লৌকিক সাহিত্যের নানা দিক প্রশ্ন উত্তর দ্বিতীয় সেমিস্টার একাদশ শ্রেণির বাংলা | Loukik Sahityar Nana Dik Question Answer 2nd semester wbbse

লৌকিক সাহিত্যের নানা দিক প্রশ্ন উত্তর দ্বিতীয় সেমিস্টার একাদশ শ্রেণির বাংলা | Loukik Sahityar Nana Dik Question Answer 2nd semester wbbse

সেমিস্টার – II

বাঙালির শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি (প্রথম পর্যায়)

📌 একাদশ শ্রেণি প্রশ্নপত্র সেমি-২ Click Here

📌 একাদশ শ্রেণি প্রশ্নোত্তর বাংলা Click Here

📌 একাদশ শ্রেণি সিলেবাস বাংলা Click Here

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর : লৌকিক সাহিত্যের নানা দিক দ্বিতীয় সেমিস্টার একাদশ শ্রেণি বাংলা | Loukik Sahityar Nana Dik Essay Type Question Answer 2nd Semester Class 11 Bengali wbchse

অনধিক একশো পঞ্চাশ শব্দে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান- ৫

১. ছড়া কাকে বলে ? ছড়ার বৈশিষ্ট্য গুলি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ ছড়া হল বাংলা সাহিত্যের একটি লৌকিক ও ছন্দময় রূপ, যা সাধারণত সহজ ভাষায় রচিত হয় এবং লোকমুখে প্রচলিত। এটি আনন্দদায়ক, কৌতুকপূর্ণ ও শিক্ষামূলক হতে পারে। ছড়ার মূল বৈশিষ্ট্য হলো ছন্দ ও অন্ত্যমিল, যা একে গীতিময় করে তোলে। এটি মূলত শিশু-কিশোরদের জন্য রচিত হলেও সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটায়। অর্থাৎ মুখে মুখে রচিত অন্ত্যমিল যুক্ত ছোট আকারের গদ্যকে সাধারণত বলা হয় ছড়া। এগুলি মূলত ২,৪,৬,৮ চরণে নির্মিত।

∆ ছড়ার বৈশিষ্ট্য—

• ছন্দ ও অন্ত্যমিল : ছড়ার প্রধান আকর্ষণ হলো এর ছন্দ ও অন্ত্যমিল, যা সহজেই মুখস্থ করা যায়।

• সরল ভাষা : ছড়ার ভাষা সহজ, সোজাসাপ্টা ও সাবলীল হয়, যা ছোটদের জন্য উপযোগী।

• আনন্দদায়ক ও কৌতুকপূর্ণ : ছড়ার মধ্যে হাস্যরস ও কৌতুকের উপাদান থাকে, যা শিশুদের মনোরঞ্জন করে।

• উপদেশমূলক ও শিক্ষামূলক : অনেক ছড়ার মাধ্যমে নীতিকথা, নৈতিকতা ও সাধারণ জ্ঞান শেখানো হয়।

• লোক-সংস্কৃতির প্রতিফলন : ছড়ায় গ্রামবাংলার জীবনধারা, কৃষি, ঋতু ও সমাজব্যবস্থার প্রতিফলন ঘটে।

• খেলার উপযোগী : অনেক ছড়া শিশুরা খেলার সময় গাইতে পারে এবং তা খেলাধুলার নিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকে।

• ধ্বনিগত সৌন্দর্য : ছড়ার মধ্যে অনুপ্রাস, অলংকার ও ধ্বনির আকর্ষণীয় ব্যবহার লক্ষ করা যায়।

• প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রচলিত ছড়া : সাধারণত লোকমুখে প্রচারিত হয় এবং মৌখিকভাবে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে প্রবাহিত হয়।

• ছোট পরিসরে গভীর ভাব প্রকাশ : ছোট ছড়ার মধ্যেই কোনো একটি গভীর বার্তা বা জীবনবোধ তুলে ধরা হয়।

• মৌখিকতা ও গ্রহণযোগ্যতা : ছড়াগুলো সাধারণত মুখে মুখে প্রচারিত হয় এবং সহজে মানুষের মুখস্থ হয়ে যায়।

∆ ছড়ার উদাহরণ—

(i) বর্ণপরিচয়মূলক ছড়া: এ ধরনের ছড়ার মাধ্যমে শিশুদের বাংলা বর্ণমালা শেখানো
হয়। উদাহরণ—

“অ-এ অজগর আসছে তেড়ে
আ-এ আমটি খাবো পেড়ে।”

(ii) হাস্যরসাত্মক ছড়া: এ ছড়াগুলো কৌতুকপূর্ণ ও মজার হয়। উদাহরণ—

“কানার হাটবাজার, কানাইয়ের দোকান, বেচে শুধু বাতাস, তবু দেয় দাম হাঁকান!”

(iii) প্রবাদমূলক ছড়া: এই ছড়াগুলো কোনো নীতিবাক্য বা জীবনের সত্য তুলে ধরে। উদাহরণ—

“যার সব ভালো,
তার শেষ ভালো।”

(iv) ঐতিহ্যবাহী বা ধর্মীয় ছড়া: ধর্মীয় মূল্যবোধ, দেব-দেবী বা ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতিফলন এ ছড়ায় পাওয়া যায়। উদাহরণ—

“হরিধ্বনি হরিধ্বনি, বাজে সারা দেশে!
যদি ভগবান থাকেন সাথে, দুঃখ সব ঘোচে শেষে!”

(v) গ্রাম্যজীবন ও কৃষিভিত্তিক ছড়া: ঋতু পরিবর্তন ও ফসলের চিত্র, কৃষকের জীবন, এ ধরনের ছড়ায় প্রকাশ পায়। উদাহরণ—

“ধান কাটার দিন এল রে ভাই,
খেতের মাঝে নাচে সবাই!
বৃষ্টি হলো, শস্য ফলল,
গরু-মোষের হাসি ফুটল!”

২। ধাঁধা কাকে বলে ? ধাঁধার বৈশিষ্ট্য গুলি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ ধাঁধা হলো ছন্দময়, রহস্যময় ও ইঙ্গিতপূর্ণ প্রশ্ন বা বক্তব্য, যা শুনে বা পড়ে মানুষকে চিন্তা করে তার উত্তর বের করতে হয়। এটি বুদ্ধির পরীক্ষা নেয় এবং কৌতূহল জাগিয়ে তোলে। ধাঁধা হলো বুদ্ধিভিত্তিক একটি সাহিত্যধারা, যেখানে কোনো বস্তু, ব্যক্তি বা ধারণাকে গোপন রেখে ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষায় সেটি প্রকাশ করা হয়। এটি মনের সতর্ক পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। ধাঁধা অনেক সময় ছন্দবদ্ধ হয়ে থাকে এবং এর উত্তর খুঁজতে চিন্তার প্রয়োগ প্রয়োজন হয়।

∆ ধাঁধার বৈশিষ্ট্য—

• প্রচলন : ধাঁধাগুলি লোকমুখে প্রচারিত হয় এবং এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে চলে আসে। যদিও ধাঁধা মুখে মুখে ছড়ায়, তবু বহু প্রাচীন সময় থেকেই এগুলোর লিখিত রূপ পাওয়া যায়।

• স্মৃতি : সহজ ও ছন্দময় হওয়ায় এটি সহজেই মুখস্থ করা যায় এবং বহুদিন ধরে স্মৃতিতে থাকে।

• অস্তিত্ব : ধাঁধার জনপ্রিয়তা ও কার্যকারিতা একে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে টিকিয়ে রাখে।

• সংক্ষিপ্ততা : দীর্ঘ বক্তব্যের পরিবর্তে ধাঁধা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংক্ষিপ্ত ও সহজবোধ্য রূপ নেয়।

• সরস ও চমকপ্রদ : ধাঁধার মধ্যে কৌতূহল ও মজার উপাদান থাকে, যা সমাধান করতে আগ্রহী করে তোলে।

• প্রবাদরূপ : ধাঁধার গঠন অনেক সময় প্রবাদের মতো হয়, যা সমাজে সহজে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।

• চিন্তনের প্রকাশ : ধাঁধাগুলো মানুষের সম্মিলিত বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার প্রতিফলন ঘটায়।

• রহস্যময়তা : ধাঁধার মধ্যে রহস্য থাকে, যা সমাধানের জন্য বুদ্ধির প্রয়োগ প্রয়োজন হয়।

• ইঙ্গিতপূর্ণতা : ধাঁধায় সাধারণত ইশারা বা সংকেত থাকে, যা বুঝতে পারলে সহজেই উত্তর বের করা যায়।

• বাকচাতুর্য ও রূপকতা : ধাঁধায় শব্দ নিয়ে খেলা করা হয়, যেখানে এক বা একাধিক অর্থ গোপন থাকে।

∆ বাংলায় প্রচলিত কয়েকটি ধাঁধা ও উত্তর—

(i) উপরটা গোল, ভিতরটা ফাঁকা,
হাজার লোককে খাওয়ায়, তবু থাকে আঁকা।

উত্তরঃ উনুন।

(ii) মুখ নাই কথা বলে, পা নাই হেঁটে চলে।

উত্তর: ঘড়ি

(iii) আগে ছিলাম বেঁটে,
এখন হলাম লম্বা,
আগুন দিলেই পুড়ে মরি,
বলো তো আমি কে বা ?

উত্তরঃ মোমবাতি।

(iv) ছায়া ছাড়া শয় না, লাথি ছাড়া ওঠেনা।

উত্তরঃ কুকুর।

(v) বাড়িতে আছে কাঠের গাই, বছর বছর দুধ খায়।

উত্তরঃ খেজুর গাছ।

৩। প্রবাদ ও প্রবচন কাকে বলে ? প্রবাদের বৈশিষ্ট্য গুলি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ প্রবাদ ও প্রবচন উভয়ই বাংলা সাহিত্যের লোকসংস্কৃতির অংশ, যা সমাজে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে সৃষ্টি হয়েছে।

প্রবাদ : প্রবাদ হলো সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও জীবনবোধের প্রতিফলন, যা কোনো বিশেষ ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত না হয়েও সার্বজনীন সত্য প্রকাশ করে। এটি সাধারণত ছোট, অর্থবহ এবং গভীর বার্তাবাহী হয়ে থাকে।

প্রবচন : প্রবচন হলো বিখ্যাত ব্যক্তি বা ধর্মগ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত নীতিমূলক বক্তব্য, যা মানুষকে সঠিক পথে চলার নির্দেশনা দেয়। এটি সাধারণত কোনো ঐতিহাসিক বা ধর্মীয় উৎস থেকে আসে।

রবীন্দ্রনাথের মতে, প্রবাদ কথাটির মধ্যে একটি গল্পের ভাব রয়েছে, কিন্তু প্রবচন ছাঁটা-কাটা কথা মাত্র। যদিও বর্তমানে প্রবাদ ও প্রবচন প্রায়ই সমার্থক এবং পরিপূরক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

∆ প্রবাদের বৈশিষ্ট্য—

• সংক্ষেপ ও সরলতা : প্রবাদ সাধারণত ছোট ও সহজবোধ্য হয়, যা সহজেই মুখস্থ করা যায়।

• গভীর অর্থবোধকতা : এটি বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে কোনো গভীর জীবনবোধ বা নীতিবাক্য প্রকাশ করে।

• লোকজ অভিজ্ঞতা থেকে উদ্ভুত : মানুষের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ থেকে প্রবাদ সৃষ্টি হয়।

• মৌখিকভাবে প্রচলিত : প্রবাদ সাধারণত মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রচলিত থাকে।

• উপদেশমূলক ও শিক্ষামূলক : অনেক প্রবাদের মধ্যে নৈতিকতা, সতর্কবাণী বা শিক্ষামূলক উপাদান থাকে।

• উদাহরণমূলক ব্যাখ্যা নেই : প্রবাদে কোনো বিশেষ ঘটনার উল্লেখ থাকে না, বরং এটি সার্বজনীন সত্যকে তুলে ধরে।

• কবিত্বময়তা ও ছন্দময়তা : অনেক প্রবাদের মধ্যে ছন্দ থাকে, যা সহজে মনে রাখা যায়।

• সার্বজনীনতা : এটি নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা সমাজের জন্য নয়, বরং সার্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য।

• গূঢ় অথচ সাধারণ অভিব্যক্তি : অনেক প্রবাদ সহজ ভাষায় বলা হলেও এর গভীরে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা থাকে।

• প্রচলিত জীবনধারার প্রতিফলন : সমাজের মূল্যবোধ, চিন্তাভাবনা ও রীতিনীতির প্রতিচ্ছবি হিসেবে প্রবাদ কাজ করে।

∆ প্রবাদের উদাহরণ ও অর্থ—

(i) অধিক লোভে তাঁতি নষ্ট।

অর্থ : অতিরিক্ত লোভ মানুষকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে

(ii) যেমন কর্ম, তেমন ফল।

অর্থ: যে যেমন কাজ করে, সে তেমনই ফল পায়।

(iii) লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।

অর্থ: লোভ থেকে পাপ জন্ম নেয় এবং শেষ পর্যন্ত তা ধ্বংস ডেকে আনে।

(iv) সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না।

অর্থ: সময় একবার চলে গেলে তা আর ফিরে আসে না, তাই সময়ের মূল্য দিতে হবে।

(v) আপনি বাঁচলে বাপের নাম।

অর্থ: আগে নিজের জীবন রক্ষা করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

(vi) চোরের দশ দিন, গৃহস্থের এক দিন।

অর্থ: অন্যায়কারী কিছুদিন জিতলেও শেষ পর্যন্ত ন্যায়ের জয় হয়।

(vii) নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা।

অর্থ: অযোগ্য ব্যক্তি নিজের ব্যর্থতার দোষ অন্যের ওপর চাপায়।

(viii) সোনার পাথরবাটি।

অর্থ : অসম্ভব বা অবাস্তব কিছুকে বোঝাতে বলা হয়।

(ix) অতিরিক্ত বুদ্ধি বিপদের কারণ।

অর্থ : অপ্রয়োজনীয় বুদ্ধি খাটানো অনেক সময় সমস্যার সৃষ্টি করে।

(x) এক হাত তালি বাজে না।

অর্থ : কোনো ঘটনাতে একপক্ষই সবসময় দোষী নয়, উভয়ের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রবাদ বাংলা ভাষার অমূল্য সম্পদ, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বাস্তব শিক্ষা দেয়। এগুলো শুধু কথার কথা নয়, বরং সমাজের নীতি ও আদর্শের প্রতিচ্ছবি। এগুলোর মাধ্যমে আমরা অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি।

৪. প্রবাদের সঙ্গে ধাঁধার পার্থক্য কোথায় ?

উত্তরঃ প্রবাদ ও ধাঁধা উভয়েই সংক্ষিপ্ত এবং উভয়েই পদ্যবন্ধ সরস রচনা কিন্তু তা সত্ত্বেও তাদের স্বরূপ সম্পূর্ণ আলাদা।

অর্থের প্রকৃতি: প্রবাদের অর্থ বুদ্ধি দ্বারা সহজে উপলব্ধি করা যায়, কিন্তু ধাঁধার অর্থ গোপন থাকে এবং তা অনেক বেশি বুদ্ধিগ্রাহ্য।

জীবনসংযোগ: প্রবাদ প্রাত্যহিক জীবনের অভিজ্ঞতা ও মেজাজের সঙ্গে যুক্ত, কিন্তু ধাঁধা মূলত বুদ্ধির খেলা ও অবসর বিনোদনের উপাদান।

ভাষার স্বর: প্রবাদের ভাষা তীব্র ও প্রত্যক্ষ, কারণ এতে সমালোচনার প্রাধান্য থাকে; অন্যদিকে ধাঁধার ভাষা কোমল ও স্নিগ্ধ।

ভাষার ধরন: প্রবাদের ভাষায় পাণ্ডিত্য ও জ্ঞানগভীরতার পরিচয় পাওয়া যায়, ধাঁধার ভাষা তুলনামূলকভাবে কবিত্বময়।

প্রাচীনতা ও সামাজিক আবেদন: ধাঁধা প্রবাদের তুলনায় প্রাচীন হলেও সমাজজীবনের সঙ্গে প্রবাদের যোগ থাকায় তার আবেদন আজও অটুট।

সাহিত্যিক গ্রহণযোগ্যতা: প্রবাদ উচ্চ মননশীলতার নিরিখে আধুনিক সাহিত্যেও স্থান পেয়েছে, কিন্তু ধাঁধা তেমনভাবে সাহিত্যজগতে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

উদ্দেশ্যগত পার্থক্য: প্রবাদ জীবনের শিক্ষা বা অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে, কিন্তু ধাঁধার উদ্দেশ্য হলো মস্তিষ্কচর্চা বা মনোরঞ্জন।

রচনাশৈলীর পার্থক্য: প্রবাদ সাধারণত সরল বাক্যে লেখা হয়, কিন্তু ধাঁধায় চাতুর্যের সঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণ বা ঘুরপথে বলা হয়, যাতে উত্তর বের করা কঠিন হয়।

ব্যবহারের পার্থক্য: প্রবাদ দৈনন্দিন কথাবার্তা, সাহিত্য ও শিক্ষায় ব্যবহৃত হয়, কিন্তু ধাঁধা প্রধানত খেলা, বিনোদন বা প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

এইভাবে, প্রবাদ ও ধাঁধা উভয়েই লোকজ রচনার অন্তর্গত হলেও তাদের উদ্দেশ্য, ভাষা, গঠন ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।

৫। ধাঁধায় বাঙালির গার্হস্থ্য জীবনের যে পরিচয় পাওয়া যায় তা নিজের ভাষায় আলোচনা করো।

উত্তরঃ ধাঁধায় বাঙালির গার্হস্থ্য জীবনের পরিচয় অত্যন্ত জীবন্তভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। বাঙালির দৈনন্দিন জীবনের নানা উপাদান, রীতি-নীতি, বিশ্বাস ও বিনোদনের রূপ ধাঁধার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। চুনকাম করা ঘর, দুধভাত খাওয়া শিশু বা সোনার টোপরের মতো প্রতীক ধাঁধায় উঠে আসে বাঙালির ঘরোয়া জীবন ও বিবাহসংস্কৃতির পরিচায়ক হয়ে। আয়না, কাজলের ফোঁটা, চুড়ি ইত্যাদি ধাঁধায় এসেছে নারীর সাজসজ্জার প্রতীক হিসেবে। অনেক ধাঁধার উত্তরে পাওয়া যায় বাংলাদেশের পরিচিত ফল, প্রাণী, ও গৃহস্থ জীবনের ব্যবহার্য বস্তু- যা বঙ্গজীবনের নিবিড় চিত্র তুলে ধরে।

অতীতে ধাঁধা কেবল শিশুদের বিনোদনের মাধ্যম ছিল না; তা ছিল লোকজ সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। নিম্নবর্ণের মানুষরা বিশ্বাস করত ধাঁধায় অলৌকিক শক্তি রয়েছে, যা তাদের জীবনে মঙ্গল বয়ে আনতে পারে। বিবাহসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে ধাঁধা বলা বা জিজ্ঞাসা করা ছিল একপ্রকার আনন্দ ও কৌতুকের আয়োজন। এমনকি হুঁকা ও কলকে-র মতো অবসর বিনোদনের উপকরণও কোনো কোনো ধাঁধার উত্তর হিসেবে এসেছে।

সব মিলিয়ে ধাঁধা বাঙালির গ্রামীণ সমাজ, গার্হস্থ্য রীতি, সংস্কার, বিশ্বাস ও আনন্দবোধের এক অমূল্য দলিল। তাই বলা যায়- ধাঁধা শুধু মস্তিষ্কের খেলা নয়, তা বাঙালির গার্হস্থ্য জীবনের গভীর ও আন্তরিক প্রতিফলন।

৬। ধাঁধার সঙ্গে শিক্ষা ও উপদেশ প্রদানের বিষয়টি কীভাবে জড়িত বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ ধাঁধার সঙ্গে শিক্ষা ও উপদেশ প্রদানের বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। ধাঁধার মূল উদ্দেশ্য শুধু বিনোদন নয়, বরং তা চিন্তাশক্তির বিকাশ ও বুদ্ধির উৎকর্ষ সাধনেও সহায়তা করে। ধাঁধার ভাষা সংক্ষিপ্ত, ছন্দময় ও সহজবোধ্য, যা মনোযোগ ও ভাষাজ্ঞান বাড়ায়। ধাঁধা সমাধানের সময় প্রশ্নকর্তা ও উত্তরদাতা উভয়েই সক্রিয় থাকে, ফলে এতে যুক্তিবোধ ও তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার বিকাশ ঘটে।

ধাঁধায় সাধারণত পরিচিত ও দৈনন্দিন জীবনের বিষয়বস্তু-যেমন শিল, নোড়া, উনুন, ছাতা, লাঠি ইত্যাদি-নিয়ে তুলনা ও রূপকের মাধ্যমে সংকেত সৃষ্টি করা হয়। এর ফলে মানুষ নিজের চারপাশের জগতকে নতুন দৃষ্টিতে দেখার অভ্যাস গড়ে তোলে। ধাঁধা যেমন বুদ্ধির খেলা, তেমনি এর মধ্য দিয়ে মানুষ বিনোদনের সঙ্গে সঙ্গে বাস্তব জীবনের নানা শিক্ষা পায়।

ধাঁধার প্রতিটি প্রশ্নে থাকে কৌতূহল, যুক্তি, কল্পনা ও হাস্যরসের সমন্বয়। এতে একদিকে চিন্তার প্রশিক্ষণ হয়, অন্যদিকে সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের বার্তাও পাওয়া যায়। ফলে বলা যায়, ধাঁধা কেবল আনন্দদায়ক নয়, তা শিক্ষণীয়ও। এই কারণেই ধাঁধার সঙ্গে শিক্ষা ও উপদেশ প্রদানের বিষয়টি নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে।

৭। বিভিন্ন প্রকার লোককথার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

উত্তরঃ লোককথা হলো সাধারণ মানুষের জীবন, বিশ্বাস, অভিজ্ঞতা ও কল্পনার মিশ্রণে গড়ে ওঠা মৌখিক ঐতিহ্যের গল্প। এর নানা প্রকারভেদ রয়েছে।

পশুকথা : লোককথার একটি প্রাচীন ধারা, যেখানে জীবজন্তুর মাধ্যমে মানবপ্রকৃতির বিভিন্ন গুণ ও দোষ ফুটিয়ে তোলা হয়। এই গল্পে পশুদের মানবিক গুণে ভূষিত করা হয় এবং নৈতিক শিক্ষা দেওয়া হয়।

রূপকথা : সম্পূর্ণ কল্পনানির্ভর। এতে রাজপুত্র-রাজকন্যা, পরী, দৈত্য, জাদু ও অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে কাহিনি এগোয়। রূপকথা শিশু ও কিশোর মনে আনন্দ ও কল্পনার জগৎ সৃষ্টি করে।

ব্রতকথা : লোকবিশ্বাসভিত্তিক একটি শাখা। কোনো দেবতা বা দেবীর আশীর্বাদ লাভের জন্য যে ব্রত পালন করা হয়, তার সঙ্গে যুক্ত গল্পই ব্রতকথা। এতে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা নিহিত থাকে।

রোমাঞ্চকথা (novella) : এমন এক ধরনের লোককাহিনি, যেখানে বাস্তব ও অবাস্তবের সীমারেখা মুছে যায়। অদ্ভুত, রহস্যময় ও অসম্ভব ঘটনাপ্রবাহ এই কাহিনির মূল আকর্ষণ।

পুরাণকথা : মূলত সৃষ্টিতত্ত্ব, ধর্ম, লোকাচার ও মানবজীবনের বিবর্তন সম্পর্কিত গল্প। এটি ধর্মীয় হলেও আদ্যন্ত লোককথার চরিত্র বহন করে।

স্থানিক কথা (sage) : কোনো নির্দিষ্ট স্থান, অঞ্চল বা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত লোকগল্প। এতে ইতিহাস ও কল্পনার সংমিশ্রণ ঘটে।

এইভাবে লোককথার নানা রূপে মানুষের বিশ্বাস, কল্পনা ও সংস্কৃতি জীবন্ত হয়ে ওঠে।

৮। লোককথার অন্যতম শাখা রূপকথা সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তরঃ লোককথার অন্যতম শাখা হলো রূপকথা। ‘রূপকথা’ শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ অনেকেই fairy tale বলেন, কিন্তু তা সম্পূর্ণ যথাযথ নয়, কারণ fairy শব্দের অর্থ ‘পরি’, আর বাংলা রূপকথায় পরির উপস্থিতি খুবই বিরল। রূপকথার জগৎ ভরপুর রাক্ষস-খোক্কস, রাজা-রানী, রাজপুত্র ও রাজকন্যার মতো চরিত্রে। এই চরিত্রগুলির মাধ্যমে গড়ে ওঠে এক কল্পনাপ্রসূত ও অবাস্তব জগত, যেখানে রাজপুত্র রাক্ষসকে বধ করে রাজকন্যাকে উদ্ধার করে এবং অর্ধেক রাজ্য অধিকার করে নেয়।

রূপকথার পরিবেশ সাধারণত অদ্ভুত ও অবাস্তব তেপান্তরের মাঠ বা তিরপনির ঘাটের মতো স্থান বারবার ফিরে আসে, যেগুলির কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নেই। চরিত্রগুলিরও নির্দিষ্ট নাম থাকে না, কেবল তাদের সামাজিক অবস্থান দিয়েই পরিচয় দেওয়া হয়, যেমন রাজা, রানি, রাজপুত্র ইত্যাদি। এই অনির্দিষ্টতা রূপকথাকে সর্বজনীন করে তোলে, ফলে পৃথিবীর সব দেশের মানুষই এই কাহিনির সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নিতে পারে।

রূপকথায় নিয়তি বা ভাগ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন দেখা যায় “কাজলরেখা”-র কাহিনিতে। তেমনি প্রেমও অনেক রূপকথার কেন্দ্রীয় বিষয়, যেমন “মধুমালা” বা “শঙ্খমালা”-র কাহিনি। সব মিলিয়ে রূপকথা হল কল্পনা, আবেগ ও নৈতিকতার এক জাদুময় সংমিশ্রণ, যা লোকসাহিত্যের এক চিরসবুজ ধারা।

৯. লোককথার অন্যতম শাখা ব্রতকথা বিষয়ে আলোচনা করো।

উত্তরঃ লোককথার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শাখা হলো ব্রতকথা। বাংলার ব্রতকথাগুলি মূলত লৌকিক দেবদেবীদের অবলম্বনে রচিত। এদের উদ্দেশ্য হলো অনিষ্টকারী দেবতাদের সন্তুষ্ট করে তাঁদের মাধ্যমে কল্যাণ ও মঙ্গল সাধন করা। ব্রতকথায় দেবতারা সাধারণত দোষগুণ-সমন্বিত মানবরূপে উপস্থিত হন, যা বাংলার মঙ্গলকাব্যের দেবতাদের সঙ্গে ভাবগত মিল রাখে। এই কথাগুলিতে গার্হস্থ্য জীবনের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা বিশেষভাবে প্রতিফলিত হয়। অনেক সময় রূপকথাকে কিছুটা পরিবর্তন করে ব্রতকথার রূপ দেওয়া হয়-যেমন ‘সঙ্কটার ব্রতকথা’।

ব্রতকথার চরিত্রচিত্রণে তেমন অভিনবত্ব দেখা না গেলেও সমাজজীবনের প্রতিফলন সুস্পষ্ট। সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে সাধারণত রাজা বা সওদাগর এবং দুর্ভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বামুন চরিত্র দেখা যায়, যিনি সাধারণত দরিদ্র বা ভিক্ষুক। এই ব্রতকথাগুলিতে নারীর কামনা-বাসনা, যেমন স্বামীর দীর্ঘায়ু, সন্তানের মঙ্গল, পারিবারিক সুখ ও সমৃদ্ধির প্রত্যাশা গভীরভাবে ফুটে ওঠে।

বাংলার ঐতিহ্যবাহী ব্রতগুলির মধ্যে ‘পুণ্যিপুকুর ব্রত’, ‘বসুধারা ব্রত’, ‘সেঁজুতি ব্রত’, ‘হরিচরণ ব্রত’ ও ‘সুবচনি ব্রত’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সার্বিকভাবে, ব্রতকথা বাংলার নারীদের বিশ্বাস, আচার ও সামাজিক জীবনের এক উজ্জ্বল দলিল, যেখানে ধর্মীয় অনুশাসন ও লোকবিশ্বাস মিলেমিশে এক অনন্য রূপ ধারণ করেছে।

১০. বাংলা ভাষায় প্রবাদ ও প্রবচনের গুরুত্ব লেখো।

উত্তরঃ বাংলা ভাষায় প্রবাদ ও প্রবচনের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রবাদ ও প্রবচন একটি জাতির ভাষা, সংস্কৃতি, জীবনদর্শন ও অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। এগুলির মাধ্যমে বাঙালি সমাজের জ্ঞান, বুদ্ধি, জীবনবোধ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রজন্মের পর প্রজন্মে সংরক্ষিত হয়েছে।

প্রবাদ সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর অর্থবাহী। জীবনের নানা ঘটনা, সামাজিক সম্পর্ক, নীতি-নৈতিকতা ও আচরণের শিক্ষা সহজ ভাষায় প্রকাশ করে প্রবাদ। যেমন—“অতি লোভে তাঁতি নষ্ট”, “যেমন কর্ম তেমনি ফল”—এইসব প্রবাদ জীবনের বাস্তব সত্য ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান করে। ফলে সাধারণ মানুষ জটিল অভিজ্ঞতা ও দার্শনিক ভাব সহজে বুঝতে পারে।

অন্যদিকে, প্রবচনও চিন্তা ও অনুভূতির সংক্ষিপ্ত প্রকাশ। এগুলি কথ্য ভাষাকে সমৃদ্ধ করে তোলে। কথোপকথনে প্রবাদ-প্রবচনের ব্যবহার ভাষাকে জীবন্ত, প্রাঞ্জল ও মনোগ্রাহী করে। এগুলির মাধ্যমে বক্তার চিন্তা-ভাবনা অধিক প্রভাবশালীভাবে প্রকাশ পায়।

এছাড়া, প্রবাদ ও প্রবচন সাহিত্যকেও অলঙ্কৃত করে। কবিতা, গল্প, নাটক ও উপন্যাসে এদের ব্যবহারে ভাষার সৌন্দর্য ও গভীরতা বৃদ্ধি পায়।

সুতরাং বলা যায়, প্রবাদ ও প্রবচন বাংলা ভাষার এক অমূল্য সম্পদ। এগুলি ভাষার ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে, বাঙালির জীবনবোধকে প্রকাশ করেছে এবং সমাজের নৈতিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

১১. লোককথার সংজ্ঞা নির্ধারণ করে তার শ্রেণিবিভাগ করে সংক্ষেপে আলোচনা করো। ২+৩

উত্তরঃ লোককথা হলো জনগণের মুখে মুখে প্রচলিত সেইসব গল্প, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মৌখিকভাবে প্রচারিত হয়ে এসেছে। কোনো নির্দিষ্ট লেখকের সৃষ্টি নয়, বরং সাধারণ মানুষের জীবনের অভিজ্ঞতা, বিশ্বাস, আনন্দ, দুঃখ, নৈতিকতা ও কল্পনার মিলিত প্রকাশই লোককথার মূল ভিত্তি। লোককথার মধ্যে একদিকে যেমন আনন্দ ও বিনোদনের উপাদান থাকে, অন্যদিকে সমাজজীবনের শিক্ষা, উপদেশ ও নৈতিক মূল্যবোধও নিহিত থাকে।

লোককথাকে সাধারণত কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়—

(১) রূপকথা: এতে অলৌকিক ও কল্পনাপ্রসূত ঘটনার সমাহার থাকে। যেমন—রাক্ষস, রাজপুত্র, রাজকন্যা, জাদু ইত্যাদি।

(২) পশুকথা: পশু-পাখির মাধ্যমে মানবজীবনের গুণ ও দোষকে প্রতীকীভাবে প্রকাশ করা হয়।

(৩) ব্রতকথা: ধর্মীয় আচার বা ব্রতের সঙ্গে যুক্ত কাহিনি, যার মধ্যে লোকবিশ্বাস ও দেবদেবীর কৃপালাভের কাহিনি থাকে।

(৪) ধাঁধা ও প্রবাদ: এগুলিও লোকজ জ্ঞানের অংশ, যা চিন্তা-শক্তি ও ভাষার সৌন্দর্য প্রকাশ করে।

সব মিলিয়ে, লোককথা জাতির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত দলিল। এর মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের চিন্তা, জীবনদৃষ্টি ও সমাজব্যবস্থার প্রতিফলন পাই। তাই লোককথা কেবল গল্প নয়, এটি জাতিসত্তার এক মূল্যবান সম্পদ।

দ্বিতীয় সেমিস্টার বাংলা প্রশ্নোত্তর

ছুটি পাঠ্য বইয়ের গল্প

ছুটি গল্পের বিষয়বস্তু

ছুটি গল্পের প্রশ্ন উত্তর

তেলেনাপোতা আবিষ্কার পাঠ্য বইয়ের গল্প

তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের বিষয়বস্তু

তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্পের প্রশ্নোত্তর

ভাব সম্মিলন কবিতার বিষয়বস্তু

ভাব সম্মিলন কবিতার প্রশ্ন উত্তর

লালন শাহ্ ফকিরের গান বিষয়বস্তু

লালন শাহ্ ফকিরের গান প্রশ্নোত্তর

নুন কবিতার বিষয়বস্তু

নুন কবিতার প্রশ্ন উত্তর

আগুন পাঠ্য বইয়ের নাটক

আগুন নাটকের বিষয়বস্তু

আগুন নাটকের প্রশ্ন উত্তর

বই কেনা প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর

আজব শহর কলকেতা প্রবন্ধের প্রশ্নোত্তর

পঁচিশে বৈশাখ প্রবন্ধের প্রশ্ন উত্তর

আড্ডা প্রবন্ধের প্রশ্ন ও উত্তর

আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ধারা (৩য়) প্রশ্নোত্তর

লৌকিক সাহিত্যের নানা দিক (৪র্থ) প্রশ্নোত্তর

📌 আরো দেখুনঃ

📌 একাদশ শ্রেণি প্রশ্নপত্র সেমি-২ Click Here

📌 একাদশ শ্রেণি প্রশ্নোত্তর বাংলা Click Here

📌 একাদশ শ্রেণি সিলেবাস বাংলা Click Here

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

Leave a Reply

  • Post comments:0 Comments
  • Reading time:15 mins read