Class 8 History 2nd Unit Test Question Paper Set-1 wbbse | অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র সেট-১

2ND SUMMATIVE EVALUATION
CLASS 8 (VIII) WBBSE
HISTORY QUESTION PAPER

Set-1

Class 8 History 2nd Unit Test Question Paper Set-1 wbbse | অষ্টম শ্রেণির ইতিহাস দ্বিতীয় ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র সেট-১

📌অষ্টম শ্রেণি ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here

📌অষ্টম শ্রেণির বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here

দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন-2025
অষ্টম শ্রেণি     বিষয় : ইতিহাস
সময় : ১ ঘণ্টা ৪০              মিনিট পূর্ণমান : ৫০

১. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো : ১×১০=১০

১.১ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের প্রবর্তক ছিলেন–
(ক) লর্ড ওয়েলেসলি, (খ) লর্ড কর্নওয়ালিশ,
(গ) লর্ড বেন্টিঙ্ক, (ঘ) লর্ড নর্থব্রুক।

উত্তরঃ (খ) লর্ড কর্নওয়ালিশ।

১.২ ‘মহল’ কথাটির অর্থ হল–
(ক) জমির সমষ্টি, (খ) মহলের সমষ্টি,
(গ) বন্দোবস্তের বিষয়, (ঘ) গ্রামের সমষ্টি।

উত্তরঃ (ঘ) গ্রামের সমষ্টি।

১.৩ ভারতের প্রথম রেলপথ চালু হয়–
(ক) ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে, (খ) ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে,
(গ) ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে, (ঘ) ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে।

উত্তরঃ (খ) ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে।

১.৪ প্রথম পাটের কারখানা চালু হয়–
(ক) রিষড়ায়, (খ) বাউড়িয়ায়,
(গ) কলকাতায়, (ঘ) বোম্বাইয়ে।

উত্তরঃ (ক) রিষড়ায়।

১.৫ ভারতে টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা চালু হয়–
(ক) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে, (খ) ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে,
(গ) ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে, (ঘ) ১৮৫০।এখাশে।

উত্তরঃ (ক) ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে।

১.৬ আইন করে সতীদাহপ্রথা বন্ধ করেছিলেন–
(ক) রাজা রামমোহন রায়, (খ) ডিরোজিও,
(গ) লর্ড বেন্টিঙ্ক, (ঘ) লর্ড ডালহৌসি।

উত্তরঃ (গ) লর্ড বেন্টিঙ্ক।

১.৭ সত্যশোধক সমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন–
(ক) বীরেশলিঙ্গম পাণ্ডুলু, (খ) জ্যোতিরাও ফুলে,
(গ) দয়ানন্দ সরস্বতী, (ঘ) রামমোহন।

উত্তরঃ (খ) জ্যোতিরাও ফুলে।

১.৮ জাতীয় হিন্দু মেলা চালু করেন–
(ক) কেশবচন্দ্র সেন, (খ) দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর,
(গ) নবগোপাল মিত্র, (ঘ) দীনবন্ধু মিত্র।

উত্তরঃ (গ) নবগোপাল মিত্র।

১.৯ মোপালা বিদ্রোহ হয়েছিল–
(ক) মালাবার অঞ্চলে, (খ) বাংলাদেশে,
(গ) মুম্বাইতে, (ঘ) পাঞ্জাবে।

উত্তরঃ (ক) মালাবার অঞ্চলে।

১.১০ মুন্ডা বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন–
(ক) চাঁদ, (খ) বিরসা মুন্ডা, (গ) ভৈরব, (ঘ) সিধু

উত্তরঃ (খ) বিরসা মুন্ডা।

১.১১ বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল–
(ক) হিন্দু প্যাট্রিয়ট পত্রিকা,
(খ) যুগান্তর পত্রিকা,
(গ) সোমপ্রকাশ পত্রিকা
(ঘ) আনন্দ বাজার পত্রিকা।

উত্তরঃ (খ) যুগান্তর পত্রিকা।

১.১২ জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভা বসেছিল–
(ক) মাদ্রাজে, (খ) গোয়ায়, (গ) বোম্বাইতে (ঘ) কলকাতায়।

উত্তরঃ (গ) বোম্বাইতে।

২। একটি বা দুটি শব্দে উত্তর দাও (যে কোনো ১০টি) : ১×১০=১০

২.১ পাঁচশালা বন্দোবস্তের প্রবর্তন করেন কে ?

উত্তরঃ ওয়ারেন হেস্টিংস।

২.২ কে রেলপথ ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেন ?

উত্তরঃ লর্ড ডালহৌসি।

২.৩ কে আইন করে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করেন ?

উত্তরঃ লর্ড উইলিয়াম বেন্টিক।

২.৪ বাংলায় কত খ্রিস্টাব্দে নীল বিদ্রোহ শুরু হয় ?

উত্তরঃ ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে।

২.৫ উনিশ শতককে ‘সভাসমিতির যুগ’ বলেছেন কে ?

উত্তরঃ উনিশ শতককে ‘সভাসমিতির যুগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ডঃ অনিল শীল।

২.৬ ‘ভারতমাতা’ চিত্রটি কার আঁকা‌ ?

উত্তরঃ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯০৫)।

২.৭ কে জাতীয় মেলা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ?

উত্তরঃ নবগোপাল মিত্র।

২.৮ কাকে ‘মুসলমান সমাজের রামমোহন’ বলা হয় ?

উত্তরঃ স্যার সৈয়দ আহমদখান।

২.৯ অবশিল্পায়নের ফলে কোন্ কোন্ কুটিরশিল্পের সর্বাধিক ক্ষতি হয় ?

উত্তরঃ বস্ত্রশিল্প, হস্তশিল্প, কুটির শিল্প।

২.১০ মহলওয়ারি বন্দোবস্ত কত খ্রিস্টাব্দে প্রবর্তিত হয় ?

উত্তরঃ ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে।

২.১১ অনুশীলন সমিতিকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ?

উত্তরঃ সতীশচন্দ্র বসু।

(xii) রাখিবন্ধন কবে পালিত হয়েছিল ?

উত্তরঃ ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে।

(xiii) রায়ত কথার অর্থ কী ?

উত্তরঃ রায়ত কথার অর্থ কৃষক।

৩। নীচের বিবৃতিগুলির কোনটি ঠিক কোনটি ভুল লেখো : ১×৫=৫

৩.১ রেলপথের বিস্তারের মাধ্যমে দেশীয় পণ্যে ভারতের বাজার ছেয়ে গিয়েছিল।

উত্তরঃ ভুল (বিদেশি পণ্য)

৩.২ ১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু হয়।

উত্তরঃ ভুল। (১৭৯৩)

৩.৩ টেলিগ্রাফ ব্যবস্থা কোম্পানির শাসনের কথা মাথায় রেখে বানানো হয়েছিল।

উত্তরঃ ঠিক।

৩.৪ ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকি কিংসফোর্ডকে মারতে গিয়েছিলেন।

উত্তরঃ ঠিক

৩.৫ নরমপন্থীরা চরমপন্থীদের কার্যকলাপকে ‘তিন-দিনের তামাশা’ বলতেন।

উত্তরঃ ঠিক

৪। বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করে লেখো
(যে-কোনো চারটি) : ১×৪=৪

৪.১ রামমোহন রায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন, দয়ানন্দ সরস্বতী।

উত্তরঃ দয়ানন্দ সরস্বতী।

৪.২ কলকাতা, ইংল্যান্ড, বোম্বাই, মাদ্রাজ।

উত্তরঃ ইংল্যান্ড।

৪.৩ জমিদার, ইজারাদার, সাঁওতাল, মহাজন।

উত্তরঃ সাঁওতাল।

৪.৪ সিধু, কানহু, চাঁদ, বিরসা মুন্ডা।

উত্তরঃ বিরসা মুন্ডা।

৪.৫ বাহাদুর শাহ জাফর, নানা সাহেব, তিতুমির, মঙ্গলাল পান্ডে।

উত্তরঃ তিতুমির।

৫। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও (যে-কোনো চারটি) : ২×৪=৮

৫.১ ‘দিকু’ কাদের বলে ?

উত্তরঃ সাঁওতাল পরগনা অঞ্চলে বহিরাগত সুদখোর মহাজন ও জমিদারদের দিকু বলা হত।

৫.২ ‘সম্পদের বহির্গমন’ কাকে বলে ?

উত্তরঃ পলাশির যুদ্ধের পর থেকে কোম্পানি অষ্টদশ শতকের মধ্যভাগে বাংলা ও ভারতের নানা প্রান্ত থেকে ভারতের সম্পদকে ব্রিটেন নানাভাবে স্থানান্তরিত করত। এইভাবে দেশের সম্পদ বিদেশে চালান হওয়াকেই সম্পদের বহির্গমন বলে উল্লেখ করা হয়।

৫.৩ মহাবিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ কি ছিল ?

উত্তরঃ মহাবিদ্রোহের প্রত্যক্ষ কারণ ছিল এনফিল্ড রাইফেল এর জন্য ব্যবহৃত নতুন কার্তুজ। এই কার্তুজে গরু ও শূকরের চর্বি মেশানো থাকায় হিন্দু ও মুসলিম সিপাহীদের ধর্মীয় বিশ্বাস আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল, যা বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

৫.৪ অবশিল্পায়ন কাকে বলে ?

উত্তরঃ অবশিল্পায়ন বলতে বোঝায় শিল্পায়নের বিপরীত বা শিল্পের অধোগতি। অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনধীন ভারতের চিরাচরিত ও ঐতিহ্যশালী হস্তশিল্প-কুটিরশিল্পের ধ্বংস সাধনই মূলত অবশিল্পায়ন।

৫.৫ সভাসমিতির যুগ কাকে বলে ?

উত্তরঃ উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতীয় সমাজে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে। এই সময়ে সভা সমিতি গঠনের মাধ্যমে সমাজের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়। তাই এই সময়কে সভা সমিতির যুগ বলা হয়।

৫.৬ নব্যবঙ্গ কারা ? তাদের উদ্দেশ্য কি ছিলো ?

উত্তরঃ নব্যবঙ্গ বলতে উনিশ শতকের বাংলার একদল প্রগতিশীল যুবককে বোঝায়, যারা ডিরোজিওর অনুসরণে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে যুক্তিবাদী ও সংস্কারকামী হয়ে উঠেছিল। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কুসংস্কার ও গোঁড়ামি দূর করে সমাজকে আধুনিক ও প্রগতিশীল করে তোলা।

৫.৭ ‘হিউম-ডাফরিন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ কী ?

৫.৮ দাক্ষিণাত্য হাঙ্গামা কী ?

উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য হাঙ্গামা হলো 1875 সালে মহারাষ্ট্রের (তৎকালীন বোম্বে প্রেসিডেন্সি) পুনে ও আহমেদনগর জেলায় সংঘটিত একটি কৃষক বিদ্রোহ।

৬। নীচের যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৩×১=৩

৬.২ টিকা লেখো : ইলবার্ট বিল বিতর্ক

৬.৩ নীল বিদ্রোহের কারণ গুলি আলোচনা করো।

৭। নীচের প্রশ্নগুলির মধ্যে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর লেখো : ৫×২=১০

৭.১ রাজা রামমোহন রায়ের সমাজ সংস্কার আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা। ৫

উত্তরঃ রাজা রামমোহন রায় ছিলেন একজন প্রখ্যাত ভারতীয় সমাজ সংস্কারক এবং শিক্ষাবিদ। তিনি ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলার নবজাগরণের একজন অগ্রদূত ছিলেন। রামমোহন রায় নারীশিক্ষা, সতীদাহ প্রথা রহিতকরণ, বাল্যবিবাহ রোধ এবং কুসংস্কার দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন, যা ছিল একটি ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কার আন্দোলন।

রাজা রামমোহন রায়ের সমাজ সংস্কার আন্দোলন—

সতীদাহ প্রথা বিলোপ : রামমোহন রায় সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তিনি এই প্রথার কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করেন এবং সরকারের কাছে এই প্রথা বিলোপের জন্য আবেদন করেন। তার প্রচেষ্টার ফলে ব্রিটিশ সরকার ১৮২৯ সালে সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

নারী শিক্ষার প্রসার : রামমোহন রায় মনে করতেন, নারী শিক্ষার অভাবে সমাজ এক বৃহত্তর উন্নতির পথ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি নারী শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করে নারী শিক্ষার প্রসারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং অ্যাংলো-হিন্দু স্কুল ও বেদান্ত কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

বাল্যবিবাহের বিরোধিতা : রামমোহন রায় বাল্যবিবাহের কুফলের বিষয়ে সচেতন ছিলেন এবং এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। তিনি মনে করতেন, অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিলে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি হয়।

জাতিভেদ প্রথার বিরোধিতা : রামমোহন রায় জাতিভেদ প্রথার কঠোর বিরোধিতা করেন। তিনি মনে করতেন, জাতিভেদ প্রথা সমাজের উন্নতির পথে একটি বড় বাধা। তিনি জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি স্থাপনের জন্য কাজ করেন।

ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠা : ১৮২৮ সালে, রামমোহন রায় ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সমাজের মূল লক্ষ্য ছিল একেশ্বরবাদে বিশ্বাস স্থাপন এবং কুসংস্কার ও কুপ্রথার বিরুদ্ধে লড়াই করা। ব্রাহ্ম সমাজ পরবর্তীতে ভারতীয় সমাজে ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শিক্ষার প্রসার : রামমোহন রায় বিশ্বাস করতেন, আধুনিক শিক্ষার মাধ্যমেই সমাজের অগ্রগতি সম্ভব। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন এবং পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, যুক্তিবাদী শিক্ষা সমাজের পশ্চাৎপদতা দূর করতে পারে।

রামমোহন রায়ের সমাজ সংস্কার আন্দোলন ভারতীয় সমাজে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তার সংস্কারমূলক কাজের জন্য তিনি ‘আধুনিক ভারতের জনক’ হিসাবে সম্মানিত।

৭.২ সমাজ ও শিক্ষা সংস্কারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা আলোচনা করো। ৫

উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক এবং লেখক। শিক্ষা ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি নারীশিক্ষা প্রসার, বিধবা বিবাহ প্রচলন, এবং কুসংস্কার দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

(ক) নারীশিক্ষা প্রসার—

(১) বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করে নারী শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি মেয়েদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন এবং নারী শিক্ষার জন্য জনমত গঠনে সচেষ্ট হন।

(২) কলকাতার হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা তার একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ ছিল।

(৩) গ্রামাঞ্চলে নারী শিক্ষার বিস্তারের জন্য তিনি প্রচেষ্টা চালান এবং বহু সংখ্যক নারী বিদ্যালয় স্থাপন করেন।

(খ) বিধবা বিবাহ প্রচলন—

(১) বিধবা বিবাহ আইন প্রণয়নে বিদ্যাসাগরের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বিধবা বিবাহ আইন ১৮৫৬ পাশ করাতে সক্ষম হন, যা তৎকালীন সমাজে একটি যুগান্তকারী ঘটনা ছিল।

(২) বিধবাদের পুনর্বিবাহের জন্য তিনি জনমত গঠন করেন এবং বহু বিধবার পুনর্বিবাহের ব্যবস্থা করেন।

(গ) শিক্ষা সংস্কার—

(১) সংস্কৃত শিক্ষার আধুনিকীকরণে বিদ্যাসাগরের অবদান অনস্বীকার্য। তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন কলেজের পাঠ্যক্রম সংস্কার করেন এবং আধুনিক শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগী হন।

(২) তিনি ‘বর্ণপরিচয়’ সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন, যা আজও শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

(৩) বাংলা গদ্যের মানোন্নয়নেও তার অবদান রয়েছে। তিনি বাংলা ভাষাকে একটি সুসংহত রূপ দেন এবং বাংলা গদ্যকে জনপ্রিয় করে তোলেন।

(ঘ) অন্যান্য সংস্কার—

(১) বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহের বিরোধিতা করেন তিনি, সমাজের কুসংস্কার দূরীকরণেও তিনি কাজ করেছেন।

(২) বিদ্যাসাগরের এই সংস্কারগুলি বাংলা সমাজ ও শিক্ষার অগ্রগতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। তার কাজের জন্য তিনি “শিক্ষার আলোকবর্তিকা” হিসাবে আজও স্মরণীয়।

৭.৩ চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল ও কুফল গুলি কি ছিল ? ৫

উত্তরঃ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত, যা ১৭৯৩ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশ প্রবর্তন করেন, ব্রিটিশ ভারতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা ছিল। এর কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা ছিল।

(ক) চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল—

(১) সরকারের জন্য স্থিতিশীল রাজস্ব : এই বন্দোবস্তের মাধ্যমে সরকার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রাজস্ব জমিদারদের কাছ থেকে পেত, যা সরকারের আয় স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করত।

(২) জমিদারদের জমির মালিকানা : জমিদাররা জমির মালিকানা লাভ করে, যা তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

(৩) ভূমি ব্যবস্থাপনার সরলীকরণ : এই বন্দোবস্ত ভূমি ব্যবস্থাপনাকে সরল করে তোলে, কারণ জমিদাররা ছিল সরকারের সরাসরি প্রতিনিধি।

(খ) চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কুফল—

(১) কৃষকদের শোষণ : জমিদাররা অতিরিক্ত খাজনা আদায় করে কৃষকদের উপর অত্যাচার করত।

(২) দারিদ্র্যের সৃষ্টি : কৃষকদের উপর অতিরিক্ত খাজনার চাপ এবং জমির অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে দারিদ্র্য বৃদ্ধি পায়।

(৩) কৃষি উন্নয়নে বাধা : জমিদাররা তাদের জমির উন্নতির দিকে মনোযোগ না দিয়ে খাজনা আদায়ে বেশি আগ্রহী ছিল, যা কৃষি উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে।

উপসংহারঃ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত একদিকে যেমন সরকারের জন্য স্থিতিশীল রাজস্বের ব্যবস্থা করেছিল, অন্যদিকে তেমনি কৃষকদের শোষণ ও দারিদ্র্যের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

৭.৪ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মহাবিদ্রোহের কারণগুলি আলোচনা করো। ৫

উত্তরঃ ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের পেছনে একাধিক কারণ ছিল। এর মধ্যে প্রধান কারণগুলো হলো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় এবং সামরিক কারণ। এছাড়া, তাৎক্ষণিক কারণ হিসেবে এনফিল্ড রাইফেল প্রবর্তন করা হয়, যার কার্তুজে গরু ও শূকরের চর্বি ব্যবহারের গুজব ছড়িয়ে পড়লে বিদ্রোহ আরও বেড়ে যায়।

(ক) রাজনৈতিক কারণ—

  • ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাম্রাজ্যবাদী নীতি, যেমন – স্বত্ববিলোপ নীতি এবং রাজ্য গ্রাস করার নীতি ভারতীয় রাজন্যবর্গ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
  • বিভিন্ন রাজ্য ব্রিটিশদের দখলে চলে যাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত রাজা ও জমিদাররা বিদ্রোহের দিকে ঝুঁকে পড়েন।

(খ) অর্থনৈতিক কারণ—

  • ব্রিটিশ অর্থনৈতিক নীতি ছিল মূলত ভারতের সম্পদ শোষণ করা। ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত কঠোর যা কৃষকদের উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করে।
  • শিল্পের ধ্বংস এবং দেশীয় শিল্পের প্রতি অবহেলা ভারতীয় অর্থনীতিকে দুর্বল করে দেয়। বেকারত্ব ও দারিদ্র্য বৃদ্ধি পায়।

(গ) সামাজিক ও ধর্মীয় কারণ—

ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতি ব্রিটিশদের অবজ্ঞা এবং বর্ণবৈষম্য বিদ্রোহের অন্যতম কারণ ছিল—

  • খ্রিস্টান মিশনারিদের কার্যকলাপ ও ধর্মান্তরিত করার প্রচেষ্টা হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করে।
  • ধর্মীয় প্রতিবন্ধকতা আইন ১৮৫০ সালে পাশ হওয়ার ফলে ধর্মের ভিত্তিতে সম্পত্তি বণ্টনে পরিবর্তন আনা হয়, যা ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় সমাজের জন্য একটি বড় আঘাত ছিল।

(ঘ) সামরিক কারণ—

  • ভারতীয় সৈন্যদের সাথে ব্রিটিশ সৈন্যদের বৈষম্যমূলক আচরণ করা হতো। তাদের বেতন ও পদোন্নতি ছিল সীমিত।
  • ১৮৫৬ সালের সাধারণ তালিকাভুক্তি আইন অনুযায়ী, সৈন্যদের ভারতের বাইরেও যুদ্ধ করার জন্য পাঠানো হতো, যা হিন্দু সৈন্যদের জন্য ধর্মীয় কারণে গ্রহণযোগ্য ছিল না।
  • নতুন এনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজে গরু ও শূকরের চর্বি ব্যবহারের গুজব (যা সৈন্যদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে) বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

উপসংহারঃ এইসব কারণ সম্মিলিতভাবে 1857 সালের বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট তৈরি করে। এটি কেবল সিপাহী বিদ্রোহ ছিল না, এটি ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় জনগণের একটি সম্মিলিত প্রতিরোধ।

📌আরও পড়ুনঃ

📌অষ্টম শ্রেণি ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here

📌অষ্টম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

Leave a Reply

  • Post comments:0 Comments
  • Reading time:10 mins read