নদীর বিদ্রোহ
—মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
নদীর বিদ্রোহ গল্পের SAQ প্রশ্নোত্তর দশম শ্রেণি বাংলা | Nodir Bidroho Golper VSAQ Question Answer Class 10 Bengali wbbse
সাহিত্য সঞ্চয়ন
দশম শ্রেণি বাংলা (প্রথম ভাষা)
নদীর বিদ্রোহ গল্পের SAQ প্রশ্নোত্তর দশম শ্রেণি বাংলা | Nodir Bidroho Golper VSAQ Question Answer Class 10 Bengali wbbse
📌দশম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
📌 দশম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here
নদীর বিদ্রোহ গল্পের SAQ প্রশ্নোত্তর দশম শ্রেণি বাংলা | Nodir Bidroho Golper VSAQ Question Answer Class 10 Bengali wbbse
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর : নদীর বিদ্রোহ গল্প দশম শ্রেণির বাংলা | Nodir Bidroho Golper VSAQ Question Answer Class 10 Bengali wbbse
∆ কমবেশি ১৫টি শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-১
১. ‘নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হইয়া গেল।’- নদেরচাঁদ কেন স্তম্ভিত হয়ে গেল ?
উত্তরঃ পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পরে নদীর ধারে গিয়ে আপাতশান্ত নদীর উন্মত্ত রূপ দেখে নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল।
২. ‘কিন্তু সে চাঞ্চল্য যেন ছিল পরিপূর্ণতার আনন্দের প্রকাশ।’- কোন পরিপূর্ণতার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ পাঁচদিন আগে বর্ষার জলে পরিপুষ্ট নদী পঙ্কিল জলস্রোতে চাঞ্চল্য সৃষ্ট করে যেভাবে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল এখানে সেই পরিপূর্ণতার কথাই বলা হয়েছে।
৩. ‘আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল।’ – কে, কোথায় গিয়ে বসল ?
উত্তরঃ স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার কাজের অবসরে কর্মক্ষেত্র থেকে মাইলখানেক দূরে নদীর উপরকার ব্রিজের মাঝামাঝি ধারকস্তম্ভের শেষ প্রান্তে এসে বসল।
৪. ‘আজও সে সেইখানে গিয়া বসিল’- আজও বলার কারণ কী ?
উত্তরঃ নদীর প্রতি অমোঘ আকর্ষণে নদেরচাঁদ প্রতিদিন নদীকে দেখতে যেত। পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে তাতে ছেদ পড়ে। ষষ্ঠ দিনে বৃষ্টি কমলে সে আবার সেই একই জায়গায় গিয়ে বসে। ‘আজ’ বলতে উক্ত দিনটিকে বোঝানো হয়েছে।
৫. “এক একখানি পাতা ছিঁড়িয়া দুমড়াইয়া মোচড়াইয়া জলে ফেলিয়া দিতে লাগিল।”– উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীসের পাতা জলে ফেলতে লাগল ? [মাধ্যমিক ১৭]
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ স্ত্রীকে বিরহবেদনাপূর্ণ যে পাঁচ পৃষ্ঠাব্যাপী চিঠি লিখেছিল তা তার পকেটে ছিল। যে সেটারই এক-একটি পৃষ্ঠা জলে ফেলছিল।
৬. ‘সেই ক্ষীণস্রোতা নির্জীব নদীটি’- কোন নদীর কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ আলোচা উদ্ধৃতিটিতে নদেরচাঁদের দেশের সরু, ক্ষীণস্রোতা নদীটির সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে। আবাল্যের সঙ্গী এই নদীটিকে সে নিজের অসুস্থ ও দুর্বল আত্মীয়ার মতো গণ্য করত।
৭. ‘তারপর সে অতিকষ্টে উঠিয়া দাঁড়াইল।’- ‘তারপর’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তরঃ নদী আর বৃষ্টির শব্দ মিলেমিশে নদেরচাঁদকে আচ্ছন্ন করে দিয়েছিল। এমন সময় ব্রিজের ওপর দিয়ে সশব্দে একটা ট্রেন চলে যায়। উদ্ধৃতাংশে ‘তারপর’ বলতে এর পরকেই বুঝিয়েছে।
৮. ‘বড়ো ভয় করিতে লাগিল নদের চাঁদের।’- নদের চাঁদ ভয় পেল কেন ?
উত্তরঃ বর্ষার জলে উন্মত্ত নদীর রোষে – ক্ষোভে ফুঁসে ওঠা রূপ দেখে দিশেহারা নদের চাঁদের ভয় হয়েছিল। নদীর আর্তনাদি জলরাশি যেন গোটা ব্রিজটিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।
৯. ‘মানুষ যেমন কাঁদে’- কে, কেন কেঁদেছিল ?
উত্তরঃ পরমাত্মীয়কে দুরারোগ্য রোগে মারা যেতে দেখলে মানুষ যেমন কাঁদে, নদেরচাঁদও অনাবৃষ্টিতে তার গ্রামের ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে শুকিয়ে যেতে দেখে তেমনি কেঁদে ফেলেছিল।
১০. ‘চিরদিন নদীকে সে ভালোবাসিয়াছে।’- নদীকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে নদেরচাঁদের চরিত্রের কোন দিকটি প্রকাশিত ?
উত্তরঃ ত্রিশ বছর বয়সি নদেরচাঁদের নদীর প্রতি তীব্র ভালোবাসা অস্বাভাবিক হলেও নদেরচাঁদ প্রকৃতিপ্রেমী ও আবেগপ্রবণ। তাই সংবেদনশীল শিল্পী চরিত্রদের মতোই সে নদীকে ভালোবেসেছে।
১১. ‘প্রথমবার নদীর দিকে দৃষ্টিপাত করিয়াই। -‘প্রথমবার’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ ‘গল্প অনুসারে, ‘প্রথমবার’ বলতে পাঁচ দিন মুশলধারে বৃষ্টির পর নদেরচাঁদ প্রথম যখন নদীকে দেখে ও তার উন্মত্ততা অনুভব করে। সে কথাই বোঝানো হয়েছে।
১২. ‘নদীর পঙ্কিল জলস্রোতে সে চাঞ্চল্য দেখিয়া গিয়াছে’- এই চাঞ্চল্যের স্বরূপ কী ছিল ?
উত্তরঃ নদেরচাঁদ বর্ষণপুষ্ট নদীর পঙ্কিল জলস্রোতের চাঞ্চল্য দেখেই বুঝেছিল সারাবছরের ক্ষীণস্রোতা নদীটির বর্ষার জলে পরিপূর্ণতার কাহিনি যেন তার চাঞ্চল্যের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হচ্ছিল।
১৩. ‘আমি চললাম হে!’- কে, কাকে এ কথা বলেছে ?
উত্তরঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি রওনা করিয়ে, তার সহকারীকে কর্তব্যভার বোঝানোর সময় তাকে এ কথা বলেছে।
১৪. ‘আকাশের দিকে চাহিয়া বলিল, আজ্ঞে হ্যাঁ।’- কে, কোন্ প্রসঙ্গে এই কথাটি বলেছিল ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে পাস করিয়ে নতুন সহকারীকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে চলে যাবার কথা জানায়। উত্তরে সহকারী সম্মতিসূচক উক্তিটি করে।
১৫. “পৃথিবীর দিকে চাহিয়া বলিল, আজ্ঞে না।”- বক্তার এই কথাটি বলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করো।
উত্তরঃ নদেরচাঁদ বিকেলের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে পাস করিয়ে, দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় সহকারীকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে সহকারী উদ্ধৃত উক্তিটি করেন।
১৬. ‘……তাহার উচিত হয় নাই।’- তার কী করা উচিত হয়নি ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদের চাঁদের, ক্ষোভে উন্মত্ত নদীর আর্তনাদি জলরাশির কয়েক হাত উঁচুতে ধারকস্তম্ভের ওপর এমন নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকা উচিত হয়নি।
১৭. “আজ যেন সেই নদী খেপিয়ে গিয়াছে।’- কোন্ নদীর কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ ‘গল্পের নায়ক নদের চাঁদের কর্মস্থল থেকে মাইলখানেক দুরে তার প্রিয় নদীটি অবস্থিত ছিল। এখানে সেই নদীটির কথা বলা হয়েছে।
১৮. ‘আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে- ‘আজ’ বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে ‘আজ’ বলতে পাঁচদিনের অঝোরধারায় বৃষ্টির পর যেদিন নদেরচাঁদ প্রথম নদীকে দেখতে গিয়েছিল, সেই দিনটির কথা বলা হয়েছে।
১৯. “আজ যেন সেই নদী খেপিয়া গিয়াছে।’- নদীর খেপে যাওয়ার কারণ কী ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে সারাবছর জলাভাবে ভুগতে থাকা ক্ষীণস্রোতা নদীটি একটানা পাঁচদিনের বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছিল যা নদীর ক্ষেপে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়।
২০. ‘সে প্রতিদিন নদীকে দেখে।’- ‘সে’ কে ? সে কোন্ নদীকে কেন দ্যাখে ?
উত্তরঃ ‘সে’ হল মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদ। সে তার কর্মক্ষেত্র থেকে মাইলখানেক দূরের নদীটিকে প্রতিদিন দেখত। কারণ এমনই এক নদীর ধারে তার শৈশব কেটেছিল।
২১. ‘ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে বসিয়া সে প্রতিদিন নদীকে দেখে।’- প্রতিদিন নদীকে দেখার কারণ কী ?
উত্তরঃ নদীর সঙ্গে নদের চাঁদের সখ্য ছোটোবেলার, তার গ্রামে থাকাকালীন। কর্মস্থলে এসেও সে তা ভুলতে পারেনি। তাই নদীকে সে প্রতিদিন না দেখে থাকতে পারত না।
২২. ‘মনে হয় ইচ্ছা করিলে …….।’- কোন ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ বৃষ্টি শেষে নদীর ধারকস্তম্ভে বসে নদেরচাঁদ নদীকে দেখছিল। নদীর জলরাশি মাঝেমধ্যে ফুলেফেঁপে উঠছিল। সেই ফুলেফেঁপে ওঠা জলরাশিকে স্পর্শ করার ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে।
২৩. ‘এত উঁচুতে জল উঠিয়া আসয়িাছে যে…!’– জল উঁচুতে উঠে এসেছে কেন ?
উত্তরঃ ক্ষীণস্রোতা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজের ধারকস্তম্ভগুলিতে বর্ষার সময় নদীর স্রোত বাধা পায় এবং ফেনিল আবর্ত রচনা করে। তাই জল উঁচুতে উঠে আসে।
২৪. ‘নদেরচাঁদের ভারী আমোদ বোধ হইতে লাগিল।’- নদেরচাঁদের আমোদ বোধ হওয়ার কারণ কী ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্প অনুসারে ব্রিজের ধারকস্তম্ভে বসে নদেরচাঁদ বারবার স্তম্ভের গায়ে আঘাত খেয়ে বর্ষণপুষ্ট নদীর ফুলে ওঠা জল ছুঁতে চেষ্টা করছিল। এতেই সে আমোদিত হয়ে উঠেছিল।
২৫. “সে স্রোতের মধ্যে ছুড়িয়া দিল।’- ‘সে’ কে ? সে স্রোতের মধ্যে কী ছুঁড়ে দিল ?
উত্তরঃ ‘সে’ হল ‘নদীর বিদ্রোহ ‘গল্পের স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ। চিরপরিচিত ক্ষীণকায় নদীকে বর্ষার জলে ফুলেফেঁপে উঠতে দেখে উৎফুল্ল নদেরচাঁদ স্ত্রীকে লেখা চিঠি সেই উন্মত্ত স্রোতের মধ্যে ছুঁড়ে দিয়েছিল।
২৬. ‘চিঠি পকেটেই ছিল।’- কোন চিঠির কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ বর্ষার সঙ্গে বিরহের সুর মিলিয়ে বাড়ি থেকে বহুদুরে কর্তব্যরত স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার বউকে পাঁচ পাতার একটি চিঠি লিখেছিল। এখানে সেই চিঠির কথাই বলা হয়েছে।
২৭. ‘নদেরচাঁদ একটি সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবিতেছিল।’- কোন্ নদীর কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ নদেরচাঁদ তার কর্মস্থলের অনতিদূরে চার বছর ধরে একটি ক্ষীণস্রোতা নদীকে দেখে আসছে। টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে সেই নদী ফুলেফেঁপে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। সে সেই ক্ষীণস্রোতা নদীটির কথাই ভাবছিল।
২৮. মানিক বন্দোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম কী? [মাধ্যমিক ১৯]
উত্তরঃ সাহিত্যিক মানিক বন্দোপাধ্যায়ের প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার বন্দোপাধ্যায়।
২৯. বৃষ্টির জন্য নদেরচাঁদ কতদিন নদীকে দেখেনি ?
উত্তরঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে টানা বৃষ্টির জন্য নদেরচাঁদ পাঁচদিন নদীকে দেখেনি।
৩০. ‘রেলের উঁচু বাঁধ ধরিয়া হাঁটিতে হাঁটিতে’– নদেরচাঁদ কী ভেবেছিল ?
উত্তরঃ রেলের উঁচু বাঁধ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নদেরচাঁদ নদীর বর্ষণ-পুষ্ট মূর্তিটি কল্পনা করার চেষ্টা করছিল।
৩১. ‘নিজেকে কেবল বুঝাইতে পারে না।’- নিজেকে কী বোঝাতে পারে না নদেরচাঁদ ?
উত্তরঃ নদেরচাঁদ একজন স্টেশনমাস্টার, দিনরাত্রি মেল ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন আর মাল গাড়িগুলি নিয়ন্ত্রণ করাই তার কাজ। তাই নদীর জন্য এভাবে পাগলের মতো ঔৎসুক্য বোধ করা তার সাজে না।
৩২. ‘নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে”- কার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃত অংশে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদের কথা বলা হয়েছে।
৩৩. ‘নদেরচাঁদ সব বোঝে’- নদেরচাঁদ কী বোঝে ? [মাধ্যমিক ১৮]
উত্তরঃ নদেরচাঁদের মধ্যে নদীর প্রতি এক অস্বাভাবিক ভালোবাসা, এক অদম্য পাগলামি বর্তমান। নদেরচাঁদের মতো স্টেশনমাস্টার, যার তত্ত্বাবধানে একটি রেলস্টেশনে অসংখ্য ট্রেনের গতাগতি নির্ভরশীল তার ক্ষেত্রে এমন পাগলামি সততই বেমানান। এ কথা সেও বোঝে।
৩৪. ‘এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে।’- কে, কীসে আনন্দ উপভোগ করে ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদ নদীর প্রতি তার অন্তরের আকর্ষণ হেতু সৃষ্ট উন্মত্ততায় আনন্দ উপভোগ করে।
৩৫. নদেরচাঁদের দেশের নদীটি কীরূপ ছিল ?
উত্তরঃ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত নদীর বিদ্রোহ গল্পে প্রধান চরিত্র নদেরচাঁদের দেশের নদীটি ছিল ক্ষীণস্রোতা ও নির্জীব।
৩৬. ‘সে প্রায় কাঁদিয়া ফেলিয়াছিল।’- কে এবং কী কারণে কেঁদে ফেলেছিল ?
উত্তরঃ ছোট বেলায় একবার অনাবৃষ্টিতে নদীর জল শুকিয়ে যাওয়ায় নদের চাঁদ প্রায় কেঁদে ফেলেছিল।
৩৭. ‘চোখের পলকে কোথায় যে অদৃশ্য হইয়া গেল চিঠিখানি!’- কোন্ চিঠির কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ বর্ষণপুষ্ট জলে ক্ষীণস্রোতা নদীর উন্মত্ততা লক্ষ করে নদেরচাঁদ তার স্ত্রীকে লেখা চিঠি স্রোতের মধ্যে ফেলে দেয়। এখানে সেই চিঠির কথাই বলা হয়েছে।
৩৮. ‘উন্মত্ততার জন্যই জলপ্রবাহকে আজ তাহার জীবন্ত মনে হইতেছিল’- এই উম্মত্ততার পরিচয় দাও।
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে নদেরচাঁদ শীর্ণকায় যে নদীকে দেখে অভ্যস্ত ছিল তা বর্ষণপুষ্ট হয়ে প্রতিনিয়ত উম্মত্ত জলপ্রবাহের আবর্ত রচনা করায় সেই জলরাশিকে জীবন্ত বলে মনে হয়েছিল।
৩৮. ‘তার সঙ্গে খেলায় যোগ দিয়া ….. লুকাইয়া ফেলিয়াছে।’- কোন খেলার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ একটানা বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠা নদীর উম্মত্ত জলরাশিতে পুরোনো চিঠি খেলার ছলে ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলেছিল নদেরচাঁদ। এখানে সেই খেলার কথা বলা হয়েছে।
৪০. ‘একটু মমতা বোধ করিল বটে’- কী বিষয়ে মমতা বোধ করার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ উন্মত্ত নদীর জলে, স্ত্রীকে লেখা বিরহ-বেদনাপূর্ণ চিঠির এক একখানি পাতা ছিঁড়ে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দেওয়ার সময় নদেরচাঁদ স্ত্রীর প্রতি মমতাবোধ করেছিল।
৪১. ‘লোভটা সে সামলাইতে পারিল না’- কোন্ লোভের কথা বলা হয়েছ ?
উত্তরঃ এখানে ‘লোভ’ বলতে উন্মত্ত নদীর সঙ্গে নদের চাঁদের খেলার লোভের কথা বলা হয়েছে। সেই লোভের বশবর্তী হয়ে নদেরচাঁদ স্ত্রীকে লেখা চিঠির পাতাগুলো একের পর এক নদীতে ছুঁড়ে ফেলেছিল।
৪২. ‘বসিয়া বসিয়া ভিজিতে লাগিল, উঠিল না’- কে, কোথা থেকে উঠল না ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে স্ফীতকায় জলরাশির সঙ্গে খেলতে খেলতে আত্মহারা নদেরচাঁদ প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকলেও এক অজানা আত্মিক টানে নদীর ধার ছেড়ে উঠল না।
৪৩. ‘নদেরচাঁদের মন হইতে ছেলেমানুষি আমোদ মিলাইয়া গেল,’- নদের চাঁদের মন থেকে আমোদ মিলিয়ে গেল কেন ?
উত্তরঃ ব্রিজের ধারকস্তম্ভের ওপর বসে উত্তাল নদী থেকে উঠে আসা শব্দের সঙ্গে বৃষ্টির শব্দ মিশে তৈরি হওয়া শব্দ শুনতে শুনতে নদের চাঁদের মন থেকে ছেলেমানুষি আমোদ মিলিয়ে গিয়েছিল।
৪৪. ‘পাঁচ দিন নদীকে দেখা হয় নাই। – এই উদ্ধৃতির মধ্য দিয়ে নদের চাঁদের যে আন্তরিক আকুতি ফুটে উঠেছে, তার পরিচয় দাও।
উত্তরঃ নদের চাঁদের ছোটো থেকেই নদীর প্রতি বড়ো টান। পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য সে নদীর কাছে যেতে পারেনি। তাই বৃষ্টি থামতেই নদীকে দেখার জন্য সে উৎসুক হয়ে উঠল।
৪৫. ‘নদের চাঁদ ছেলেমানুষের মতো ঔৎসুক্য বোধ করিতে লাগিল।’- ‘ছেলেমানুষের মতো’ বলার কারণ কী ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পে অবিশ্রান্ত বৃষ্টির কারণে নদীকে দেখতে না পেয়ে নদের চাঁদের মধ্যে যে আকুলতা সৃষ্টি হয়েছিল, তা সাধারণত কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে দেখা যায় না। এই আগ্রহ বা ঔৎসুক্যবোধকেই ‘ছেলেমানুষের মতো’ বলা হয়েছে।
৪৬. ‘কিছুক্ষণ নদীকে না দেখিলে সে বাঁচিবে না।’- এ কথা বলার কারণ কী ?
উত্তরঃ এ কথার মধ্য দিয়ে নদের চাঁদের সঙ্গে নদীর গভীর বন্ধুত্বকে বোঝানো হয়েছে। একটানা পাঁচ দিন বৃষ্টির পরে নদীকে দেখার জন্য তার মধ্যেকার আকুলতাকে প্রকাশকে বোঝানো হয়েছে।
৪৭. ‘আর কিছুক্ষনের মধ্যেই প্রবল ধারায় বর্ষণ শুরু হইয়া যাইবে। তা হোক।’- ‘তা হোক’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘তা হোক’ শব্দটির সাহায্যে বৃষ্টির পূর্বাভাসকে উপেক্ষা করাকে বোঝানো হয়েছে। পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণের শেষে নদীকে দেখার সুযোগ নদেরচাঁদ কোনো মতেই হাতছাড়া করতে চায় না।
৪৮. রেলের উঁচু বাঁধ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নদেরচাঁদ কী ভাবছিল ?
উত্তরঃ পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির ফলে নদেরচাঁদের নদী দেখা হয়নি। বৃষ্টি থামলে নদীকে দেখতে যাওয়ার সময় দু- দিকের মাঠঘাট দেখে সে বর্ষণ-পুষ্ট নদীর পরিপূর্ণ রূপের কথা ভাবছিল।
৪৯. ‘ত্রিশ বছর বয়সে নদীর জন্য নদের চাঁদের এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক’- এ কথা বলার কারণ কী ছিল ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহে’ নদের চাঁদের নদীকে নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের ঔৎসুক্যবোধ অনেকটা ছেলেমানুষের মতো। ত্রিশ বছর বয়সে নদীকে নিয়ে নদের চাঁদের এতটা মায়া একটু অস্বাভাবিকই লাগে।
৫০. ‘একটা কৈফিয়ত নদেরচাঁদ দিতে পারে।’- কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন কী ছিল ?
উত্তরঃ নদীর প্রতি নদেরচাঁদের তীব্র আকর্ষণ বাস্তববাদী মানুষের মনে প্রশ্ন জাগাতে পারে। তাই একটা কৈফিয়ত দেওয়া যে প্রয়োজন, তা সে অনুভব করে।
৫১. ‘নিজের এই পাগলামিতে যেন আনন্দই উপভোগ করে।’- কোন পাগলামির কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ নদেরচাঁদের নদী সম্পর্কে একটা শিশুসুলভ উন্মাদনা ছিল। নদীর সামান্য অদর্শনে সে অধৈর্য হত। অন্যের কাছে এটা পাগলামি মনে হলেও, সে নিজে এই পাগলামিতে আনন্দ পেত।
৫২. ‘নিজেকে কেবল বুঝাইতে পারে না।’- নদেরচাঁদ নিজেকে কী বোঝাতে পারে না ?
উত্তরঃ প্রাপ্তবয়স্ক নদেরচাঁদ ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত। নদীকে দেখার মতো শিশুসুলভ ঔৎসুক্য তার সাজে না। এ কথা সে মনকে বোঝাতে পারে না।
৫৩. ‘এত বেশি মায়া একটু অস্বাভাবিক’- কোন্ বিষয়কে অস্বাভাবিক বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিল। বর্ষণপুষ্ট নদীকে একটানা পাঁচ দিন না দেখার জন্য তার মধ্যে যে শিশুসুলভ উন্মত্ততা দেখা দিয়েছিল সেটাই অস্বাভাবিক।
৫৪. নদীকে ভালোবাসার পিছনে নদের চাঁদের কী কৈফিয়ত ছিল ?
উত্তরঃ নদেরচাঁদের নদীর প্রতি আকর্ষণ, শিশুসুলভ পাগলামি হলেও এর পিছনে তার একটি নিজস্ব যুক্তি ছিল। কারণ তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নদীর ধারেই। তাই তার নদীর প্রতি এই ভালোবাসা আবাল্য।
৫৫. ‘কিন্তু শৈশবে, কৈশোরে, আর প্রথম যৌবনে বড়োছোটোর হিসাব কে করে?’- উল্লিখিত সময়ে বড়ো ছোটোর হিসাব না করার কারণ কী ?
উত্তরঃ শৈশব, কৈশোর ও প্রথম যৌবনে মানুষ বুদ্ধি-বিবেচনার পরিবর্তে ব্যক্তিমনের আবেগ আকাঙক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই তার কাছে তখন ছোটো বড়ো, ভালোমন্দের চেয়ে বেশি মূল্যবান নিজের ভালোলাগা।
৫৬. ‘সে প্রায় কাঁদিয়া ফেলিয়াছিল;’- তার কেঁদে ফেলার কারণ কী ?
উত্তরঃ ‘নদীর বিদ্রোহ’ গল্পের নায়ক নদের চাঁদের ছোটোবেলা থেকেই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটির সঙ্গে খুব বন্ধুত্ব। একবার অনাবৃষ্টিতে নদীর জলস্রোত প্রায় শুকিয়ে যেতে বসায় সে কেঁদে ফেলেছিল।
৫৭. ‘অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতোই তার মমতা পাইয়াছিল।’- কাকে, কেন ‘অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়া’ বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ নদেরচাঁদ যে নদীর ধারে জন্মেছে, বড়ো হয়েছে, যাকে ভালোবেসেছে, সেই নদীটি বর্ষণপুষ্ট নদীর মতো বড়ো ছিল না। ক্ষীণস্রোতা নদীটি নদের চাঁদের কাছে ছিল অসুস্থ, দুর্বল আত্মীয়ার মতো।
৫৮. ‘নদীটি অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতোই তার মমতা পাইয়াছিল।’- নদীটির এই মমতা পাওয়ার কারণ কী ?
উত্তরঃ নদের চাঁদের আবাল্যের সঙ্গী নদীটির স্রোতধারা ছিল অতি ক্ষীণ। তাই অসুস্থ, দুর্বল আত্মীয়ের প্রতি মানুষের যেমন সহানুভূতি ও মমতা থাকে, নদের চাঁদেরও নদীটির প্রতি তাই ছিল।
📌 আরো দেখুনঃ
📌দশম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
📌 দশম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here
📌 মাধ্যমিক সমস্ত বিষয় প্রশ্নপত্র Click Here
📌 মাধ্যমিক সমস্ত বিষয় মক্ টেস্ট Click Here