পাতাবাহার
বাংলা | পঞ্চম শ্রেণি
মাস্টারদা গল্পের প্রশ্ন উত্তর পঞ্চম শ্রেণি বাংলা | Mastarda Golper Question Answer Class 5 Bengali wbbse
📌 পঞ্চম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here
📌পঞ্চম শ্রেণি ইংরেজি প্রশ্নোত্তর Click Here
📌 পঞ্চম শ্রেণি ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
মাষ্টারদা
—অশোককুমার মুখোপাধ্যায়
হাতেকলমে প্রশ্নের উত্তর : মাস্টারদা পঞ্চম শ্রেণির বাংলা | Hate Kolome Question Answer Mastarda Class 5 Bengali wbbse
১। নিজে নিজে লেখো :
১.১ আমাদের দেশের নাম কী ?
উত্তরঃ আমাদের দেশের নাম ভারতবর্ষ।
১.২ আমাদের দেশে কোন দিনটিতে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়ে থাকে ?
উত্তরঃ আমাদের দেশে ১৫ আগস্ট দিনটিতে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়ে থাকে।
১.৩ আমাদের দেশ কত সালে স্বাধীনতা লাভ করে ?
উত্তরঃ আমাদের দেশ ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভ করে।
১.৪ স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণ দিয়েছেন এমন দুজন বীর বিপ্লবীর নাম লেখো।
উত্তরঃ স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণ দিয়েছেন এমন দুজন বীর বিপ্লবীর নাম— ক্ষুদিরাম বসু ও মাস্টারদা সূর্য সেন।
১.৫ চট্টগ্রাম শহরটি বর্তমানে কোন্ দেশে অবস্থিত ?
উত্তরঃ চট্টগ্রাম শহরটি বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থিত।
২। নীচের এলোমেলো শব্দগুলি সাজিয়ে লেখো :
মু ন স শা ক্ত— শাসনমুক্ত।
র কু ড় পা পু— পুকুরপাড়।
ক ন্য অ র ম— অন্যরকম।
টি পু লি ঘাঁ শ— পুলিশঘাঁটি।
তা ভা র মা ত— ভারতমাতা।
রু বা গো দ লা— গোলাবারুদ।
৩। অর্থ লেখো : স্বাধীন, সাথি, সম্মান, সাদাসিধে, স্তোত্র।
উত্তরঃ স্বাধীন—মুক্ত, সাথি— সঙ্গী, সম্মান— মর্যাদা, সাদাসিধে— অতিসাধারণ,
স্তোত্র— স্তব, স্তুতি।
৪। নীচের শব্দগুলির যা অর্থ, সেই একই অর্থ বোঝায় এমন শব্দ মাস্টারদার কাহিনিতে রয়েছে, বুঝে নিয়ে শব্দগুলো লেখো :
উত্তরঃ
দৈত্য– দানব, যোগ্য– উপযুক্ত, নগর– শহর, অবাক– আশ্চর্য, যুদ্ধ– লড়াই, ঐশ্বর্য– সম্পদ, কমবয়স যার– অল্পবয়সি, ভয়ংকর কাণ্ড– সাংঘাতিক।
৫। বাক্যরচনা করো : পতাকা, মা, দেশ, মুক্তি, ব্যায়াম।
উত্তরঃ
পতাকা— আমাদের জাতীয় পতাকায় তিনটি রং আছে।
মা— বিমলা তার মায়ের কোনো কথা অবজ্ঞা করে না।
দেশ— সুরেশবাবু দেশ থেকে কাল ফিরেছেন।
মুক্তি— পাখিরা খাঁচা থেকে সর্বদাই মুক্তি চায়।
ব্যায়াম— প্রতিদিন সকালবেলা ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে।
৬। একটি, দুটি, তিনটি, চারটি, পাঁচটি, ছয়টি শব্দের বাক্য ‘মাস্টারদা’ রচনাংশ থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো : রাশভারী। (একটি শব্দের বাক্য)
উত্তরঃ
সাংঘাতিক কাণ্ড। (দুটি শব্দের বাক্য)
দেশ আমাদের মা। (তিনটি শব্দের বাক্য)
মাস্টারদা কথা বলেন কম। (চারটি শব্দের বাক্য)
তাঁর প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। (পাঁচটি শব্দের বাক্য)
আগুন লাগিয়েছে টেলিফোন আর টেলিগ্রাফের অফিসেও। (ছয়টি শব্দের বাক্য)
৭। চট্টগ্রামের ছেলেরা আগুন লাগিয়েছিল টেলিফোন টেলিগ্রাফের অফিসে। কথা বলবার সময় নীচে দাগ দেওয়া শব্দগুলোর মতো এমন অনেক বিদেশি শব্দই আমরা ব্যবহার করি। একেবারেই ইংরেজি শব্দ বলে চিনতে পারছ, এমন আর কী কী শব্দ খুঁজে পাও মাস্টারদার কাহিনিতে ?
উত্তরঃ মাস্টারদার কাহিনিতে যে যে ইংরেজি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলি হল – ট্রেন, লাইন, পুলিশ, ইউনিয়ান জ্যাক, নোটিশ, রাইফেল, শার্ট, জেল।
৮। ‘মাস্টারদা’ শব্দটার মধ্যে একটা বিদেশি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একটা বাংলা শব্দ :
মাস্টার + দা (দা) = মাস্টারদা। এইরকমই আর একটি শব্দ, ধরো মাস্টার + মশাই (মশাই) = মাস্টার মশাই। এইরকম শব্দ ভূমি আর কটি লিখতে পারবে ?
উত্তরঃ হেড + মাস্টার– হেডমাস্টার, হেড + পন্ডিত– হেডপন্ডিত, ডাক্তার + বাবু– ডাক্তারবাবু, হাফ + ছুটি– হাফছুটি, ক্লাব + ঘর– ক্লাবঘর, ফুল + হাতা– ফুলহাতা, নোট + বই– নোটবই।
৯. বিদেশি শব্দের সঙ্গে বাংলা শব্দ যুক্ত হয়নি, কিন্তু দুটো শব্দ মিলেমিশে একটাই কথা তৈরি করেছে, এমন কিছু কথা রয়েছে নীচে, এইসব কথাগুলো থেকে শব্দ দুটোকে আলাদা করে লেখো :
উত্তরঃ গোলাবারুদ– গোলা, বারুদ।
খেলাধুলো– খেলা, ধুলো।
রাজ্যপাট– রাজ্য, পাট।
ভারতমাতা– ভারত, মাতা।
শাসনমুক্ত– শাসন, মুক্ত।
ইংরেজদানব– ইংরেজ, দানব।
১০। ‘মরণপণ’ কথাটার মধ্যে যে দুটো শব্দ আছে, তার শেষের শব্দ ‘পণ’। ছোটো দলে আগে নিজেরা আলোচনা করে দেখো, শেষে ‘পণ’ যোগ করে আর কী কী শব্দ লিখতে পারবে ?
উত্তরঃ শব্দের শেষে ‘পণ’ যোগ করে শব্দ তৈরি— জীবনপণ, বরপণ, প্রাণপণ, মুক্তিপণ, কন্যাপণ।
১১. ‘খেলাধুলো’ ‘নরম-সরম’ এইরকম শব্দ রয়েছে মাস্টারদা’র গল্পে। এখানে একটা শব্দেই জড়ানো রয়েছে দুটো শব্দ, প্রথম শব্দটার মানেই যেখানে আসল, আর তার সঙ্গে মিলিয়ে এসেছে দ্বিতীয় শব্দটা, সব সময় যার তেমন মানে নেই। এই ধরনের আর ক-টি শব্দ মাস্টারদার কাহিনিতে খুঁজে পাও, নিজেরা বার করো।
কোনো কোনো সময় আবার এইরকম দুটো শব্দের মানেই এক, ‘হাঁটা-চলা’ বা ‘রাইফেল-বন্দুক’ যেমন। এরকম কয়েকটি শব্দ নিজে লেখো।
উত্তরঃ প্রথম ধরনের শব্দ– খাবার-দাবার, রকম-সকম, সাদাসিধে, চুপচাপ।
দ্বিতীয় ধরনের শব্দ– গোলাবারুদ, হাসিখুশি, যেখানে-সেখানে, নিয়মকানুন, মাঠ-ময়দান, মেজবাডড়ি, লোকজন।
১২। মাস্টারদা হাসিমুখে মেলামেশা করতেন ছোটো-বড়ো সবার সঙ্গে।
এইরকম জোড়া শব্দ, যার একটির মানে অন্যটির বিপরীত, কয়েকটি লেখো :
উত্তরঃ ভালো-মন্দ, রাত-দিন, সাদা-কালো, ঠিক-বেঠিক, যাওয়া-আসা, উঁচু-নীচু, কম-বেশি, সুখ-দুঃখ।
১৩। নীচে দেওয়া শব্দগুলি থেকে কোনটা বিশেষ্য কোনটা বিশেষণ খুঁজে নিয়ে লেখো : (একটি দেখানো রইল তোমার জন্য) বিশেষণ– শক্তিশালী।
[শক্তিশালী, সম্পদ, উদ্ধৃত, রাশভারী, শক্তি, সম্মান, স্বাধীন, অত্যাচার, শাসন, অনুরোধ]
উত্তরঃ বিশেষ্য— সম্পদ, শক্তি, সম্মান, অত্যাচার, অনুরোধ, শাসন।
বিশেষণ— শক্তিশালী, স্বাধীন, উদ্ধৃত, রাশভারী।
১৪। নীচের বিশেষ্য শব্দগুলি বিশেষণে কালে ফেলো। বিশেষণ শব্দগুলো পাৰে শব্দবৃড়িতে। খুঁজে নিয়ে ঠিক শব্দের পাশে বসাও।
বিশেষ্য | বিশেষণ | বিশেষ্য | বিশেষণ |
অত্যাচার | অত্যাচারিত | মুক্তি | মুক্ত |
ভক্তি | ভক্ত | ত্যাগ | ত্যক্ত |
শাসন | শাসিত | স্পর্ধা | স্পর্ধিত |
সম্মান | সম্মানিত | ঘোষণা | ঘোষিত |
সুখ | সুখী | তেজস্বিতা | তেজস্বী |
প্রতিবাদ | প্রতিবাদী |
১৫। নীচের বিশেষণ শব্দগুলি বিশেষ্যে বদলাও। বিশেষ্য শব্দগুলি পাৰে শব্দঝুড়িতে। খুঁজে নিয়ে ঠিক শব্দের পাশে বসাওঃ
উত্তরঃ
বিশেষণ | বিশেষ্য | বিশেষণ | বিশেষ্য |
গম্ভীর | গাম্ভীর্য | রঙিন | রং |
উদ্ধৃত | উদ্ধৃতি | বিদেশি | বিদেশ |
মনীষী | মনীষা |
১৬। নীচের বাক্যগুলির দিকে তাকিয়ে দেখো তো কোন কোন শব্দে তোমার মনে হচ্ছে কাজ শেষ হয়ে গেছে, আর কোন্ কোন্ শব্দে তোমার মনে হচ্ছে কাজ এখনো শেষ হয়নি, সেগুলো আলাদা করে লেখো :
১৬.১ এদেশে রাজত্ব করতে তাদের স্পর্ধা একেবারে আকাশ ছুঁয়েছে।
উত্তরঃ ছুঁয়েছে— কাজ শেষ হয়ে গেছে।
১৬.২ উমাতারা স্কুলের ছাত্ররা সেদিন অঙ্কের শিক্ষককে … অন্য নজরে দেখলেও, বুঝতেই পারেনি এই মানুষটি … ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়বেন।
উত্তরঃ দেখলেও– কাজ এখনও শেষ হয়নি।
পারেনি, লড়বেন– কাজ শেষ হয়ে গেছে।
১৬.৩ তাদের মনে হয়েছে, ভারতবর্ষের একটা জায়গায় যুদ্ধ করে যদি ইংরেজদের তাড়ানো যায়, সারা দেশ জেগে উঠৰে।
উত্তরঃ করে, জেগে— কাজ এখনও শেষ হয়নি।
হয়েছে, উঠবে— কাজ শেষ হয়ে গেছে।
১৭. উমাতারা হাইস্কুলের অঙ্ক-শিক্ষককে তোমার কেমন লাগল, এইভাবে লেখো :
উমাতারা হাইস্কুলের অঙ্ক-শিক্ষকের নাম ____________ ____________। সাদাসিধে মানুষটিকে দেখে সব সময়ে বোঝা যেত না তিনি কতখানি ____________। তাঁর ছাত্ররা তাকে ____________ ____________ ____________। তিনি ভালোবাসতেন রবীন্দ্রনাথের ____________, ____________। তিনি চেয়েছিলেন ____________ ____________ ____________ ____________। এই মানুষটিকে আমার ____________ ____________।
উত্তরঃ উমাতারা হাইস্কুলের অঙ্ক-শিক্ষকের নাম সূর্য সেন। সাদাসিধে মানুষটিকে দেখে সব সময়ে বোঝা যেত না তিনি কতখানি শক্তিশালী। তাঁর ছাত্ররা তাঁকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসতো । তিনি ভালোবাসতেন নিজের দেশকে। তিনি চেয়েছিলেন তাকে স্বাধীন করে তুলতে। এই মানুষটিকে আমার প্রণাম জানাই।
১৮. উমাতারা হাইস্কুলের অঙ্ক-শিক্ষকটির প্রিয় কবি কে ছিলেন ? এ গল্প থেকে তা কেমন করে জানতে পারো ?
উত্তরঃ উমাতারা হাইস্কুলে অঙ্ক শিক্ষক মাস্টারদা সূর্য সেনের প্রিয় কবি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এতটাই প্রিয় ছিলেন যে রবীন্দ্রনাথকে তিনি ‘কবিসম্রাট’ বলতেন। রবীন্দ্রনাথের বহু কবিতা তাঁর মুখস্থ ছিল। জালালাবাদের পাহাড়ে লড়াইয়ের আগেও তিনি রবীন্দ্রনাথের গান ও কবিতা শুনেছেন। জেলের মধ্যে বসে তিনি রবীন্দ্রনাথের কবিতা পড়তেন। চিঠিতে রবীন্দ্রনাথের লাইন উদ্ধৃত করতেন। সঙ্গীসাথিদের সকলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা পড়তে অনুরোধ করতেন। এক কথায় তাঁর মতে রবীন্দ্রনাথ আমাদের ভারতবর্ষের এক মস্ত বড়ো সম্পদ। এ থেকেই বোঝা যায় মাস্টারদার কাছে প্রিয় কবি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
১৯। কোন কবির কবিতা পড়তে তোমার খুব ভালো লাগে ? তাঁর যে কবিতাটি তোমার সবচেয়ে পছন্দ, সেটির দুটি লাইন লিখতে পারো।
উত্তরঃ কবি সুকুমার রায়ের ‘পাকাপাকি’ কবিতাটি আমার সবচেয়ে পছন্দ কবিতাটির কয়েকটি পংক্তি হল।—
আম পাকে বৈশাখে, কুল পাকে ফাগুনে,
কাঁচা ইট পাকা হয় পোড়ালে তা আগুনে।
রোদে জলে টিকে রঙ পাকা কই তাহারে।
ফলারটি পাকা হয় লুচি দই আহারে।
হাত পাকে লিখে লিখে, চুল পাকে বয়সে,
জ্যাঠামিতে পাকা ছেলে বেশি কথা কয় সে।
২০. পাঠ্য অংশটি পড়ে নিজে লেখো
২০.১ আগুন লাগিয়েছে টেলিফোন আর টেলিগ্রাফের অফিসেও। কারা এমন করেছিল ? কেন করেছিল ?
উত্তরঃ চট্টগ্রাম শহরের অল্পবয়সি কিছু ছেলে টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ অফিসে আগুন লাগিয়েছিল।
ছেলেদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল ভারতকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করা। আর এই কাজে তাদের প্রেরণা জুগিয়েছিলেন মাস্টারদা। ছেলেরা বুঝেছিল ভারতবাসী দিনের পর দিন পরিশ্রম করবে আর তার ফল ভোগ করবে ইংরেজরা -এ আর কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই সর্বপ্রথম তারা চট্টগ্রামে ইংরেজদের গোলাবারুদের ভাণ্ডারটি দখল করেছিল। টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ অফিসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল।
২০.২ ব্রিটিশ-শাসিত ভারতবর্ষে কোন্ পতাকা উড়ত ? তার বদলে বিপ্লবীরা কেমন পতাকা ওড়ালেন ?
উত্তরঃ ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষে ব্রিটিশ পতাকা– ইউনিয়ন জ্যাক উড়ত।
তার বদলে বিপ্লবীরা সেখানে স্বাধীন ভারতের পতাকা ওড়ালেন।
২০.৩ ইংরেজ আমলে ভারতীয়দের প্রতি ইংরেজরা কেমন আচরণ করত ?
উত্তরঃ ইংরেজ-আমলে ভারতীয়দের প্রতি ইংরেজরা অসহনীয় অন্যায় অত্যাচার করত। ভারতবাসীরা দিনের পর দিন যে পরিশ্রম করত তার সবটুকু ফল ভোগ করত ইংরেজরা। প্রতিবাদ করলেই অকথ্য অত্যাচার করত। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে সাদা চামড়ার লোক ছাড়া কারও প্রবেশের অনুমতি ছিল না। রেস্তোরাঁর গায়ে নোটিশ ঝোলানো থাকত– কালো চামড়ার লোক এবং কুকুরের প্রবেশ নিষেধ।
২০.৪ ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষ কীভাবে মাস্টারদার নেতৃত্বে রুখে দাঁড়িয়েছিল ?
উত্তরঃ মাস্টারদার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম শহরের অল্পবয়সি কিছু ছেলে ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল । মাস্টারদার কথামতো ছেলেরা চট্টগ্রামের অস্ত্রাগারে, টেলিফোন এবং টেলিগ্রাফের অফিসে আগুন লাগিয়েছে, রেলের লাইন ভেঙে দিয়েছে, মালগাড়ি উলটে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এভাবে ইংরেজদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল।
২০.৫ মহান বিপ্লবীদের ছবি সংগ্রহ করো, খাতায় লাগাও, সেখানে তাদের জীবনকথা জেনে নিয়ে সংক্ষেপে লিখে রাখো।
উত্তরঃ শিক্ষক-শিক্ষিকার সহায়তায় নিজেরা করো।
◆ অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর : মাস্টারদা পঞ্চম শ্রেণির বাংলা | Hate Kolome Question Answer Mastarda Class 5 Bengali wbbse
ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো : একটি প্রশ্নের মান- ১
১. মাস্টারদা জেলে বসে কবিতা পড়তেন— (ক) নজরুলের, (খ) রবীন্দ্রনাথের, (গ) সুকুমার রায়ের, (ঘ) শঙ্খ ঘোষ-এর কবিতা।
উত্তরঃ মাস্টারদা জেলে কবিতা পড়তেন রবীন্দ্রনাথের কবিতা।
২. মাস্টারদা যে স্কুলের শিক্ষক ছিলেন (খড়িবাড়ি / তারণচন্দ্র / উমাতারা / চট্টগ্রাম) হাইস্কুল।
উত্তরঃ মাস্টারদা উমাতারা হাইস্কুলে পড়াতেন।
৩. মাস্টারদা কোন বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন ? (ক) বিজ্ঞান, (খ) বাংলা, (গ) অঙ্ক, (ঘ) ভূগোল।
উত্তরঃ মাস্টারদা অঙ্ক বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন।
৪. মাস্টারদার আদর্শ পুরুষ ছিলেন— (ক) বিদ্যাসাগর, (খ) রবীন্দ্রনাথ, (গ) রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ, (ঘ) গান্ধিজি।
উত্তরঃ মাস্টারদার আদর্শ পুরুষ ছিলেন রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ।
৫. সূর্যসেনের প্রিয় কবি ছিলেন (নজরুল / সুকান্ত / রবীন্দ্রনাথ / জীবনানন্দ)।
উত্তরঃ সূর্যসেনের প্রিয় কবি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
৬. রবীন্দ্রনাথকে সূর্যসেন বলতেন (কবি সম্রাট / কবিগুরু / কবি শেখর / কবিরাজ)।
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথকে সূর্যসেন বলতেন কবি সম্রাট।
◆ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর : প্রতিটি প্রশ্নের মান- ১
১. ‘মাস্টারদা’ নামক গদ্যাংশটির লেখক কে ছিলেন ?
উত্তরঃ ‘মাস্টারদা’ নামক গদ্যাংশটির লেখক ছিলেন অশোককুমার মুখোপাধ্যায়।
২. ‘মাস্টারদা’-র প্রকৃত নাম কী ছিল ?
উত্তরঃ ‘মাস্টারদা’-র প্রকৃত নাম ছিল সূর্যকুমার সেন।
৩. মাস্টারদার নেতৃত্বে কারা ইংরেজ পুলিশের সঙ্গে লড়াই করেছিল ?
উত্তরঃ মাস্টারদার নেতৃত্বে চট্টগ্রামের অল্পবয়সি কিছু ছেলে ইংরেজ পুলিশের সঙ্গে লড়াই করেছিল।
৪. রেস্তোরাঁর গায়ে নোটিশে কী লেখা থাকত ?
উত্তরঃ রেস্তোরাঁর গায়ে নোটিশে লেখা থাকত- কালো চামড়ার লোক এবং কুকুরের প্রবেশ নিষেধ।
৫. মাস্টারদা কোন্ স্কুলের শিক্ষক ছিলেন?
উত্তরঃ মাস্টারদা উমাতারা হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন।
৬. মাস্টারদা কোন্ বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন ?
উত্তরঃ মাস্টারদা অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন।
৭. মাস্টারদার আদর্শ পুরুষ কারা ছিলেন ?
উত্তরঃ মাস্টারদার আদর্শ পুরুষ ছিলেন রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দ।
৮. মাস্টারদা কেমন পোশাক পরতেন?
উত্তরঃ মাস্টারদা খুবই সাদাসিধে পোশাক পরতেন— ধুতি, পাঞ্জাবি বা ধুতি-শার্ট।
৯. সূর্য সেনের প্রিয় কবি কে ছিলেন?
উত্তরঃ সূর্য সেনের প্রিয় কবি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
১০. ছাত্ররা কাকে ‘কবিসম্রাট’ বলত ?
উত্তরঃ সূর্য সেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘কবিসম্রাট’ বলে সম্বোধন করতেন।
◆ দু একটি বাক্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান- ২
১. ইউনিয়ান জ্যাক কাকে বলা হত ?
উত্তরঃ ব্রিটিশ অর্থাৎ এদেশ শাসনকারী বণিক ইংরেজদের দেশের জাতীয় পতাকাকে বলা হত ইউনিয়ান জ্যাক।
২. কোথাও কোথাও কাদের কোনো অনুমতি নেই ?
উত্তরঃ কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে সাদা চামড়ার লোক ছাড়া কোনো ভারতবাসীর ঢোকার অনুমতি নেই।
৩. রেস্তোরাঁয় কীসের নোটিশ ঝুলত ?
উত্তরঃ রেস্তোরাঁর গায়ে নোটিশ ঝুলছে— কালো চামড়ার লোক এবং কুকুরের প্রবেশ নিষেধ।
৪. মাস্টারদার পোশাক-আশাক কীরকম ?
উত্তরঃ মাস্টারদার পোশাক খুবই সাদাসিধে। বাঙালির ধুতি-পাঞ্জাবি বা ধুতি-শার্ট, রঙিন জামা পরেন না।
৫. মাস্টারদার কথামতো তাঁর ছাত্ররা ভোর চারটের সময় কী করত ?
উত্তরঃ মাস্টারদার কথামতো তাঁর ছাত্ররা প্রতিদিন ভোর চারটের সময় ঘুম থেকে উঠে ময়দানে গিয়ে ব্যায়াম করত।
৬. রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে মাস্টারদা বলতেন ‘কবিসম্রাট রবীন্দ্রনাথ’-এ থেকে তাঁর কোন্ মনোভাবের পরিচয় পাও ?
উত্তরঃ মাস্টারদার প্রিয় কবি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তিনি জালালাবাদের পাহাড়ে লড়াইয়ের আগেও তাঁর কবিতা পড়েছেন, ‘তাঁর গান শুনেছেন। জেলে বসেও তিনি রবীন্দ্র-কবিতা পড়তেন। চিঠিতেও তিনি রবীন্দ্র-কবিতার উদ্ধৃতি ব্যবহার করতেন।
৭. অশোককুমার মুখোপাধ্যায় কাদের নিয়ে লেখালেখি করেন ? তাঁর একটি জীবনীনির্ভর উপন্যাসের নাম লেখো। ১+১
উত্তরঃ অশোককুমার মুখোপাধ্যায় মূলত স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে লেখালেখি করেন।
তাঁর একটি জীবনীনির্ভর উপন্যাসের নাম হল ‘অগ্নিপুরুষ’।
৮. বিপ্লবীরা কোন্ ‘সাংঘাতিক কাণ্ড’ ঘটিয়েছিল ?
উত্তরঃ বিপ্লবীরা ইংরেজ পুলিশের সঙ্গে লড়াই করে গোলাবারুদের ভান্ডারকে দখল করে নেয়। তারা আগুন লাগিয়ে দেয় অস্ত্রাগারে, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফের অফিসে। দু-জায়গায় রেলের লাইনও ভেঙে ফেলেছিল তারা।
৯. “তারা মনের সুখে রাজ্যপাট চালিয়েছে এতদিন।”-এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে? তারা কতদিন ভারতবর্ষে রাজ্যপাট চালিয়েছিল ? (১+১)
উত্তরঃ প্রশ্নে দেওয়া অংশটিতে ইংরেজদের কথা বলা হয়েছে।
তারা দীর্ঘ দুশো বছর ভারতবর্ষে রাজ্যপাট চালিয়েছিল।
১০. “তাঁকে সবাই মাস্টারদা বলে ডাকে।” কাকে সবাই ‘মাস্টারদা’ বলে ডাকে ? তিনি কোন্ বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন ? ১+১
উত্তরঃ সূর্যকুমার সেনকে সবাই ‘মাস্টারদা’ বলে ডাকে।
তিনি চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
১১. চট্টগ্রামের ছেলেরা কার নেতৃত্বে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়েছিল ?
উত্তরঃ চট্টগ্রামের ছেলেরা মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়েছিল। তাঁর নির্দেশেই তারা অস্ত্রাগার দখল করে নেয়।
১২. ইংরেজদের কোন পতাকা ছেলেরা পুড়িয়ে দিয়েছিল ?
উত্তরঃ ছেলেরা ইংরেজদের ইউনিয়ন জ্যাক পতাকা পুড়িয়ে দিয়েছিল। তার বদলে স্বাধীন ভারতের পতাকা ওড়ানো হয়।
১৩. সূর্য সেনের পেশা কী ছিল ?
উত্তরঃ সূর্য সেন ছিলেন উমাতারা হাইস্কুলের অঙ্কের শিক্ষক।
◆ কমবেশি ছটি বাক্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
১. সাংঘাতিক কাণ্ড’-মাস্টারদার নেতৃত্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে ‘সাংঘাতিক কাণ্ড’ বলা হয়েছে কেন ?
উত্তরঃ মাস্টারদার নেতৃত্বে ও তাঁর বুদ্ধিমতো চট্টগ্রামের অল্পবয়সি ছেলেরা ইংরেজদের সঙ্গে লড়াই করে। গোলাবারুদের ভাণ্ডারটিকে দখল করে নেয়। আগুন লাগিয়ে দেয় সেই অস্ত্রাগারে, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ অফিসে। ট্রেনে করে শহরে আসার উপায় নেই। দুই জায়গায় ট্রেনের লাইন ভেঙে ফেলে, সেখানে মালগাড়ি উলটে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। চট্টগ্রাম ইংরেজশাসন থেকে মুক্ত হয়, তারা পুড়িয়ে দেয় ইংরেজ পুলিশঘাঁটিতে উড়তে থাকা পতাকা-ইউনিয়ন জ্যাক। সেখানে ওড়ায় স্বাধীন ভারতের পতাকা। এই কারণেই এইসব কাণ্ডকে ‘সাংঘাতিক কাণ্ড’ বলা হয়েছে।
২. “আগুন লাগিয়েছে টেলিফোন আর টেলিগ্রাফের অফিসেও।”-কারা এমন করেছিল ? কেন করেছিল ? ১+২
উত্তরঃ চট্টগ্রাম শহরের বাসিন্দা অল্পবয়সি কিছু ছেলে মাস্টারদার বুদ্ধিমতো এমন কাণ্ড করেছিল।
চট্টগ্রামকে ইংরেজশাসন থেকে মুক্ত করার জন্য তারা ইংরেজদের গোলাবারুদের ভাণ্ডারটি দখল করে নিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল, টেলিফোন আর টেলিগ্রাফের অফিসেও আগুন দিয়েছিল, দু-জায়গায় রেললাইন ভেঙে ফেলেছিল।
৩. “এদেশে রাজত্ব করতে এসে তাদের স্পর্ধা একেবারে আকাশ ছুঁয়েছে।”-‘তাদের’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের স্পর্ধা কীভাবে আকাশ ছুঁয়েছিল ? ১+২
উত্তরঃ এখানে ‘তাদের’ বলতে সাদা চামড়ার ইংরেজদের কথা বলা হয়েছে।
ব্রিটিশ আমলে কোনো প্রতিষ্ঠানে সাদা চামড়ার ইংরেজ ছাড়া অন্য কারো প্রবেশ নিষেধ ছিল। রেস্তোরাঁর গায়ে নোটিশ ঝোলানো থাকত। তাতে লেখা থাকত কালো চামড়ার লোক ও কুকুরের প্রবেশ নিষেধ। ভারতীয়দের উপর তারা অকথ্য অত্যাচার চালাত। এইভাবে তাদের স্পর্ধা আকাশ ছুঁয়েছিল।
৪. “রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দই ছিলেন তাঁর আদর্শ পুরুষ।”— কেন ওই দুজন মনীষীর প্রতি তিনি আকৃষ্ট হয়েছিলেন ? বাংলার আর-একজন মনীষীর নাম লেখো। ২+১
উত্তরঃ রামকৃষ্ণ এবং বিবেকানন্দের ভক্তি, ত্যাগ, তেজস্বিতা মাস্টারদাকে আকৃষ্ট করেছিল। তিনি ছেলেদেরও এই দুই মনীষীর আদর্শে গড়তে চেয়েছিলেন।
বাংলার আর-একজন মনীষী হলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
৫. ইংরেজরা কীভাবে ভারতবাসীকে অত্যাচার করত ?
উত্তরঃ ইংরেজরা এদেশের মানুষের পরিশ্রমের ফল নিজেরা ভোগ করত। প্রতিবাদ করলে তাদের উপর কঠোর শাস্তি দিত। শ্বেতাঙ্গদের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখত। কিছু প্রতিষ্ঠানে ভারতীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। রেস্তোরাঁর গায়ে লেখা থাকত– “কালো চামড়ার লোক এবং কুকুরের প্রবেশ নিষেধ।” এই অন্যায়ের প্রতিবাদে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
৬. সূর্য সেন ছাত্রদের কী কী শিখিয়েছিলেন ?
উত্তরঃ সূর্য সেন ছাত্রদের খেলাধুলো শিখিয়েছিলেন। তিনি বন্দুক চালানো শেখাতেন। ভোরবেলায় ব্যায়াম করতে পাঠাতেন। সংস্কৃত স্তোত্র আবৃত্তি করাতেন।
রামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে ছাত্রদের গড়তে চাইতেন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য।
৭. মাস্টারদার স্বভাব কেমন ছিল ?
উত্তরঃ মাস্টারদা কম কথা বলতেন। তিনি সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন। চুপচাপ হাঁটতেন, এমনকি খড়ম পরলেও আওয়াজ হত না। ছোটো-বড়ো সবার সঙ্গে সহজভাবে মিশতেন। তিনি ঠকতে চাইতেন না, চোখের দিকে তাকালে কিছু লুকোনো যেত না। তাঁর মধ্যে গাম্ভীর্য আর মমতা দুটোই ছিল।
৮. সূর্য সেন কোন মনীষীদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন ?
উত্তরঃ সূর্য সেন ছিলেন রামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত। তাঁরা তাঁর আদর্শ পুরুষ ছিলেন। তাঁদের ভক্তি, ত্যাগ ও তেজস্বিতা থেকে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
ছাত্রদেরও তিনি সেই আদর্শে গড়ে তুলতে চাইতেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা ও গান ভালোবাসতেন। তাঁর প্রিয় কবিকে তিনি ‘কবিসম্রাট’ বলে ডাকতেন।
৯. কেন সূর্য সেনকে সবাই মাস্টারদা বলত ?
উত্তরঃ সূর্য সেন ছিলেন উমাতারা হাইস্কুলের শিক্ষক। তিনি ছাত্রদের শুধু পড়াতেন না, জীবনের শিক্ষা দিতেন। দেশের মুক্তির জন্য তাঁদের তৈরি করতেন। ছাত্ররা তাঁকে সম্মান ও ভালোবাসায় ‘মাস্টারদা’ বলে ডাকত।
তিনি বন্ধুসম ছিলেন, তবু নেতা হিসেবে ছাত্রদের প্রেরণা দিতেন। তাই এই নামটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
১০. কেন বলা হয় চট্টগ্রামের ছেলেরা রূপকথার রাজপুত্রদের মতো লড়েছিল ?
উত্তরঃ কারণ তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছিল। ইংরেজ শাসকদের দমননীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল। অস্ত্রাগার দখল ও রেললাইন ভেঙে ইংরেজদের পথ রুদ্ধ করেছিল। তাদের সাহস কল্পকাহিনির মতো অবিশ্বাস্য ছিল। দেশমাতৃকাকে মুক্ত করতে তারা জীবন বাজি রেখেছিল। তাই বলা হয় তারা রূপকথার রাজপুত্রদের মতো লড়েছিল।
◆ রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর : প্রতিটি প্রশ্নের মান- ৫
১. মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের ছেলের দল কীভাবে চট্টগ্রামকে ইংরেজশাসন থেকে মুক্ত করেছিল?
উত্তরঃ অশোককুমার মুখোপাধ্যায়ের লেখা ‘মাস্টারদা’ গল্পে বর্ণিত হয়েছে কীভাবে সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের তরুণরা ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অসাধারণ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিল। মাস্টারদার পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ইংরেজ পুলিশের গোলাবারুদের ভান্ডার দখল করে নেয় এবং সেখানে আগুন লাগিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, তারা টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ অফিসেও অগ্নিসংযোগ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলে। ট্রেন চলাচল রোধ করতে ছেলেরা দু’জায়গায় রেলের লাইন ভেঙে ফেলে ও একটি মালগাড়ি উল্টে দেয়। এর ফলে ইংরেজদের সাহায্য আসা বন্ধ হয়ে যায়। ইংরেজ পুলিশ ঘাঁটিতে উড়তে থাকা ব্রিটিশ পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে তারা স্বাধীন ভারতের পতাকা ওড়ায়। তাদের এই অভূতপূর্ব আন্দোলনের ফলে চট্টগ্রাম তিন দিনের জন্য হলেও ব্রিটিশ শাসনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। এ আন্দোলন শুধু ইংরেজদের বড়ো ধাক্কা দিয়েছিল না, সারা দেশেও নতুন করে স্বাধীনতার লড়াইয়ের সাহস জুগিয়েছিল।
২. “এমন অন্যায় বেশিদিন চলে না। প্রতিবাদ হবেই।”—এই উক্তিটি কোন্ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে ? লেখকের নাম কী ? কারা, কীভাবে প্রতিবাদ করেছিল ? এর গুরু কে ছিলেন ? (১+১+২+১)
উত্তরঃ এই উক্তিটি ‘মাস্টারদা’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
গল্পটির লেখকের নাম অশোককুমার মুখোপাধ্যায়।
চট্টগ্রামের মানুষ ইংরেজের অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছিল। মাস্টারদার নেতৃত্বে চট্টগ্রামের অল্পবয়সি ছেলেরা ইংরেজ পুলিশের সঙ্গে লড়াই করে তাদের অস্ত্রাগার দখল করে তাতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল টেলিফোন এবং টেলিগ্রাফের অফিসে আর ট্রেন যাতে না আসতে পারে তার জন্য রেললাইন ফেলেছিল ভেঙে। এভাবেই তারা তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
এর গুরু ছিলেন উমাতারা হাইস্কুলের অঙ্কের শিক্ষক সূর্যকুমার সেন, যাকে আমরা চিনি ‘মাস্টারদা’ নামে।
৩. ‘রবীন্দ্রনাথ আমাদের ভারতবর্ষের এক মস্ত বড়ো সম্পদ।’- সাথিদের এ কথা বলতেন মাস্টারদা সূর্য সেন। কাব্য সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের অবদান সম্পর্কে বন্ধুদের তুমি কী বলবে, সে সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ লেখো।
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের দেশের এক অমূল্য সম্পদ। তিনি ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছোটবেলা থেকেই ঠাকুরবাড়ির পরিবেশে তিনি নানা বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করেন। বাংলা কাব্য, গল্প, নাটক, প্রবন্ধ ও সংগীতে তাঁর অসাধারণ অবদান রয়েছে। ১৯১৩ সালে তাঁর কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলি তাঁকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করে, যা বাঙালির গৌরব। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে সোনার তরী, মানসী, চিত্রা, চৈতালি, খেয়া, নৈবেদ্য প্রভৃতি। তিনি বহু ছোটগল্প, নাটক ও উপন্যাস রচনা করেছেন। শুধু সাহিত্যই নয়, সংগীতেও তাঁর অবদান অমর। ভারতের জাতীয় সংগীত জনগণমন এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা তাঁরই সৃষ্টি। তাই রবীন্দ্রনাথ শুধু কবি নন, তিনি বিশ্বকবি। ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট তিনি পরলোকগমন করেন, কিন্তু তাঁর সাহিত্য আজও আমাদের পথপ্রদর্শক হয়ে আছে।
৪. চট্টগ্রামের ছেলেরা কীভাবে ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল ?
উত্তরঃ চট্টগ্রামের কিছু অল্পবয়সি তরুণ মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করেছিল। তারা প্রথমেই পুলিশের অস্ত্রাগার দখল করে এবং গোলাবারুদের ভান্ডারে আগুন লাগায়। একই সঙ্গে টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ অফিসে অগ্নিসংযোগ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে দেয়। রেলের লাইন কেটে মালগাড়ি উল্টে দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়, ফলে ইংরেজ শাসকরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এরপর তারা ঘোষণা করে যে চট্টগ্রাম এখন ইংরেজশাসন মুক্ত। ইংরেজদের পতাকা ইউনিয়ন জ্যাক নামিয়ে স্বাধীন ভারতের পতাকা ওড়ানো হয়। এত বড় আঘাত ইংরেজরা আগে খুব কমই খেয়েছিল। এ আন্দোলন সারা দেশকে আন্দোলিত করেছিল। মানুষ বুঝতে পেরেছিল, ঐক্যবদ্ধ সাহস থাকলে ইংরেজদের পরাজিত করা সম্ভব। তাই চট্টগ্রামের এই বিপ্লব ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে ওঠে।
৫. মাস্টারদা সূর্য সেনকে কেমন মানুষ হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে ?
উত্তরঃ সূর্য সেন ছিলেন অতি সাধারণ চেহারার, সাদাসিধে জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষ। ধুতি-পাঞ্জাবি বা ধুতি-শার্ট পরেই তিনি থাকতেন। বাইরে থেকে তাঁকে দেখে কেউ বুঝতে পারত না তিনি এত বড় নেতা। তিনি কম কথা বলতেন, নীরবে চলাফেরা করতেন, এমনকি খড়ম পরলেও তাঁর হাঁটার আওয়াজ শোনা যেত না। কিন্তু তাঁর চোখে ছিল দৃঢ়তা ও সত্যের দীপ্তি, যা দেখে ছাত্ররা মুগ্ধ হত। তিনি ছিলেন বন্ধুর মতো সহজ-সাবলীল, কিন্তু ভেতরে ভেতরে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এক মানুষ। ছাত্রদের দেশপ্রেম শেখানোর জন্য ভোরে ব্যায়াম, স্তোত্রপাঠ, খেলাধুলো ও বন্দুক চালানো শেখাতেন। রামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন তাঁর আদর্শ পুরুষ। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন তাঁর প্রিয় কবি, যাঁকে তিনি ‘কবিসম্রাট’ বলতেন। এ সব কিছুর মধ্যেই ফুটে ওঠে, সাধারণ পোশাকে আচ্ছাদিত হলেও তিনি ছিলেন অসাধারণ এক দেশনেতা, যাকে সবাই শ্রদ্ধায় ডাকত মাস্টারদা।
৬. ভারতবর্ষের স্বাধীনতার সংগ্রামে মাস্টারদার অবদান কী ছিল ?
উত্তরঃ মাস্টারদা সূর্য সেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি শুধু অঙ্কের শিক্ষকই ছিলেন না, ছাত্রদের মনে দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলেছিলেন। তরুণদের তিনি সংগঠিত করেছিলেন এবং যুদ্ধের জন্য তৈরি করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে চট্টগ্রামের বিপ্লবীরা অস্ত্রাগার দখল করে, ইংরেজ পতাকা নামিয়ে স্বাধীন ভারতের পতাকা উত্তোলন করে। তিন দিনের জন্য হলেও চট্টগ্রাম ইংরেজ শাসনমুক্ত হয়। এ ঘটনা গোটা ভারতবর্ষকে সাহস জুগিয়েছিল। তিনি প্রমাণ করেছিলেন, ঐক্য ও ত্যাগের শক্তি থাকলে ব্রিটিশ শাসন দুর্বল হয়ে পড়তে বাধ্য। নিজের জীবন উৎসর্গ করে তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন প্রকৃত দেশপ্রেম কাকে বলে। তাঁর সংগ্রাম শুধু চট্টগ্রাম নয়, সমগ্র ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রেরণা হয়ে ওঠে। তাই সূর্য সেনকে আজও মহান বিপ্লবী হিসেবে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়।
📌 আরো দেখুনঃ
📌পঞ্চম শ্রেণি ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
📌পঞ্চম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here
📌পঞ্চম শ্রেণি ইংরেজি প্রশ্নোত্তর Click Here