সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী (SAE) প্রশ্নোত্তর সিন্ধুতীরে কবিতা দশম শ্রেণি বাংলা | Sindhutire Kobitar Question Answer Class 10 Bengali wbbse
সাহিত্য সঞ্চয়ন
দশম শ্রেণি বাংলা (প্রথম ভাষা)
সিন্ধুতীরে কবিতার সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | Sindhutire Kobitar SAE Question Answer Class 10 Bengali wbbse
📌দশম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
📌দশম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here
ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর সিন্ধুতীরে কবিতা দশম শ্রেণি বাংলা | Class 10 Bengali Sindhutire Kobitar Question Answer wbbse
∆ কমবেশি ৬০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
১. সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি কার লেখা কোন্ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ? সিন্ধুতীরে কী ঘটনা ঘটেছিল ? ১+২
উত্তরঃ ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাটি আরাকান রাজসভার প্রধান কবি সৈয়দ আলাওলের অনুবাদধর্মী কাব্যগ্রন্থ ‘পদ্মাবতী’-র ‘পদ্মাসমুদ্র খণ্ড’ অংশের অন্তর্গত।
চিতোরের রাজা রত্নসেন সিংহলরাজকন্যা পদ্মাবতীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর তাঁরা সিংহল থেকে চিতোরগামী পথে যাত্রা করেন। সেই যাত্রাপথে প্রবল ঝড়-ঝঞ্ঝার কবলে তাঁদের জাহাজ ভেঙে যায়। ভয়ংকর সেই সামুদ্রিক দুর্যোগে পদ্মাবতী অচৈতন্য অবস্থায় সিন্ধুতীরে ভেসে ওঠেন। সেখানে সমুদ্রকন্যা পদ্মা তাঁকে মাতৃস্নেহসম পরম মমতায় সেবা-শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তোলেন।
তাই ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতায় দৈবদুর্বিপাক ও সমুদ্রকন্যা পদ্মার মানবিক সেবাপরায়ণতার কাহিনি চিত্রিত হয়েছে।
২. ‘কন্যারে ফেলিল যথা’- কন্যাটি কে ? তাকে কোথায় ফেলা হয়েছিল ? ১+২
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওল রচিত ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের অংশ-বিশেষ ‘সিন্ধুতীরে’ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটিতে, ‘কন্যা’ বলতে সমুদ্রনৃপতির কন্যা পদ্মার কথা বলা হয়েছে।
সমুদ্রঘেরা এক সুন্দর দ্বীপে, যা ছিল সমুদ্র কন্যা পদ্মার বিনোদনের জায়গা, সমুদ্রঝড়ে সেখানে অচেতন পদ্মাবতী এসে পড়েন। আসলে ফেলা হয়েছিল বলতে পদ্মাবতী ও তার প্রধান চার সখীর ভাঙা নৌকায় এই দ্বীপের তীরে পৌঁছোনোকেই বোঝানো হয়েছে।
৩. “দিব্য পুরী সমুদ্র মাঝার।”- ‘দিব্য পুরী’ বলতে কোন্ পুরীর কথা বলা হয়েছে ? তাকে ‘দিব্য’ বলার কারণ কী ?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাংশের সূচনায় যে ‘দিব্য পুরী’র বর্ণনা এসেছে, তা হলো সমুদ্রকন্যা পদ্মার রাজপুরী। এই রাজপুরী সিন্ধুর জলের মাঝে অবস্থিত এক অলৌকিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান।
এ পুরীকে ‘দিব্য’ বলা হয়েছে কারণ এর বর্ণনায় দেবলোকের প্রাসাদসম ঐশ্বর্য ও জাঁকজমক ফুটে উঠেছে। সেখানকার ফল-ফুল, লতা-পাতা, শোভামণ্ডিত প্রাসাদ ও বিলাসবহুল রাজমজলিসে এক স্বর্গীয় মহিমার রূপায়ণ ঘটেছে। তাই পদ্মার সেই সমুদ্রপুরীকে কবি ‘দিব্য পুরী’ নামে অভিহিত করেছেন।
৪. ‘অতি মনোহর দেশ…’- কাকে, কেন ‘মনোহর দেশ’ বলা হয়েছে ? ৩
অথবা, ‘অতি মনোহর দেশ…’- ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতাংশ অনুসরণে মনোহর দেশটির বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ কবি সৈয়দ আলাওলের ‘সিন্ধুতীরে’ রচনায় সমুদ্রসুতা পদ্মার প্রাসাদ ও আনন্দ উদ্যানকে ‘মনোহর দেশ’ বলা হয়েছে।
‘মনোহর’ মানে মন কেড়ে নেওয়া। সাগরঘেরা দ্বীপটির প্রাকৃতিক রূপ ছিল খুব সুন্দর। নীল সমুদ্রের মাঝে ছিল ফল-ফুলে ভরা একটি পাহাড়। তার পাশে ছিল ফুলে সাজানো আর ফলগাছে ভরা এক চমৎকার উদ্যান। শুধু রূপ নয়, এ দ্বীপে দুঃখকষ্টও ছিল না, মানুষ সত্য ও ভাল কাজকে জীবনের নিয়ম মানত। তাই এই দেশকে মনোহর বলা হয়েছে।
৫. নাহি তথা দুঃখ ক্লেশ’- কোথায়, কেন দুঃখক্লেশ নেই ? ৩
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের ‘সিন্ধুতীরে’ অংশে সমুদ্র কন্যা পদ্মা রচিত উদ্যানে কোন দুঃখ যন্ত্রণা নেই।
সমুদ্র তীরের এই দ্বীপ বা উদ্যান ছিল অপরূপ সুন্দর। এখানে মানুষ সত্য, ধর্ম আর ভাল কাজকে জীবনের নিয়ম মানত। সত্য মানুষকে ঠকায় না, আর সৎ মানুষ ধর্মপথ থেকে সরে যায় না। তাই এ দ্বীপ দেবভূমির মতো হয়ে উঠেছিল। সেই কারণেই সেখানে মানুষের দুঃখক্লেশ ছিল না।
৬. ‘পদ্মা নামে গুণযুতা’- পদ্মা কে ? তাকে ‘গুণবতী’ বলা হয়েছে কেন ? ১+২
উত্তরঃ এখানে ‘পদ্মা’ বলতে বোঝানো হয়েছে সমুদ্রকন্যা পদ্মাকে। মালিক মুহম্মদ জায়সীর ‘পদুমাবৎ’ কাব্যে তাঁর নাম ছিল ‘লক্ষ্মী’, কিন্তু অনুবাদক কবি সৈয়দ আলাওল সেই নাম পরিবর্তন করে ‘পদ্মা’ করেছেন।
তাঁকে ‘গুণযুতা’ বা গুণবতী বলা হয়েছে কারণ তাঁর চরিত্রে দয়া, সহানুভূতি, পরোপকারিতা ও পরদুঃখকাতরতা ফুটে উঠেছে। এই মানবিক গুণাবলির প্রকাশে তিনি অচৈতন্য পদ্মাবতী ও তাঁর সখীদের জীবনরক্ষা করেন। পরবর্তীকালে সমুদ্ররাজার আশীর্বাদ লাভ করে পদ্মাবতী ও রত্নসেনের পুনর্মিলন ঘটাতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তাই তাঁর অসাধারণ মানবিকতা ও কল্যাণবোধের জন্যই কবি তাঁকে ‘গুণযুতা’ নামে অভিহিত করেছেন।
৭. সিন্ধুতীরে দেখি দিব্যস্থান।’- সিন্ধুতীরকে ‘দিব্যস্থান’ বলা হয়েছে কেন ?
উত্তরঃ কবি সৈয়দ আলাওলের ‘পদ্মাবতী’ কাব্য থেকে গৃহীত পাঠ্য ‘সিন্ধুতীরে’ অংশে সমুদ্ররাজার কন্যা পদ্মার প্রমোদকানন ও প্রাসাদময় দ্বীপভূমিকে ‘সিন্ধুতীর’ বলা হয়েছে। ‘পুরী’ শব্দের অপর একটি অর্থ নগর। তাই একে দিব্যনগরীও বলা যায়। ‘দিব্য’ মানে উৎকৃষ্ট, মনোহর। সমুদ্রবেষ্টিত এ দ্বীপভূমি স্বর্গের মতো সুন্দর, মনমুগ্ধকর, সত্যধর্ম ও সদাচারে পবিত্র হওয়ার কারণেই একে ‘দিব্য’ বলা হয়েছে। রূপ ও গুণে অতুলনীয় বোঝাতেই কবি এমন বিশেষণের প্রয়োগ করেছেন।
৮. ‘তাহার পাশে এরও ছিল উদ্যান’- কে, কীরূপ উদ্যান রচনা করেছিল ?
উত্তরঃ আরাকান রাজসভার শ্রেষ্ঠ কবি সৈয়দ আলাওল রচিত ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের অংশবিশেষ ‘সিন্ধুতীরে’ কবিতা অনুসারে, পদ্মা হলেন সমুদ্রের রাজার গুণবতী কন্যা।
সমুদ্রের তীরে এক সুন্দর স্থানে, যেখানে ফল ও ফুলে ভরা এক পর্বত রয়েছে, তার পাশে পদ্মা একটি মনোরম উদ্যান রচনা করেছিলেন। নানারকম সুগন্ধী ফুল ও ফল এবং সুলক্ষণযুক্ত বৃক্ষ তার শোভা বৃদ্ধি করত, আর তারই মধ্যে স্বর্ণ ও রত্নখচিত প্রাসাদে পদ্মা বাস করতেন।
৯. ‘তাহাতে বিচিত্র টঙ্গি’- ‘বিচিত্র টঙ্গি’ কী ? কোথায় ‘বিচিত্র টঙ্গি’ দেখা যায় ? ২+১
উত্তরঃ ‘টঙ্গি’ শব্দের অর্থ প্রাসাদ। ‘বিচিত্র’ শব্দের অর্থ নানা রঙে রঞ্জিত বা মনোহর। তাই ‘বিচিত্র টঙ্গি’ বলতে বোঝানো হয়েছে নানারঙে রঞ্জিত, সুন্দর ও বিস্ময়কর প্রাসাদ। প্রাসাদটির সৌন্দর্য ও অভিনবত্ব বোঝাতেই কবি সৈয়দ আলাওল তাঁর ‘সিন্ধুতীরে’ পাঠ্যে ‘বিচিত্র টঙ্গি’র কথা বলেছেন।
সিন্ধুতীরের দিব্য দ্বীপভূমির বর্ণনায় দেখা যায়, পর্বতের পাশে সুলক্ষণ ও সুগন্ধি ফল-ফুলে ভরা উদ্যান। সেই উদ্যানেই হেমরত্নখচিত ‘বিচিত্র টঙ্গি’ অবস্থিত।
১০. ‘তথা কন্যা থাকে সর্বক্ষণ’- কন্যা কে? সে সর্বক্ষণ কোথায় থাকে ? ১+২=৩
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওল রচিত ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের অংশ-বিশেষ ‘সিন্ধুতীরে’ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটিতে, ‘কন্যা’ বলতে সমুদ্রনৃপতির কন্যা পদ্মার কথা বলা হয়েছে।
সমুদ্র-অধিপতির কন্যা পদ্মা, সমুদ্রের ধারে অবস্থিত এক মনোরম স্থানে, পর্বতের কাছে একটি উদ্যান রচনা করেছিলেন। সেই উদ্যানে নানারকম সুগন্ধি ফুল এবং সুলক্ষণযুক্ত বৃক্ষ তার শোভা বৃদ্ধি করেছিল। এই উদ্যানে মণি-মানিক্যখচিত প্রাসাদেই রাজকন্যা পদ্মা সর্বক্ষণ অবস্থান করতেন।
১১. ‘যদি হৈল সময় প্রত্যুষ।’— প্রত্যুষ হলে কী হত ?
উত্তরঃ সপ্তদশ শতকের শ্রেষ্ঠ কবি সৈয়দ আলাওলের চিরন্তন রচনা পদ্মাবতী কাব্যের ‘সিন্ধুতীরে’ অংশে সমুদ্ররাজকন্যা পদ্মার চরিত্র ফুটে উঠেছে। রাজকন্যা পদ্মা রূপকথার সমুদ্রপুরীতে পিতার রাজপ্রাসাদে রাত কাটান নানা সুখে, হাসি-খেলায়। সিন্ধুতীরে এই দিব্যস্থান তাঁর প্রিয় বলে এখানেই তিনি প্রাসাদ ও প্রমোদ উদ্যান নির্মাণ করেছিলেন। প্রত্যুষ হলে সমুদ্রতীরের বালুকাবেলায় ও উদ্যানে তিনি সখীদের সঙ্গে আনন্দে সময় কাটাতেন।
১২. ‘নিপতিতা চেতন রহিত।।’- উদ্দিষ্ট ব্যক্তির চেতনাহীন হওয়ার কারণ কী ?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের ‘সিন্ধুতীরে’ অংশে চিতোররাজা রত্নসেনের স্ত্রী পদ্মাবতীর প্রসঙ্গ এসেছে। সমুদ্রপথে চিতোর প্রত্যাবর্তনের সময় ঝড়ে জাহাজ ভেঙে যায়, সঙ্গীসাথি, সম্পদ ও জলযান ধ্বংস হয়। এক ভেলায় রত্নসেন পদ্মাবতী ও চার সখীকে নিয়ে উঠলেও ভেলাটি দ্বিখণ্ডিত হয়ে রত্নসেন আলাদা হয়ে পড়েন। পদ্মাবতীদের ভেলা ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্যে একটি দ্বীপে এসে ঠেকে। সমুদ্রবিপর্যয়, প্রাণহানির ভয় ও আতঙ্কে পদ্মাবতী চেতনা হারান।
১৩. ‘বিস্মিত হইল বালা’— ‘বালা’ কে ? তার বিস্ময়ের কারণ কী ছিল ?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের সিন্ধুতীরে কবিতায় ‘বালা’ বলতে সমুদ্রনৃপতির কন্যা পদ্মাকে বোঝানো হয়েছে। এক সকালে পদ্মা তাঁর সখীদের নিয়ে উদ্যানে ভ্রমণ করতে গিয়ে সমুদ্রতীরে একটি ভেলা দেখেন। কৌতূহলী হয়ে কাছে গেলে বিস্ময়ে তিনি দেখেন, চার সখীর মাঝখানে এক অপরূপা কন্যা মাটিতে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। তাঁরা সকলেই সংজ্ঞাহীন, কন্যাটি অসামান্য রূপবতী এবং এদের কেশ ও বেশবাস ছিল অবিন্যস্ত।
১৪. ‘অনুমান করে নিজ চিতে।’— কে, কী অনুমান করেন ?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের সিন্ধুতীরে কবিতায় সমুদ্ররাজকন্যা পদ্মার অনুমানের কথা বলা হয়েছে। সারারাত প্রাসাদে আনন্দে কাটিয়ে প্রত্যুষে সখীদের নিয়ে উদ্যানে ভ্রমণে এসেছিলেন পদ্মা। হঠাৎ সমুদ্রতীরে এক ভেলায় তিনি পাঁচ অচেতন কন্যাকে দেখেন। তাঁদের মধ্যের কন্যাটি অসাধারণ রূপসৌন্দর্যের অধিকারিণী, যার রূপে অপ্সরা রম্ভার রূপও যেন ম্লান। বিস্মিত পদ্মা মনে করেন, হয়তো তিনি কোনো বিদ্যাধরি, যিনি দেবরাজ ইন্দ্রের বিরাগভাজন হয়ে শাপভ্রষ্ট হয়েছেন। তাই স্বর্গচ্যুত হয়ে এই দ্বীপভূমিতে অচেতন হয়ে পতিত হয়েছেন।
১৫. ‘বেথানিত হৈছে কেশ বেশ।’— কার কেন এমন অবস্থা হয়েছিল ?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের সিন্ধুতীরে কবিতায় সমুদ্ররাজকন্যা পদ্মা ভেলায় অচেতন অবস্থায় পঞ্চকন্যাকে দেখেন। তাঁদের চোখের পাতা পড়ছিল না, বেশ ছিল আলুথালু ও কেশ অবিন্যস্ত। পটে আঁকা পুতুলের মতো তাঁদের ভূপতিত দেহ থেকে সামান্য শ্বাসপ্রশ্বাস জীবিত থাকার প্রমাণ দিচ্ছিল। পদ্মার আদেশে তাঁর সখীরা তাঁদের বসনে ঢেকে উদ্যানে নিয়ে আসে। সেখানে তাঁদের হাত-পায়ে আগুনের সেঁক দেওয়া হয় এবং পদ্মার তন্ত্র-মন্ত্র ও মহৌষধ প্রয়োগে চারদণ্ডের মধ্যে তাঁদের চেতনা ফিরে আসে।
১৬. ‘বিধি মোরে না কর নৈরাশ’– কে কাকে নিরাশ না করার জন্য অনুরোধ করেছে ?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের সিন্ধুতীরে কবিতায় সমুদ্রকন্যা পদ্মা ভগবানের কাছে এই আবেদন করেছেন। সমুদ্রতীরে ভেলায় অচেতন পঞ্চকন্যাকে দেখে তিনি মর্মাহত হন। বিশেষত চার সখীর মাঝখানে অসামান্য রূপবতী কন্যার বিপর্যস্ত অবস্থা দেখে তাঁর মনে করুণা জাগে। তখন তিনি তাঁদের প্রাণরক্ষার জন্য ব্যাকুল হয়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন, যেন পঞ্চকন্যার প্রাণরক্ষায় তাঁকে নিরাশ না করেন।
১৭. ‘চিকিৎসিমু প্রাণপণ’– কার চিকিৎসা করা হবে ? চিকিৎসার বিবরণ দাও।
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের সিন্ধুতীরে কবিতায় ভেলায় অচেতন অবস্থায় পাওয়া পদ্মাবতীসহ পঞ্চকন্যার চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে। পঞ্চকন্যাকে পটে আঁকা পুতুলের মতো মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে পদ্মা ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। সামান্য শ্বাসবায়ু তাঁদের জীবিত থাকার প্রমাণ দিচ্ছিল। তিনি প্রথমে বিধাতার আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন। তারপর তাঁর নির্দেশে সখীরা তাঁদের বসনে ঢেকে উদ্যানে আনে এবং হাত-পা সেঁক দেয়। পদ্মা নিজে তন্ত্র-মন্ত্র ও মহৌষধ প্রয়োগ করে সেবাযত্ন করেন। ফলে চারদণ্ডের মধ্যে পঞ্চকন্যা চেতনা ফিরে পায়।
১৮. ‘সখী সবে আজ্ঞা দিল’– কী আজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল ?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের সিন্ধুতীরে কবিতায় সমুদ্রকন্যা পদ্মা তাঁর সখীদের আজ্ঞা দিয়েছিলেন। প্রত্যুষে প্রমোদ উদ্যানে যাওয়ার পথে সমুদ্রতীরে তিনি পঞ্চ অচেতন কন্যাকে দেখতে পান। পদ্মা উপলব্ধি করেন, তাঁদের প্রাণশক্তি ক্ষীণ হলেও তাঁরা জীবিত। তাই তিনি সখীদের নির্দেশ দেন তাঁদের ধরে উদ্যানে আনতে এবং বসনে ঢেকে দিতে। এরপর সখীরা তাঁদের দেহে আগুনের সেঁক দেয়। পদ্মার তন্ত্র-মন্ত্র ও মহৌষধ প্রয়োগে পঞ্চকন্যা জ্ঞান ফিরে পায়।
১৯. ‘পঞ্চকন্যা পাইলা চেতন।’— পঞ্চকন্যা কারা ? কিভাবে তারা চেতন পেল ?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যের ‘সিন্ধুতীরে’ অংশে চারজন সখীসহ সিংহলরাজকন্যা পদ্মাবতী— এরাই পঞ্চকন্যা। সমুদ্রকন্যা পদ্মা তাঁদের ভেলায় অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন। তারপর তিনি সখীদের সাহায্যে তাঁদের বসনে ঢেকে উদ্যানে আনেন। তাঁদের শরীরে আগুনের সেঁক দেওয়া হয়। তন্ত্র-মন্ত্র ও মহৌষধ প্রয়োগে এবং সেবা-যত্নে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা চেতনা ফিরে পান।
২০. ‘শ্রীযুত মাগন গুণী’— ‘মাগন গুণী’ কে ? তাঁর প্রসঙ্গ কেন এখানে এসেছে ?
উত্তরঃ সৈয়দ আলাওলের পদ্মাবতী কাব্যে মাগন গুণীর প্রসঙ্গ এসেছে। মাগন ঠাকুর ছিলেন রোসাঙ রাজসভার রাজা নরপদিগ্যির এক বিশ্বস্ত মন্ত্রী। বৃদ্ধ রাজা তাঁকে কন্যার অভিভাবকত্বে নিযুক্ত করেছিলেন। তিনি ছিলেন বহু ভাষাবিদ, বিদ্যোৎসাহী, কাব্যরসিক ও সাহিত্যসংস্কৃতির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। তাঁরই পৃষ্ঠপোষণায় আলাওল পদ্মাবতী রচনা করেছিলেন। তাই কবি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ভণিতায় মাগন গুণীর স্তুতি করেছেন।
📌 আরো দেখুনঃ
📌দশম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
📌 দশম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here
📌 মাধ্যমিক সমস্ত বিষয় প্রশ্নপত্র Click Here
📌 মাধ্যমিক সমস্ত বিষয় মক্ টেস্ট Click Here