পাতাবাহার
বাংলা | পঞ্চম শ্রেণি
ঝড় কবিতার প্রশ্ন উত্তর পঞ্চম শ্রেণি বাংলা | Jhor Kobitar Question Answer Class 5 Bengali wbbse
1. পঞ্চম শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায়ের প্রশ্নোত্তর Click Here
2. পঞ্চম শ্রেণির সমস্ত বিষয়ের ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র | Class 5 All Subject Unit Test Question Paper Click Here
ঝড়
—মৈত্রেয়ী দেবী
ওমা, সেদিন হাটের বারে, মাঠের ধারে—
করতে গেছি খেলা
—দুপুরবেলা,
এমন সময়, এলোমেলো
কোথা থেকে বাতাস এল!
হঠাৎ থেকে থেকে
অন্ধকারে সমস্ত দিক কেনে দিল ঢেকে!
বল্লে ওরা, ছুটে পালাই ঘর
ওই এসেছে ঝড়!
আমার যেন লাগল ভারী ভালো,
চেয়ে দেখি– আকাশখানা এক্কেবারে কালো।
কালো হ’ল বকুলতলা,
কালো চাঁপার বন,
কালো জলে দিয়ে পাড়ি
আসলো মাঝি তাড়াতাড়ি,
কেমন জানি করল আমার মন!
—ঝড় কারে মা কয় ?
আমার মনে হয়,
কাদের যেন ছেলে,
কালির দোয়াত কেমন ক’রে হঠাৎ দিল ফেলে,
যেমন ক’রে কালি—
আমি তোমার মেঝের উপর ঢালি!
হাসল কোমল ঠোঁটটি মেলে
ভীষণ কেমন আগুন জ্বেলে
আকাশ বারে বারে,
আবার বুঝি ঘুরে ঘুরে
পালিয়ে গেল অনেক দূরে—
সাত সাগরের পারে।
কবি পরিচিতিঃ মৈত্রেয়ী দেবী (১৯১৪- ১৯৯০) : রবীন্দ্রজীবনের কথাকার, খ্যাতনামা লেখিকা ও সমাজসেবিকা ছিলেন। তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘উদিতা’। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বই গ্রন্থ ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’, ‘স্বর্গের কাছাকাছি’, ‘ন হন্যতে’ ইত্যাদি। ১৯৭৭ সালে তিনি পদ্মশ্রী উপাধি পান।
শব্দার্থ : হাট– সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে বসা বাজার। দোয়াত– লেখার কালি রাখার পাত্র। এলোমেলো– ছন্নছাড়া, চাঁপার বন– চাঁপা গাছের বন, কোমল— নরম,
হাতে কলমে প্রশ্নের উত্তর : ঝড় কবিতার প্রশ্ন উত্তর পঞ্চম শ্রেণি বাংলা | Jhor Kobitar Question Answer Class 5 Bengali wbbse
১। ঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো :
১.১ পশ্চিমবঙ্গে কালবৈশাখী যে ঋতুতে হয়— (গ্রীষ্ম / বর্ষা / শরৎ / শীত)।
উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গে কালবৈশাখী গ্রীষ্ম ঋতুতে হয়।
১.২ দিনের যে সময়ে কালবৈশাখী ঝড় আসে– (সকাল / দুপুর / বিকেল / রাত)।
উত্তরঃ দিনের কালবৈশাখী ঝড় আসে দুপুরে বা বিকেলে।
১.৩ যখন ঝড় ওঠে, তখন আকাশ থাকে— (কালো / লাল / নীল / সাদা)।
উত্তরঃ যখন ঝড় ওঠে, তখন আকাশ থাকে কালো।
১.৪ গ্রীষ্মের একটি ফুল হল (গাঁদা / গন্ধরাজ / চাঁপা / পদ্ম)।
উত্তরঃ গ্রীষ্মের একটি ফুল হল চাঁপা।
২। ‘ক’ স্তম্ভের সঙ্গে ‘খ’ স্তম্ভ মিলিয়ে লেখো :
‘ক’ স্তম্ভ | ‘খ’ স্তম্ভ |
মাঝি | চম্পক |
ঝড় | সমুদ্র |
সাগর | নাইয়া |
চাঁপা | অগোছালো |
এলোমেলো | প্রবল হাওয়া |
উত্তরঃ
‘ক’ স্তম্ভ | ‘খ’ স্তম্ভ |
মাঝি | নাইয়া |
ঝড় | প্রবল হাওয়া |
সাগর | সমুদ্র |
চাঁপা | চম্পক |
এলোমেলো | অগোছালো |
৩। ‘চেয়ে’ ও ‘ভারী’ শব্দদুটিকে দুটি আলাদা আলাদা অর্থে বাক্যে ব্যবহার করো :
উত্তরঃ
চেয়ে— কাজল তপনের চেয়ে অনেক নম্বর বেশি পেয়েছে।
চেয়ে— পাখিগুলো দিকে চেয়ে আছে।
ভারি— ভোরে পাখির গান ভারি মিষ্টি লাগে।
ভারী— কাকুর শরীরটা ভারী হয়ে গেছে।
৪। বিশেষ্য ও বিশেষণ আলাদা করে লেখো : এলোমেলো বাতাস, চাপার বন, কালো জল, কালির দোয়াত, কোমল ঠোট।
উত্তর :
বিশেষ্য— বাতাস, বন, জল, দোয়াত, ঠোঁট
বিশেষণ— এলোমেলো, চাঁপার, কালো, কালির, কোমল
৫. ক্রিয়ার নীচে দাগ দাও :
৫.১ কোথা থেকে বাতাস এল।
৫.২ আসলো মাঝি তাড়াতাড়ি।
৫.৩ আমি তোমার মেঝের ওপর ঢালি।
৫.৪ পালিয়ে গেল অনেক দূরে।
৫.৫ চেয়ে দেখি আকাশখানা এক্কেবারে কালো।
৬। কোনটি বেমানান, তার নীচে দাগ দাও :
৬.১ হাটবার, মাঠের ধার, দুপুরবেলা, ঝড়, কালি।
উত্তরঃ কালি।
৬.২ কালো আকাশ, বকুলতলা, চাপার বন, কালো জল, হাটবার।
উত্তরঃ হাটবার।
৬.৩ ছেলে, কালির দোয়াত, মেঝে, ফেলে দেওয়া কালি, মাঠের ধার।
উত্তরঃ মাঠের ধার।
৬.৪ আকাশ, বিদ্যুৎ, ঝড়, সাত সমুদ্র, কালির দোয়াত।
উত্তরঃ কালির দোয়াত।
৬.৫ বার্তাস, মাঝি, ঝড়, জল, ঘর।
উত্তরঃ ঘর।
৭। ‘অন্ধকার’ শব্দটির মতো ‘ন্ধ’ এর প্রয়োগ আছে, এমন পাঁচটি শব্দ তৈরি করো :
উত্তরঃ বন্ধ, সন্ধান, সন্ধ্যা, প্রবন্ধ, ধান্ধা।
৮। এলোমেলো বর্ণগুলিকে সাজিয়ে শব্দ তৈরি করো :
• লো লো এ মে— এলোমেলো।
• ড়া ড়ি তা তা— তাড়াতাড়ি।
• লা কু ত ব ল— বকুলতলা।
• না কা আ শ থা— আকাশখানা।
• কে কে বা এ— একেবারে।
৯। শূন্যস্থান পূরণ করো :
৯.১ আকাশখানা ___________ কালো।
উত্তরঃ আকাশখানা একেবারে কালো।
৯.২ আসলো মাঝি ____________।
উত্তরঃ আসলো মাঝি তাড়াতাড়ি।
৯.৩ আমার যেন লাগল ____________ ভালো।
উত্তরঃ আমার যেন লাগল ভারী ভালো।
৯.৪ হাসল ____________ ঠোঁট মেলে।
উত্তরঃ হাসল কোমল ঠোঁট মেলে।
৯.৫ কালির দোয়াত কেমন করে ____________।
উত্তরঃ কালির দোয়াত কেমন করে হঠাৎ দিল ফেলে।
১০। বাক্যরচনা করো : হাট, ভালো, সময়, পাড়ি, ভীষণ।
উত্তরঃ
হাট— গ্রামাঞ্চলে সাধারণত সপ্তাহে দুদিন হাট বসে।
ভালো— ভালো গল্পের বই পেলেই আমি পড়ি।
সময়— আমরা সময় মতো পড়াশোনা করি।
পাড়ি—যাত্রী বোঝাই নৌকাটি এইমাত্র পাড়ি দিল।
ভীষণ— ঘোড়া ভীষণ দ্রুত দৌড়োয়।
১১। বিপরীতার্থক শব্দ লেখো : এলোমেলো, তাড়াতাড়ি, কোমল, জ্বেলে, দূরে।
উত্তরঃ
• এলোমেলো— গোছানো।
• তাড়াতাড়ি— ধীরে।
• কোমল— কঠিন।
• জ্বেলে— নিভিয়ে।
• দূরে— কাছে।
১২। প্রদত্ত সূত্র অনুসারে একটি গল্প তৈরি করো :
তুমি একা — বিরাট মাঠ — আকাশে ঘন মেঘ — গাছের পাতা নড়ছে না — ঝড় এল — প্রবল বৃষ্টি — কোথাও আশ্রয় নিলে — ঝড় থামলে রাতে বাড়ি ফিলে।
উত্তরঃ বিরাট মাঠ পেরিয়ে গ্রামের শেষপ্রান্তে আমাদের বিদ্যালয়। আজ ছুটির পর আমি একা বাড়ি ফিরছি। সঙ্গীর আমার সঙ্গে কেউ নেই। হঠাৎ ঘন কালো মেঘে আকাশ ভরে গেল। চারদিক অন্ধকার, গাছের পাতা একটিও না। কোথা থেকে হাওয়ার সঙ্গে ধুলো উড়িয়ে ঝড় এল। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবল বৃষ্টি। আমি একটি ক্লাবঘরের বারান্দা অন্য সকলের সঙ্গো আশ্রয় নিলাম। ঝড়-বৃষ্টি থামতে সন্ধ্যা পেরিয়ে গেল। ঝড় থামলে রাতে বাড়ি ফিরলাম।
১৩। ‘কোমল’ ও ‘কমল’ শব্দযুগলের অর্থ পার্থক্য বাক্য রচনা করে বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ গোলাপ ফুলের পাপড়ি খুব কোমল (নরম) হয়।
ভারতের জাতীয় ফুল হল কমল (পদ্ম)।
১৪। কোনটি কোন শ্রেণির বাক্য লেখো :
১৪.১ ওই এসেছে ঝড়।
উত্তরঃ বিস্ময়বোধক বাক্য।
১৪.২ ঝড় কারে মা কয় ?
উত্তরঃ প্রশ্নসূচক বাক্য।
১৪.৩ কেমন জানি করল আমার মন।
উত্তরঃ জটিল বাক্য।
১৪.৪ চেয়ে দেখি— আকাশখানা একেবারে কালো।
উত্তরঃ যৌগিক বাক্য।
১৪.৫ পালিয়ে গেল অনেক দূরে— সাত সাগরের পারে।
উত্তরঃ সরল বাক্য।
১৫.১ মৈত্রেয়ী দেবীর লেখা দুটি বইয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ মৈত্রেয়ী দেবীর লেখা দুটি বইয়ের নাম ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’, ‘ন হন্যতে’।
১৫.২ তিনি কত সালে ‘পদ্মশ্রী’ উপাধি পান?
উত্তরঃ তিনি ১৯৭৭ সালে ‘পদ্মশ্রী’ উপাধি পান।
১৬। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :
১৬.১ কবিতায় শিশুর দল ছুটে চলে যেতে চেয়েছিল কেন ?
উত্তরঃ কালবৈশাখীর সময় দুপুরবেলা হঠাৎ সমস্ত আকাশ ঘন কালো অন্ধকার করে ঝড় আসতেই শিশুর দল চলে যেতে চেয়েছিল।
১৬.২ দুপুরবেলা চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেল কেন ?
উত্তরঃ দুপুরবেলা হঠাৎ এলোমেলো বাতাস এসে সারা আকাশ কালো মেঘে ভরিয়ে দিল। কালো মেঘে সূর্যদেব ঢাকা পড়ে চারদিক অন্ধকার হয়ে গেল।
১৬.৩ ‘পালিয়ে গেল অনেক দূরে’— কে পালিয়ে গেল ? পালিয়ে সে কোথায় গেল?
উত্তরঃ ঝোড়ো হাওয়া পালিয়ে গেল।
ঝোড়ো হাওয়া সাত সাগরের পারে পালিয়ে গেল।
১৬.৪ ঝড়ের সঙ্গে শিশুর মনে কীসের তুলনা কবিতায় ধরা পড়েছে ?
উত্তরঃ ঝড়ের সঙ্গে শিশুর মনে কালির দোয়াতের তুলনা কবিতায় ধরা পড়েছে।
১৬.৫ ‘ঝড়’-এর বর্ণনা দিতে ‘মেঘ করে আসা’ আর ‘বিদ্যুৎ চমকানোর’র কথা কবিতায় কোন্ কোন্ পঙক্তিতে ফুটে উঠেছে ?
উত্তরঃ ঝড়-এর বর্ণনা দিতে ‘এমন সময় এলেমেলো কোথা থেকে বাতাস এলো! হঠাৎ থেকে থেকে’ পঙ্ক্তিটি ‘মেঘ করে আসা’ এবং ‘হাসল কোমল ঠোটটি মেলে ভীষণ কেমন আগুন জ্বেলে আকাশ বারে বারে’ পঙ্ক্তির মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ চমকানোর কথা ফুটে উঠেছে।
১৬.৬ ঝড়ের সময় নদী বা সমুদ্রে থাকলে কী ধরনের বিপদ ঘটতে পারে বলে তোমার মনে হয় ?
উত্তরঃ ঝড়ের সময় নদী বা সমুদ্রের জল উত্তাল হয়ে ওঠে। এই সময় জলে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
১৬.৭ সাতটি সাগরের নাম তোমার শিক্ষকের থেকে জেনে নিয়ে খাতায় লেখো।
উত্তরঃ আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর, লোহিত সাগর, মরু সাগর, পীত সাগর, কাস্পিয়ান সাগর, ক্ষীরসাগর।
১৬.৮ কোনো একটি দিনে তোমার ঝড় দেখার কথা বন্ধুকে একটি চিঠি লিখে জানাও।
উত্তরঃ একটি দিনের ঝড় দেখার কথা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি :
৮ জুন, ২০২৫
কুড়িগ্রাম
নদীয়া
প্রিয় মানস,
পত্রের প্রথমেই তোমাকে জানাই আমার মনভরা ভালোবাসা। গত সপ্তাহে তোমার চিঠি পেয়েছি। আমার নিজের চোখে দেখা একটি নতুন অভিজ্ঞতার কথা তোমাকে না জানিয়ে পারছি না। গত বুধবার স্কুল ছুটির সময় পশ্চিম আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি কালো মেঘে আকাশ ঢেকে গেছে। বুঝতে পারলাম এখুনি ঝড় উঠবে। আমি এবং আমার কয়েকজন বন্ধু বাড়ির পথে খুব তাড়াতাড়ি পা বাড়ালাম। তারপর এলোমেলো বাতাস ধুলো উড়িয়ে ছুটে এলো। আমি একটা রাস্তার ক্লাবঘরের বারান্দায় কয়েকজনের সঙ্গে আশ্রয় নিলাম। বিদ্যুতের ঝলকানি দেখে বুক আমার কাপছিল। তারপর ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি শুরু হল। প্রায় দুঘণ্টা বৃষ্টির পর প্রকৃতি শান্ত হল। নিরাপদে বাড়ি ফিরে এলাম। প্রকৃতির এই ভয়াল রূপ প্রথম নিজের চোখে দেখে আমি অভিভূত হলাম। তুমি আমার ভালোবাসা নিয়ো। অবশ্যই চিঠির উত্তর দিয়ো।
ইতি—
তাপস রায়
মানস সাহা
প্রযত্নে : তমাল সাহা
গ্রাম : করিমপুর, পোঃ করিমপুর
জেলা : মুর্শিদাবাদ
পিন নং
১৬.৯ ঝড়ের প্রকৃতির একটি ছবি আঁকো।