রতি তার আনুগত্য প্রমাণ করে।
কর্ভাসের এই আচরণ থেকেই তার কয়েকটি বিশেষ প্রতিভা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়—
(i) দ্রুত শেখার ক্ষমতাঃ কর্ভাস “অরনিথন” যন্ত্রের মাধ্যমে খুব দ্রুত ভাষা ও বিভিন্ন বিষয় শিখে নেয়, যা তার অসাধারণ শেখার ক্ষমতা প্রমাণ করে।
(ii) সমস্যা সমাধান করার ক্ষমতাঃ আর্গাস যখন কর্ভাসকে চুরি করার চেষ্টা করে, তখন কর্ভাস পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে এবং নিজের বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে আর্গাসকে পরাস্ত করে।
(iii) আনুগত্যঃ কর্ভাস প্রফেসর শঙ্কুর প্রতি অনুগত থাকে এবং তার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে।
(iv) ধোঁকা দেওয়ার ক্ষমতাঃ কর্ভাস আর্গাসের চশমা নিয়ে পালিয়ে গিয়ে তাকে বিভ্রান্ত করে, যা তার ধূর্ততা ও কৌশল প্রয়োগের ক্ষমতা প্রমাণ করে।
এই সমস্ত ঘটনার মাধ্যমে কর্ভাসের অসাধারণ মেধা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়, যা তাকে অন্যান্য সাধারণ পাখির থেকে আলাদা করে।
৫.২ ম্যালি ফাউল ও গ্রিব পাখীর বিশেষত্ব ‘কর্ভাস’ গল্প অবলম্বনে লেখো।
উত্তরঃ সত্যজিৎ রায় রচিত কর্ভাস গল্পে আমরা ম্যালি ফাউল এবং গ্রিব নামক পাখির বৈশিষ্ট্যের কথা জানতে পারি।
ম্যালি ফাউলঃ অস্ট্রেলিয়াতে বসবাসকারী ম্যালি-ফাউল বলে এক বিশেষ প্রজাতির পাখির উল্লেখ আছে, যারা মাটিতে বাসা তৈরি করে। বালি, মাটি আর নানারকম উদ্ভিজ্জ দিয়ে তারা একটি ঢিপি তৈরি করে, আর তার ভিতরে ঢোকার জন্য একটি গর্ত থাকে। তারা বাসার ভিতরে ডিম পাড়ে, কিন্তু ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার জন্য ডিমে তা দেয় না। ম্যালি-ফাউলরা কোনো-এক আশ্চর্য ও অজ্ঞাত কৌশলে বাসার ভিতরের তাপমাত্রা ঠিক আটাত্তর ডিগ্রি ফারেনহাইট রাখে, এক ডিগ্রিও এদিক-ওদিক হতে দেয় না। বাইরের আবহাওয়া ঠান্ডা বা গরম যাই থাকুক না কেন, তাদের বাসার ভিতরের তাপমাত্রা আটাত্তর ডিগ্রি ফারেনহাইটেই স্থির থাকে। এই উষ্ণতাই ডিম ফুটে শাবক বেরোনোর জন্য আদর্শ।
গ্রিব পাখিঃ গ্রিব নামক একধরনের পাখি আছে যারা নিজেরাই নিজেদের পালক ছিঁড়ে খায় আর শাবকদেরও খাওয়ায়। তাদের এই আচরণের কারণ কেউ জানে না। এরা আবার জলে ভাসমান অবস্থায় কোনো শত্রুর আগমনের ইঙ্গিত পেলে, নিজের দেহ ও পালক থেকে কোনো-এক অজ্ঞাত উপায়ে বায়ু বার করে দিয়ে শরীরের স্পেসিফিক গ্র্যাভিটি বা আপেক্ষিক গুরুত্ব বাড়িয়ে গলা অবধি জলে ডুবে থাকতে পারে।
৬. প্রদত্ত সূত্র সহযোগে উপযুক্ত শিরোনাম সহ একটি গল্প রচনা করো : ৫×১=৫
সংকেতঃ এক শিশু – দাবীদার হয়ে এল দুই মহিলা। বিচারক শিশুটিকে দ্বিখণ্ডিত করে ভাগ করার বিধান দিতেই প্রকৃত মায়ের কান্না, বিচারকের সত্য উপলব্ধি।
প্রকৃত মা
বহু দিন আগের কথা। এক শহরের একটি শিশু আর পাঁচটা সাধারণ শিশুর মতই বড় হয়ে উঠছিল। একদিন এক ভিনদেশী মহিলা এসে জানায় সেই-ই শিশুটির প্রকৃত মা। সে তার সন্তানকে না নিয়ে বাড়ি ফিরবে না। এদিকে শিশুটির পিতাও সেখানে নেই। ফলে দুই মহিলার মধ্যে বিতর্ক ক্রমশ বাড়তে থাকে। দেশের পন্ডিত থেকে মন্ত্রী কেউ এই সমস্যার সমাধান করতে পারল না। এদিকে দুই মহিলার টানাটানিতে শিশুটির প্রাণও ওষ্ঠাগত। অবশেষে দুই মহিলা শিশুটিকে নিয়ে গেলেন বিচারকের কাছে। বিচারক সব শুনলেন। শিশুটিকেও তার প্রকৃত মা কে তা জানতে চাইলেন। সবকিছু শুনে বিচারক অবশেষে শিশুটিকে সমান দু-টুকরো করে কেটে ফেলে দুজনকে দিয়ে দেবার আদেশ করলেন। এ কথা শুনে দ্বিতীয় মহিলাটি খুশি হলেও প্রথম মহিলাটি আঁৎকে ওঠেন। সে কাঁদতে কাঁদতে বিচারকের পায়ের কাছে লুটিয়ে পড়ে দ্বিতীয় মহিলাটিকেই তার সন্তানকে দিতে বলে। তখন বিচারক বুঝলেন এই প্রথম মিহিলাটিই শিশুটির প্রকৃত মা, বিচারক তার হাতেই শিশুটিকে তুলে দিলেন।
নীতিঃ ভালোবাসা যথার্থ হলে সমস্ত অধিকার ত্যাগ করা যায়।