পাতাবাহার
বাংলা | পঞ্চম শ্রেণি
মিষ্টি কবিতার প্রশ্ন উত্তর পঞ্চম শ্রেণি বাংলা | Misti Kobitar Question Answer Class 5 Bengali wbbse
📌 পঞ্চম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here
📌পঞ্চম শ্রেণি ইংরেজি প্রশ্নোত্তর Click Here
📌 পঞ্চম শ্রেণি ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
মিষ্টি
প্রেমেন্দ্র মিত্র
যে আকাশে ঝড় ওঠে না
মেঘ ডাকে না,
—চাই কি ?
রোদ ওঠে না জল পড়ে না,
ভালো লাগে তাই কি ?
যে পথে নেই পিছলে পড়া,
হোঁচট খাওয়া, দুখখু,
গড়িয়ে যেতে সে পথে যে
পায় মজা সে মুগ্ধ!
রাস্তা হোক না চড়াই-ভাঙা
অনেক অনেক দূর।
আকাশে থাক ঝড় বৃষ্টি,
আর কিছু রোদ্দুর।
তাতেই হবে, তাইতে।
চিবিয়ে খেতে হয় বলে আখ
মিষ্টি সবার চাইতে!
বিষয় সংক্ষেপ : প্রেমেন্দ্র মিত্রের কবিতায় জীবনের বাস্তবতাকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। কবি বলেছেন, যে আকাশে ঝড় নেই, মেঘ ডাকেনা, রোদ ওঠে না বা বৃষ্টি পড়ে না—সে আকাশ আসলে নিরস, আনন্দহীন। আবার যে পথে কোনো হোঁচট খাওয়া বা দুঃখ নেই, সে পথও জীবনের প্রকৃত স্বাদ দেয় না। মানুষের জীবনে সংগ্রাম, বাধা, কষ্ট আর ঝুঁকি থাকলেই জীবন হয়ে ওঠে অর্থবহ ও রঙিন। চড়াই-উতরাই ভরা দীর্ঘ পথ, ঝড়-বৃষ্টি আর রোদের মধ্যে দিয়েই মানুষ এগিয়ে চলে এবং সেখানেই জীবনের আসল মজা। যেমন আখকে চিবিয়ে খেলে তবেই মিষ্টির স্বাদ পাওয়া যায়, তেমনি জীবনের সুখও দুঃখ-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই প্রকৃতভাবে অনুভব করা যায়। কবি এখানে বলতে চেয়েছেন যে, সংগ্রাম ছাড়া জীবন অসম্পূর্ণ।
নামকরণের সার্থকতা : সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল নামকরণ। নাম ছাড়া সাহিত্য হতে পারে না কারণ, নামকরণের মধ্য দিয়ে পাঠক সাহিত্যকর্মটি পড়ার আগেই সাহিত্যকর্মটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে খানিক ধারণা পেতে পারে। তাই যে-কোনো সাহিত্যরচনার ক্ষেত্রেই অনিবার্যভাবে যুক্ত হয় তার নাম।
প্রেমেন্দ্র মিত্রের এই কবিতায় জীবনের সংগ্রাম ও বৈচিত্র্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে। কবি দেখিয়েছেন, ঝড়-বৃষ্টি, রোদ-তাপ, দুঃখ-কষ্ট, হোঁচট খাওয়া— এসবের মধ্য দিয়েই জীবনের প্রকৃত আনন্দ পাওয়া যায়। আকাশ যদি ঝড়হীন হয় কিংবা পথ যদি কষ্টবিহীন হয়, তবে তা হয় নিরানন্দ ও শূন্য। যেমন আখ চিবিয়ে খেলে তবে মিষ্টি পাওয়া যায়, তেমনি সংগ্রামের ভেতর দিয়েই জীবনের স্বাদ পাওয়া যায়। তাই কবিতায় প্রকৃত জীবনের প্রতীক হিসেবে ঝড়, বৃষ্টি, রোদ্দুর, চড়াই উতরাইয়ের উল্লেখ এসেছে। এই দিক থেকে কবিতার নাম তার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ ও সার্থক।
হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর : মিষ্টি কবিতা পঞ্চম শ্রেণির বাংলা | Hate Kolome Question Answer Misti Kobita Class 5 Bengali wbbse
১. নিজের ভাষায় লেখো :
১.১ কোন্ ঋতুতে সাধারণত আকাশে ঝড় ওঠে না, মেঘ ডাকে না ?
উত্তরঃ শীত ঋতুতে সাধারণত আকাশ ঝড় ওঠে না, মেঘ ডাকে না।
১.২ কোন্ ঋতুতে সাধারণত পথ-ঘাট পিছল হয়ে পড়ে ?
উত্তরঃ বর্ষা ঋতুতে সাধারণত পথ-ঘাট পিছল হয়ে পড়ে।
১.৩ কোন্ পথে সহজেই গড়িয়ে পড়া যায় ?
উত্তরঃ পিচ্ছিল পথে সহজেই গড়িয়ে পড়া যায়।
১.৪ চড়াই-উত্রাই রাস্তা কোথায় দেখা যায় ?
উত্তরঃ চড়াই-উত্রাই রাস্তা অসমতল বা পাহাড়ি এলাকায় দেখা যায়।
১.৫ ‘রাস্তা’ শব্দটি অন্য কোন্ নামে কবিতায় আছে ?
উত্তরঃ ‘রাস্তা’ শব্দটি ‘পথ’ নামে আলোচ্য কবিতায় আছে।
১.৬ আখের প্রসঙ্গ রয়েছে, তোমার পাঠ্যসূচির এমন অন্য একটি রচনার নাম লেখো।
উত্তরঃ আখের প্রসঙ্গ রয়েছে এমন একটি রচনার নাম ‘বোকা কুমিরের গল্প’।
২। নীচের এই শব্দগুলো মূল কোন্ কোন্ শব্দ থেকে এসেছে :
আখ : __________ রোদ্দুর : ___________
উত্তরঃ আখ— ইক্ষু, রোদ্দুর— রৌদ্র।
৩. ‘চড়াই’ ও ‘পড়ে’—এই দুটি শব্দের দুটি করে অর্থ লেখো, বাক্যে ব্যবহার করো :
উত্তরঃ
চড়াই (পাখি বিশেষ)— চড়াই পাখি সাধারণত চঞ্চল প্রকৃতির হয়।
চড়াই (উচুনীচু)— গাড়িটি চড়াই-উতরাই পাহাড়ি রাস্তায় এগিয়ে চলল।
পড়ে (পাঠ করা)— তোমার পাঠ্য বইয়ের গল্পগুলি পড়ে নাও।
পড়ে (পতিত হওয়া)— শিশুটি রাস্তায় পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছে।
৪। তোমার স্কুলে যাওয়ার, খেলতে যাওয়ার, আর বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার রাস্তাগুলো কেমন, তিনটে রাস্তা নিয়ে আলাদা আলাদা দুটো করে বাক্য লেখো। এ প্রসঙ্গে কোন রাস্তাটি তোমার কেন ভালো লাগে, তার পক্ষে দুটি যুক্তি দাও।
উত্তরঃ আমার স্কুলে যাওয়ার রাস্তা— আমি গ্রামাঞ্চলের ছেলে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাকা রাস্তায় উঠে সাইকেল, ভ্যান রিকশা, ঠেলাগাড়ি, মোটর বাইক আর নিত্যযাত্রী মানুষজনের ব্যস্ততাকে কাটিয়ে প্রতিদিন আমি স্কুলে যাই।
খেলতে যাওয়ার রাস্তা— আমাদের বাড়ির পিছন দরজা দিয়ে বেরিয়ে বাঁশ ঝাড়ের পাশ দিয়ে রাস্তা ধরে বুড়ো শিবতলা পেরিয়ে দিঘির ধারে বিরাট খোলা মাঠ। এই মাঠে প্রতিদিন আমরা বন্ধুরা বিকেলবেলা খেলতে আসি।
বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার রাস্তা— আমাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাঁদিকে ধানখেত। ধানখেতের আলপথ ধরে পাশের গ্রামের বন্ধুর বাড়ি খুব তাড়াতাড়ি যাওয়া যায়।
গ্রামাঞ্চলের তিনটি রাস্তার মধ্যে আমার খেলতে যাওয়ার রাস্তাটা বড়োই ভালো লাগে। কেননা আমি যখন বন্ধুদেরসঙ্গে হই হই করতে করতে বিরাট দিঘির ধারে খোলা মাঠে গিয়ে দাঁড়াই আমার মনে হয় আমি যেন পাখিদের মতো স্বাধীন, মুক্ত।
৫। কষ্টের বিনিময়ে পাওয়া যে সুখ তা-ই প্রকৃত সুখ। কবিতায় এই কথাটি কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে লেখো।
উত্তরঃ জীবনে প্রকৃত সুখ পেতে হলে মানুষকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়। মনীষীগণ বলেছেন, অর্থ বিনা সুখ লাভ হয় না। এই অর্থকে লাভ করতে হলে নিজেকে জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এর জন্য চাই উদ্যম, প্রচেষ্টা। জীবনে এগিয়ে যাবার লক্ষ্যে অনেক বাধাবিঘ্ন আসবে। কিন্তু সহ্য করে কষ্টের মধ্য দিয়ে, বাধাবিপত্তি কাটিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছোনোর যে সুখ সেই সুখই হল প্রকৃত সুখ। ‘মিষ্টি’ কবিতায় কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র বলেছেন, ‘আখ একটি শক্ত লাঠির মতো রসালো ফল। কিন্তু এই শক্ত লাঠির মতো আখ থেকে অনেক মেহনত করে মিষ্টি রস বের করে যখন আমরা পান করি তখন
অত মেহনতের কথা ভুলে গিয়ে পরম তৃপ্তি লাভ করি।
৬.১ ছোটোদের প্রিয় ‘ঘনাদা’ চরিত্র কার সৃষ্টি ?
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের সৃষ্টি।
৬.২ প্রেমেন্দ্র মিত্র কোন সাহিত্য-পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ?
উত্তরঃ ‘কল্লোল’ সাহিত্য-পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
৬.৩ তাঁর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ “সাগর থেকে ফেরা’, ‘হরিণ-চিতা-চিল’।
৭। কোন্ কোন্ মিষ্টি খাবার তোমার খেতে ভালো লাগে, নীচের মানস মানচিত্রে সেগুলির নাম লেখো :
উত্তরঃ রসগোল্লা, দই, মিহিদানা, রাবড়ি, জিলিপি, লাড্ডু, সন্দেশ, গজা।
এই মিষ্টিগুলি নিয়ে এক-একটা বাক্য লেখো।
উত্তরঃ
রসগোল্লা— রসগোল্লা মানুষের অত্যন্ত প্রিয় মিষ্টি।
দই— গরমকালে দই দিয়ে ভাত খেতে খুব ভালো লাগে।
মিহিদানা— আমার বাবা বাড়িতে প্রায় মিহিদানা নিয়ে আসে।
রাবড়ি— রাবড়ি খেতে আমার ভীষণ ভালো লাগে।
জিলিপি— মেলায় গেলে সবাই জিলিপি কিনে বাড়ি যায়।
লাড্ডু— মামা আমাদের বাড়িতে আসলে লাড্ডু নিয়ে আসে।
সন্দেশ— আমার ভাই ছানার সন্দেশ খেতে খুব ভালোবাসে।
গজা— আমাদের পাড়ার দোকানে খুব ভালো গজা পাওয়া যায়।
৮. নির্দেশ অনুসারে উত্তর দাও :
৮.১ নীচের কোন্ ছবিতে কোন্ ঋতুর আকাশ কেমন ?
উত্তরঃ শরৎ : শরৎকালের নীল আকাশে সাদা সাদা তুলোর মতো মেঘ উড়ে বেড়ায়। নদীর ধারে কাশফুলের শোভা উৎসবের গন্ধ নিয়ে মানুষের কাছে আবির্ভূত হয়। দেবী দুর্গার আগমনী গান শোনা যায়।
বর্ষা : বর্ষাকালে আকাশ কালো মেঘে ঢাকা থাকে। কখনও গুঁড়িগুড়ি, কখনও প্রবলবেগে বৃষ্টি হয়। নদী, খাল, বিল, পুকুর জলে ভরে যায়। বৃষ্টির আনন্দে ব্যাঙের কলরব শোনা যায়।
৮.২ এইরকম অন্য কোনো ঋতুর আকাশ সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ গ্রীষ্ম ঋতুর আকাশ– বাংলার প্রথম ঋতু গ্রীষ্ম তার রুদ্র মূর্তি নিয়ে আকাশ বাতাস উত্তপ্ত করে সমস্ত প্রাণীকে তৃষ্ণার্ত করে। এই সময় মাঝে মাঝে মধ্য গগনের সূর্যকে ঢেকে দিয়ে কালবৈশাখীর মত্ত ঝড় মুহূর্তের মধ্যে যেন সব কিছু ওলটপালট করে দেয়। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসকে গ্রীষ্মকাল ধরা হলেও বছরে প্রায় ছয় মাসই এখানে গ্রীষ্মকাল। এই সময় সূর্যের কিরণ লম্বভাবে পড়ায় খুবই উষ্ণ হয়। বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে নদীনালা, পুকুর-ডোবা সব শুকিয়ে যায়।
শীত ঋতুর আকাশ— পৌষ-মাঘ দুই মাস শীতকাল। শীতকালে উত্তরের হিমেল হাওয়া প্রবাহিত হয়। শীত শুষ্ক ঋতু। গাছের পাতা ঝরে যায়। ভোরে শিশির পড়ে। সন্ধ্যায় চারদিক কুয়াশায় ঢেকে যায়। কনকনে ঠান্ডায় শরীর অবশ হয়ে যায়। এই সময় মাঠে মাঠে প্রচুর রবি শস্য ফলে। শীতকালে সবুজ শাকসবজি এবং বিভিন্ন রকমের ফল পাওয়া যায়। সুস্বাদু খাবারের জন্য শীতকাল উপযুক্ত সময়। এই সময় নানা রকমের প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। খেজুর রসের মিষ্টান্ন খুবই উপাদেয় খাদ্য। প্রচণ্ড শীতে লোকে আগুন জ্বেলে কিংবা রোদে পিঠ দিয়ে শরীর উষ্ণ রাখে। শীতকালে নানা রকমের ফুল ফোটে।
◆ অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর : মিষ্টি কবিতা পঞ্চম শ্রেণির বাংলা | Hate Kolome Question Answer Misti Kobita Class 5 Bengali wbbse
১. মিষ্টি কবিতার রচয়িতা কে ?
(ক) জীবনানন্দ দাশ (খ) প্রেমেন্দ্র মিত্র
(গ) সুকান্ত ভট্টাচার্য (ঘ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
উত্তরঃ (খ) প্রেমেন্দ্র মিত্র
২. যে আকাশে ঝড় ওঠে না, সেই আকাশ কেমন লাগে ?
(ক) সুন্দর (খ) নিরানন্দ
(গ) ভীষণ ভীতিকর (ঘ) আনন্দময়
উত্তরঃ (খ) নিরানন্দ
৩. কবি কোন পথে চলতে আনন্দ পান ?
(ক) কষ্টহীন পথে
(খ) নিরিবিলি পথে
(গ) হোঁচট খাওয়া ও দুঃখভরা পথে
(ঘ) ফুলে ভরা পথে
উত্তরঃ (গ) হোঁচট খাওয়া ও দুঃখভরা পথে
৪. কবির মতে জীবনের আনন্দ কোথায় ?
(ক) সংগ্রাম ও দুঃখের মধ্যে (খ) সুখ-সুবিধায়
(গ) অলসতায় (ঘ) নির্জনতায়
উত্তরঃ (ক) সংগ্রাম ও দুঃখের মধ্যে
৫. ‘চিবিয়ে খেতে হয় বলে আখ মিষ্টি সবার চাইতে’— এর দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে ?
(ক) আখ খুব সুস্বাদু
(খ) পরিশ্রম করলে মিষ্টি ফল মেলে
(গ) আখ সহজে খাওয়া যায় না
(ঘ) আখের রস ভালো লাগে
উত্তরঃ (খ) পরিশ্রম করলে মিষ্টি ফল মেলে
৬. কবি জীবনের কষ্টকে কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন ?
(ক) বৃষ্টির সঙ্গে (খ) আগুনের সঙ্গে
(গ) আখ চিবানোর সঙ্গে (ঘ) ঝড়ের সঙ্গে
উত্তরঃ (গ) আখ চিবানোর সঙ্গে
৭. কবি কেমন আকাশ চান ?
(ক) ঝড়হীন (খ) রৌদ্রহীন
(গ) বৃষ্টি-ঝড় ও রোদ্দুরময় (ঘ) মেঘহীন
উত্তরঃ (গ) বৃষ্টি-ঝড় ও রোদ্দুরময়
৮. কবিতায় জীবনের পথকে কীভাবে বর্ণনা করা হয়েছে ?
(ক) সোজা ও মসৃণ (খ) চড়াই-ভাঙা ও দীর্ঘ
(গ) ছোট ও সহজ (ঘ) নিরানন্দ ও অন্ধকার
উত্তরঃ (খ) চড়াই-ভাঙা ও দীর্ঘ
৯. প্রেমেন্দ্র মিত্র যে চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন সেটি হল (ক) টেনিদা (খ) ঘনাদা (গ) ফেলুদা (ঘ) ব্যোমকেশ বক্সী)।
উত্তরঃ (খ) ঘনাদা।
১০. কবিতার মূল শিক্ষা কী ?
(ক) দুঃখ এড়াতে হবে
(খ) সুখই জীবনের লক্ষ্য
(গ) দুঃখ-সুখ মিলিয়েই জীবনের স্বাদ
(ঘ) আখের রস সবচেয়ে মিষ্টি
উত্তরঃ (গ) দুঃখ-সুখ মিলিয়েই জীবনের স্বাদ
১১. প্রেমেন্দ্র মিত্র যে পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সেটি হল (ক) কল্লোল (খ) হিতবাদী (গ) বালক (ঘ) ভারতী
উত্তরঃ (ক) কল্লোল।
◆ অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটি প্রশ্নের মান- ১
১. ‘মিষ্টি’ কবিতাটির কবি কে ?
উত্তরঃ মিষ্টি’ কবিতাটির কবি হলেন প্রেমেন্দ্র মিত্র।
২. কবি কেমন রাস্তা পছন্দ করেন?
উত্তরঃ কবি চড়াই-ভাঙা রাস্তা পছন্দ করেন।
৩. কবি কেমন আকাশ পছন্দ করেন?
উত্তরঃ কবি ঝড়, বৃষ্টি, রোদ্দুরময় আকাশ পছন্দ করেন।
৪. কোন্ জিনিস চিবিয়ে খেতে হয়?
উত্তরঃ আখ চিবিয়ে খেতে হয়।
৫. কবি শান্ত আকাশ কেন চান না?
উত্তরঃ কারণ তাতে কোনো আনন্দ নেই।
৬. কবির মতে কেমন পথে মজা মেলে?
উত্তরঃ হোঁচট-খাওয়া, দুঃখের পথে।
৭. কবি ‘মিষ্টি’ বলতে কী বোঝান?
উত্তরঃ জীবনের আসল স্বাদ।
৮. আখের সঙ্গে জীবনের তুলনা কেন?
উত্তরঃ চিবিয়ে খেলে যেমন আখ মিষ্টি, তেমনি সংগ্রামে জীবন মিষ্টি।
◆ দু তিনটি বাক্যে উত্তর লেখ : প্রতিটি প্রশ্নের মান- ২
১. প্রেমেন্দ্র মিত্র কোন্ গ্রন্থের জন্য ‘সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার’ পেয়েছিলেন? তিনি ওই গ্রন্থের জন্য আর কোন্ পুরস্কার লাভ করেছিলেন ? (১+১)
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্র ‘সাগর থেকে ফেরা’ গ্রন্থটির জন্য ‘সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার’ পেয়েছিলেন।
তিনি ওই একই গ্রন্থের জন্য আর যে পুরস্কারটি লাভকরেছিলেন, সেটি হল ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’।
২. প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা প্রথম ছোটোগল্প কী ? কোন্ পত্রিকায় প্রথম তাঁর কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে ? (১+১)
উত্তরঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা প্রথম ছোটোগল্প ‘শুধু কেরানী’।
‘কালিকলম’ পত্রিকায় প্রথম তাঁর কবি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে।
৩. ‘চাই কি ?’- কবি কোন্ আকাশ সম্পর্কে এ কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ কবি যে আকাশে ঝড় ওঠে না, মেঘ ডাকে না-সেই আকাশ সম্পর্কে প্রশ্নে উদ্ধৃত কথাটি বলেছেন।
৪. কোন্ বিষয়কে কবি ‘দুখখু’ বলে উল্লেখ করেছেন ?
উত্তরঃ যে পথে পিছনে পড়া এবং হোঁচট খাওয়া নেই, তাকে কবি ‘দুখখু’ বলে উল্লেখ করেছেন।
৫. কবি শান্ত আকাশ ও নিরিবিলি পথকে কেন পছন্দ করেন না?
উত্তরঃ কবি মনে করেন ঝড়-বৃষ্টি, রোদ্দুর আর কষ্ট ছাড়া জীবনে মজা পাওয়া যায় না। তাই তিনি শান্ত আকাশ ও নিরিবিলি পথকে পছন্দ করেন না।
৬. কবির মতে কোন পথে চলতে মজা পাওয়া যায়?
উত্তরঃ কবির মতে, যে পথে হোঁচট খাওয়া, দুঃখ পাওয়া ও গড়িয়ে পড়ার ভয় আছে, সেই পথেই চলতে মজা পাওয়া যায়।
৭. কবি ‘মিষ্টি’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ কবি এখানে ‘মিষ্টি’ বলতে জীবনের সংগ্রাম, কষ্ট ও আনন্দময় অভিজ্ঞতার আসল স্বাদকে বোঝাতে চেয়েছেন।
৮. আখের সঙ্গে জীবনের তুলনা কেন করা হয়েছে ?
উত্তরঃ যেমন আখ চিবিয়ে খেলে তার মিষ্টি পাওয়া যায়, তেমনি জীবনের কষ্ট-সংগ্রাম সহ্য করলেই জীবনের প্রকৃত মিষ্টি পাওয়া যায়।
◆ কম বেশী ছটি বাক্যে উত্তর লেখ : প্রশ্নের মান-৩
১. ‘ভালো লাগে তাই কি ?’- কবি কেন এ কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা ‘মিষ্টি’ নামক কবিতাটি থেকে। কবি বলেছেন যে আকাশে ঝড় ওঠে না, মেঘ ডাকে না, সেই আকাশ আমরা চাই না। আবার যে আকাশে কখনও রোদ ওঠে না, জল পড়ে না সেই আকাশ কী কখনও আমাদের ভালো লাগতে পারে। সেই আকাশ কখনোই আমাদের ভালো লাগে না।
২. আখকে ‘মিষ্টি সবার চাইতে’ বলা হয়েছে কেন ?
উত্তরঃ আখের রসকে কখনোই সহজে লাভ করা যায় না। বহু কষ্ট করে আখকে চিবোলে তবেই সেই রস সহজে লাভ করা যায়। তাই আখকে কবির ‘মিষ্টি সবার চাইতে’ বলে মনে হয়েছে। আসলে কবি এর মধ্য দিয়ে যে কথাটি বলতে চেয়েছেন তা হল কঠিন দুঃখের মধ্য দিয়ে আমরা যে সুখকে লাভ করি, তাই হল প্রকৃত সুখ। কোনো পরিশ্রম না করেই যে সুখ পাওয়া যায় তা আমাদের তেমন ভালো লাগে না।
৩. কবি কেমন পথকে আনন্দের পথ বলেছেন?
উত্তরঃ প্রশ্নে উল্লিখিত অংশটি নেওয়া হয়েছে কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘মিষ্টি’ কবিতা থেকে। কবি বলেছেন, যে পথে কোনো বাধা নেই, হোঁচট খাওয়া নেই, পিছলে পড়া নেই, সেই পথ কখনোই আনন্দ দেয় না। কারণ, সহজে পাওয়া জিনিসে আসল আনন্দ থাকে না। মানুষ কষ্ট পেলে, গড়িয়ে পড়ে আবার উঠে দাঁড়ালে, তখনই তার মধ্যে মুগ্ধতা জন্মায়। তাই কবির মতে আসল মজা লুকিয়ে আছে চড়াই-ভাঙা, দুর্গম পথে। সেখানে যেমন দুঃখ আছে, তেমনি আছে সংগ্রামের স্বাদ। সেই সংগ্রাম থেকেই আসে জীবনের প্রকৃত মিষ্টি। তাই কবি বাধা-বিপত্তিতে ভরা পথকেই আনন্দের পথ বলেছেন।
৪. কবি আকাশের সঙ্গে জীবনের তুলনা করেছেন কীভাবে?
উত্তরঃ কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র তাঁর ‘মিষ্টি’ কবিতায় আকাশকে জীবনের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কবি বলেছেন, যে আকাশে ঝড় ওঠে না, মেঘ ডাকে না, রোদ ওঠে না, জল পড়ে না— সেই আকাশ যেমন প্রাণহীন, তেমনি জীবনও সংগ্রামহীন হলে তার কোনো স্বাদ থাকে না। ঝড়-বৃষ্টি, রোদ্দুরময় আকাশ যেমন জীবন্ত ও সুন্দর, তেমনি জীবনের সুখ-দুঃখ, দুঃখ-কষ্ট আর লড়াই জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য বাড়ায়। আকাশের বৈচিত্র্যই তাকে মনোরম করে তোলে। আর মানুষের জীবনের বৈচিত্র্যই তাকে মধুর করে। তাই কবি মনে করেন, আকাশের মতো জীবনেও ঝড়-বৃষ্টি চাই। সেটিই জীবনের সত্যিকার মিষ্টি।
৫. কবিতায় ‘মিষ্টি’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘মিষ্টি’ কবিতায় ‘মিষ্টি’ শব্দটি জীবনের গভীর তাৎপর্য বহন করে। কবির মতে, মিষ্টি শুধু আখের রসে সীমাবদ্ধ নয়, বরং জীবনের আসল স্বাদও বোঝায়। যেমন আখকে চিবিয়ে খেতে হয়, তেমনি জীবনের কষ্ট-সংগ্রাম সহ্য করলেই প্রকৃত আনন্দ পাওয়া যায়। সহজে পাওয়া সুখ টেকসই হয় না। কিন্তু দুঃখ-কষ্ট পেরিয়ে আসা আনন্দই আসল সুখ। কবি এই কষ্টকেই জীবনের মিষ্টি হিসেবে দেখেছেন। কারণ, দুঃখ না থাকলে সুখের স্বাদ বোঝা যায় না। তাই কবি সংগ্রামের মাঝেই জীবনের আসল ‘মিষ্টি’ খুঁজে পেয়েছেন।
৬. কবি কেন শান্ত আকাশ ও নিরুপদ্রব জীবনকে অপ্রিয় বলেছেন ?
উত্তরঃ কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র তাঁর ‘মিষ্টি’ কবিতায় জীবনের বাস্তব সত্যকে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, যে আকাশে ঝড় ওঠে না, মেঘ ডাকে না, রোদ ওঠে না, বৃষ্টি নামে না, সেই আকাশ একঘেয়ে। তেমনি জীবনে যদি কোনো বাধা-বিপত্তি না আসে, তবে সেই জীবন নিরস ও অর্থহীন। মানুষের প্রকৃত আনন্দ কষ্টের ভেতর দিয়েই খুঁজে পাওয়া যায়। হোঁচট খাওয়া, পিছলে পড়া কিংবা দুঃখভোগ করা— এসবই জীবনের অঙ্গ। এগুলো ছাড়া জীবনের স্বাদ বোঝা যায় না। তাই কবি শান্ত, নিরুপদ্রব জীবনকে অপ্রিয় বলেছেন। তিনি আসলে বোঝাতে চেয়েছেন, কষ্ট-সংগ্রামেই জীবনের আসল সৌন্দর্য।
৭. কবিতায় কবি কীভাবে জীবনের সংগ্রামের সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন ?
উত্তরঃ ‘মিষ্টি’ কবিতায় কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র জীবনের সংগ্রামের সৌন্দর্য খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি বলেছেন, যে পথে হোঁচট খাওয়া নেই, পিছলে পড়া নেই, সেই পথে চলতে কারও ভালো লাগে না। বরং চড়াই-উতরাই পার হওয়া, কষ্টে ভরা দীর্ঘ পথেই মজা রয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি, রোদ্দুরময় আকাশ যেমন প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি সুখ-দুঃখ মিলিয়েই জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য গড়ে ওঠে। সংগ্রাম মানুষকে দৃঢ় করে তোলে এবং সেই সংগ্রামের মধ্য দিয়েই মানুষ জীবনের আসল স্বাদ পায়। তাই কবি মনে করেন, সংগ্রামহীন জীবন অসম্পূর্ণ।
৮. আখের সঙ্গে কবি জীবনের কী তুলনা করেছেন ?
উত্তরঃ কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র আখের সঙ্গে জীবনের এক সংগ্রামকে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আখ থেকে রস পাওয়ার জন্য তাকে চিবোতে হয়। সহজে আখের রস পাওয়া যায় না। তেমনি জীবনে সুখ পেতেও কষ্ট সহ্য করতে হয়। যে সুখ কষ্ট ছাড়া পাওয়া যায়, তার মূল্য টেকে না। কিন্তু দুঃখ-কষ্টের বিনিময়ে যে সুখ পাওয়া যায়, সেটিই প্রকৃত আনন্দ। আখ যেমন চিবোতে কষ্ট হয়, কিন্তু শেষে রস মিষ্টি লাগে, তেমনি জীবনেও দুঃখকষ্টের পরেই সুখ আরও মধুর হয়ে ওঠে। তাই কবি আখকে ‘মিষ্টি সবার চাইতে’ বলেছেন।
◆ রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর : প্রশ্নের মান-৫
১. “চিবিয়ে খেতে হয় বলে আখ / মিষ্টি সবার চাইতে!”– ‘মিষ্টি’ কবিতায় কবি আখকে ‘মিষ্টি সবার চাইতে’ বলে জীবনের কোন্ সত্যকে তুলে ধরেছেন ?
উত্তরঃ যে জিনিস আমরা সহজেই পেয়ে যাই, সে জিনিস পাওয়ার মধ্যে কোনো আনন্দ থাকে না। কিন্তু যে জিনিস পেতে গেলে আমাদের অনেক দুঃখকষ্ট সহ্য করতে হয়; সেই জিনিস পাওয়ার আনন্দ অপরিসীম। ‘মিষ্টি’ কবিতাটির মধ্যে কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র প্রথমেই কিছু শান্ত, সাদামাটা, নিরুপদ্রব জীবনের পরিচয় দিয়েছেন। কবিতার শেষে কবি বলেছেন যে, আখের রস খাওয়ার জন্য আমাদের অনেক কষ্ট করে চিবোতে হয়। তাই আখের রসকে আমাদের সবচেয়ে মিষ্টি বলে মনে হয়। অর্থাৎ কবি বলতে চেয়েছেন কষ্ট করে যে সুখ পাওয়া যায় তা-ই প্রকৃত সুখ।
২. ‘জীবন কীভাবে মিষ্টি-মধুর হয়ে ওঠে তা ‘মিষ্টি’ কবিতা অনুসরণে আলোচনা করো। দুঃখের মূল্যে লাভ করেছ, এমন কিছুর কথা কয়েকটি বাক্যে লেখো। (৩+২)
উত্তরঃ কবি প্রেমেন্দ্র মিত্র তাঁর ‘মিষ্টি’ নামক কবিতাটির মধ্যে বোঝাতে চেয়েছেন যে, কষ্টের বিনিময়ে যে সুখ পাওয়া যায় তাই প্রকৃত সুখ। তিনি বলেছেন যে আকাশে ঝড় ওঠে না, মেঘ ডাকে না, সে আকাশ আমাদের ভালো লাগে না। যে পথে কেউ পিছলে পড়ে না, হোঁচট খায় না, সে পথে চলতে গেলে দুঃখ লাগে। সেই পথে গড়িয়ে যেতে কেউ মজা পেলে সে মূর্খ। চড়াই-উতরাই পার হওয়া বহু দূরগামী রাস্তা, ঝড়-বৃষ্টি ও রোদ্দুরময় আকাশ সকলের প্রিয়। আখ চিবিয়ে কষ্ট করে রস খেতে হয় বলে আখ অত্যন্ত মিষ্টি লাগে।
তৃতীয় শ্রেণিতে ইংরেজিতে আমি খুব কম নম্বর পেয়েছিলাম। আমার ইংরেজি বিষয়টি কঠিন লাগত বলে আমি সেভাবে মন দিয়ে পড়তাম না। কিন্তু চতুর্থ শ্রেণিতে উঠে আমি ইংরেজিতে জোর দিই। বেশি সময় নিয়ে বিষয়টি বুঝে বুঝে পড়ি। ফলে আমি ভালো নম্বর পাই।
৩. “যে পথে নেই পিছলে পড়া, হোঁচট খাওয়া, দুঃখ”— কবি এই লাইন দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছেন ? আলোচনা করো।
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের “মিষ্টি” কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে কবি বোঝাতে চেয়েছেন, যে জীবন বা যে পথ একেবারেই সহজ-সরল, সেখানে কোনো আনন্দ নেই। যে পথে চলার সময় হোঁচট খাওয়া, পিছলে পড়া কিংবা কষ্ট ভোগ করতে হয় না, সে পথ একঘেয়ে ও বিরক্তিকর। কারণ মানুষের জীবনে আসল আনন্দ লুকিয়ে থাকে চ্যালেঞ্জ ও সংগ্রামের মধ্যে। যদি জীবনে দুঃখ না থাকে, তবে সুখের প্রকৃত স্বাদ বোঝা যায় না। ঝড়-বৃষ্টি, রোদ্দুরে ভরা আকাশ যেমন সুন্দর, তেমনি হোঁচট খাওয়া, পড়ে যাওয়া আর দুঃখ সহ্য করা জীবনের সৌন্দর্য বাড়ায়। কবির মতে, সংগ্রামের ভেতর দিয়েই মানুষ পরিপূর্ণ হয়। তাই তিনি শান্ত ও নিরুপদ্রব জীবনকে নীরস বলেছেন। আসলে এই লাইন দ্বারা কবি বুঝিয়েছেন যে জীবনের প্রকৃত মিষ্টি পেতে হলে বাধা-বিপত্তি, দুঃখ-কষ্টের মধ্য দিয়েই যেতে হয়। সংগ্রামহীন জীবন মধুর হয় না।
৪. “রাস্তা হোক না চড়াই-ভাঙা, অনেক অনেক দূর।” – কবি এখানে কী বোঝাতে চেয়েছেন ? আলোচনা করো।
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের “মিষ্টি” কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে কবি মানুষের জীবনের পথের সঙ্গে রাস্তার তুলনা করেছেন। কবি বলেছেন, যদি জীবনের পথ একেবারে মসৃণ হয়, সেখানে কোনো উতরাই বা চড়াই না থাকে, তবে জীবনে আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় না। বরং জীবনের পথে বাঁক, উত্থান-পতন, চড়াই-উতরাই থাকলেই সেটি সত্যিকার অর্থে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। এই ধরনের জীবনপথে কষ্ট থাকলেও মানুষ তার ভেতর দিয়ে নিজের শক্তি ও সাহস প্রমাণ করতে পারে। দীর্ঘ ও দুর্গম পথ পার হয়ে সফলতা অর্জন করার আনন্দই আসল সুখ। কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে, সহজে পাওয়া সুখের মূল্য নেই। কিন্তু সংগ্রাম করে যে সুখ অর্জিত হয়, সেটিই মিষ্টি ও টেকসই। তাই তিনি ‘চড়াই-ভাঙা’ ও দীর্ঘ পথকে জীবনের আনন্দের পথ বলেছেন। এর মাধ্যমে কবি মানুষের জীবনের কঠিন সত্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন।
৫. “চিবিয়ে খেতে হয় বলে আখ / মিষ্টি সবার চাইতে।” – কবি এই তুলনার মাধ্যমে কী জীবনদর্শন প্রকাশ করেছেন ?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পংক্তিটি কবি প্রেমেন্দ্র মিত্রের “মিষ্টি” কবিতা থেকে নেওয়া। এখানে কবি আখের উদাহরণ দিয়ে জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ সত্যকে বোঝাতে চেয়েছেন। আখ থেকে রস পেতে হলে তাকে চিবিয়ে খেতে হয়। সহজে বা পরিশ্রম ছাড়া আখের মিষ্টি রস পাওয়া যায় না। তেমনি জীবনের সুখও কষ্ট-সংগ্রামের মাধ্যমে লাভ করা যায়। যে সুখ সহজেই পাওয়া যায়, তার স্থায়িত্ব ও মাধুর্য নেই। কিন্তু যে সুখ দুঃখ-সংগ্রামের পর পাওয়া যায়, সেটিই আসল মিষ্টি। কবি আসলে বলতে চেয়েছেন, জীবনে কষ্টকে ভয় পেলে সুখকে পাওয়া যায় না। মানুষের জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য হল দুঃখের ভেতর দিয়ে আনন্দকে খুঁজে পাওয়া। আখ যেমন চিবিয়ে খেলে তবেই তার আসল স্বাদ মেলে, তেমনি জীবনের দুঃখ-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই জীবনের প্রকৃত মধুরতা অনুভব করা যায়। তাই কবি আখকে জীবনের মিষ্টির প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন।
📌 আরো দেখুনঃ
📌পঞ্চম শ্রেণি ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
📌পঞ্চম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here
📌পঞ্চম শ্রেণি ইংরেজি প্রশ্নোত্তর Click Here