একাদশ শ্রেণি বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার প্রশ্নপত্র | Class 11 Bengali 2nd Semester Question Paper wbchse

একাদশ শ্রেণি বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার প্রশ্নপত্র | Class 11 Bengali 2nd Semester Question Paper wbchse

📌 একাদশ শ্রেণি প্রশ্নপত্র সেমি-২ Click Here

একাদশ শ্রেণি প্রশ্নপত্র
বাংলা ‘ক’ ভাষা
দ্বিতীয় সেমিস্টার
পূর্ণমান – ৪০

১। অনধিক একশো পঞ্চাশ শব্দে যে কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×১=৫

১.১ ‘ছুটি’ গল্পে মামাবাড়িতে গিয়ে ফটিকের যে দুরাবস্থা হয়েছিল তা নিজের ভাষায় লেখো। ৫

উত্তরঃ ‘ছুটি’ গল্পে মায়ের অবাধ্য উচ্ছৃঙ্খল লেখাপড়ায় অমনোযোগী তেরো বছরের এক কিশোর হল ফটিক। মামা বিশ্বম্ভরবাবু ফটিকের দুরন্তপনা এবং দারিদ্রতার কথা ভেবে ফটিককে কলকাতায় নিয়ে যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করলে অত্যন্ত আগ্রহের সাথে ফটিক রাজি হয়। এরপর খেলার সাথী, মা ভাই ও প্রাণপ্রিয় গ্রামকে বিদায় জানিয়ে ফটিক পৌঁছে যায় শহর কলকাতায় মামার বাড়ি।

মামার বাড়ি পৌঁছাতেই মামীর সঙ্গে আলাপে ফটিকের উৎসাহে ভাটা পড়তে শুরু করে। মামী তাঁর তিন সন্তানের পরিবারে অনাবশ্যক পরিবার বৃদ্ধি বলে মনে করে অসন্তুষ্ট হন। মামীর স্নেহ মমতাহীন চোখ দুটি ফটিকের কাছে একটা ‘দুর্গ্রহের মতো’ মনে হতে থাকে। তাই মামীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফটিক প্রয়োজনের বেশি কাজ করেও মামীকে খুশি করতে পারেনি। লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে বললে মামীর কথাগুলিও তাঁর কাছে নিষ্ঠুর অবিচার বলে মনে হতে থাকে। স্কুলের মাস্টারমশাইয়ের মারধোর, ছেলেদের কটূক্তি, বই হারিয়ে গেলে মামীর তিরস্কার তাঁকে আরো স্কুল বিমুখ করে। এইভাবে প্রতিদিনের জীবনে মামীর অবহেলা এবং উপেক্ষায় ফটিকের কাছে মামার বাড়ি নরক বলে মনে হতে থাকে। ফলে প্রতিদিন ফটিকের মনে মায়ের স্নেহের অভাব বোধ হতে থাকে। সেই সবুজ ছায়াঘেরা গ্রাম, নদীর ধার, মুক্ত মাঠ এবং খেলার সাথীদের হাতছানি ফটিককে শহর কলকাতা থেকে পালাতে বাধ্য করে। কিন্তু অবিশ্রান্ত বৃষ্টিধারার মধ্যে পুলিশ জলে ভেজা ফটিককে তাঁর মামার বাড়িতে পৌঁছে দেয়। প্রচণ্ড জ্বরে প্রলাপ বকতে থাকা ফটিকের জীবন প্রদীপ চিরদিনের জন্য নিভে যায়।

১.২ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পটি আসলে আত্মআবিষ্কারের গল্প- বিষয়বস্তুর নিরিখে বক্তব্যটি ব্যাখ্যা করো। ৫

২। অনধিক একশো পঞ্চাশ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×১=৫

২.১ ভাবসম্মিলন কাকে বলে ? আলোচ্য পদটিতে রাধার আনন্দের যে চিত্র ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো। ২+৩=৫

উত্তরঃ ভাব সম্মিলন : বৈষ্ণব পদকর্তাগণ শ্রীমতী রাধার বিরহ-বিকারের আবেশ-জাত কল্পনার মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গ-সুখ উপভোগের যে পর্যায় নির্ধারণ করেছেন তাকে ‘ভাবসম্মেলন’ নামে অভিহিত করা হয়।

বৈষ্ণব রসশাস্ত্র অনুযায়ী প্রবাসের পর যখন নায়ক-নায়িকার মিলন সাধিত হয় তাকেই বলা হয় ‘সমৃদ্ধিমান সম্ভোগ’। কিন্তু বাস্তবে নায়ক শ্রীকৃষ্ণ মথুরা প্রবাসের পর আর কখনো বৃন্দাবনে ফিরে আসেননি বলেই শ্রীরাধার সঙ্গে তাঁর মিলন সম্ভব নয়। তবে বাস্তব জগতে যা সম্ভবপর নয়, ভাবজগতে তা সম্ভব। তাই বৈষ্ণবকবিগণ ভাবজগতে রাধাকৃষ্ণের মিলন সাধনের ব্যবস্থা করেছেন। অর্থাৎ ভাবজগতে স্বপ্ন-কল্পনার মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে শ্রীমতী রাধার যে ‘স্বপ্ন-সম্ভোগ’ তাকেই ‘ভাবসম্মেলন’ বা ‘ভাবোল্লাস’ বলে অভিহিত করা হয়।

রাধার অন্তরের আনন্দের চিত্র : সুদীর্ঘ বিরহ-যন্ত্রণা ভোগ করার পর মিলনের আনন্দে শ্রীরাধিকার অন্তরে যে উল্লসিত ভাব জেগেছে, তার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ‘মৈথিল কোকিল’ বিদ্যাপতি রচিত পাঠ্য ‘ভাব সম্মিলন’ পদটিতে। এই ‘ভাব সম্মিলন’ কবিতায় বিদ্যাপতির রাধা সাধারণ মানুষের মতোই সুখে উল্লসিত হন।

বহু বিরহের কাল কাটিয়ে আজ তিনি মিলনের আনন্দে উত্তাল। শ্রীকৃষ্ণ দর্শনে নিমেষে বিরহের দুঃখ ছাপিয়ে মিলনের আনন্দ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। রাধিকার মনে হচ্ছে কৃষ্ণ যেন চিরকাল তাঁর পাশে তাঁর ঘরেই আছেন। পাপী চাঁদ এতদিন তাঁকে যত দুঃখ দিয়েছে, প্রিয় মুখ দর্শনে আজ ঠিক ততখানিই সুখ তিনি পেয়েছেন। এখন যদি কেউ আঁচল ভরে ধন-ঐশ্বর্য দেয় তবু তিনি আর কৃষ্ণকে ছাড়তে পারবেন না। জগতের কোনো ধন ঐশ্বর্যই তো কৃষ্ণের সমতুল নয়। কারণ কৃষ্ণ তো রাধার শুধুমাত্র প্রেমিক বা বন্ধু নন, তিনিই তো রাধিকার সর্বস্ব। তিনি তাঁর শীতের চাদর, গ্রীষ্মের বাতাস, বর্ষার ছাতা, অকূল দরিয়ার নৌকো। তিনিই তাঁর ইহকাল, পরকাল। তিনিই তাঁর জগৎ, তিনিই তাঁর জগদীশ্বর।

শ্রীরাধিকার এতদিনের বিক্ষত যন্ত্রণাকে সম্পূর্ণ ভুলে মিলনের আনন্দে অধীর। তাই আজ তাঁর আনন্দের কোনো সীমা পরিসীমা নেই-

“কি কহব রে সখি আনন্দ ওর
চিরদিনে মাধব মন্দিরে মোর।।”

বিদ্যাপতির এই পদে রাধার অন্তরে যে উচ্ছ্বসিত আনন্দ জেগে উঠেছে তাঁর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে অনুপম ভঙ্গিতে। শ্রীমতী রাধিকা কৃষ্ণ-মিলন জনিত অপার্থিব সুখের উল্লাসে তৃপ্ত হয়েছেন, পরম আনন্দে উন্মুখর হয়েছেন।

২.২ লালন শাহ কে ছিলেন ? পাঠ্য লালনগীতিকা অবলম্বনে মূল বিষয়টি ব্যাখ্যা করো। ২+৩=৫

৩। অনধিক একশো পঞ্চাশ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×১=৫

৩.১ ‘আগুন’ নাটকের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো। ৫

ভূমিকা : নামকরণ হলো সাহিত্যকর্মের প্রধান অলঙ্কার। একটি শিরোনাম পাঠক বা দর্শকের কাছে কেবল আকর্ষণীয় নয়, বিষয়বস্তুরও পূর্বাভাস দেয়। বিজন ভট্টাচার্যের একাঙ্ক নাটক ‘আগুন’ (১৯৪৩) তার অনন্য দৃষ্টান্ত।

নাটকটি পাঁচটি দৃশ্যে বিন্যস্ত। প্রথম দৃশ্যেই ‘পুরুষ’ চরিত্রের উক্তিতে বিড়ির আগুনের উল্লেখে শব্দটির সূচনা ঘটে। তৃতীয় দৃশ্যে সতীশের মেয়ের নাম ফুলকি—যার অর্থ স্ফুলিঙ্গ, আগুনের আভাস বহন করে। এখানেই সতীশের সংলাপে ধরা পড়ে—“এখন সকালবেলাই তো আবার পেটে আগুন লেগে গেছে।” চতুর্থ দৃশ্যে কয়লার অভাবে চুলোর আগুন না জ্বলার প্রসঙ্গ আসে। তবে নাটকের মূল তাৎপর্য উদ্ভাসিত হয় শেষ দৃশ্যে। চালের লাইনে বিশৃঙ্খলার সময় এক যুবক হন্তদন্ত হয়ে এসে বলে—“আগুন! আগুন!” উত্তেজিত জনতা থেমে যায়। তখন যুবক জানায়—“আগুন জ্বলছে আমাদের পেটে।” এখানেই নাটকের আসল অর্থ উন্মোচিত হয়।

বাংলার দুর্ভিক্ষপীড়িত চিত্র নাটকের পটভূমি। অনাবৃষ্টি ও দুর্ভিক্ষের আগুন, মজুতদার ও কালোবাজারিদের লোভের আগুন, যুদ্ধের আগুন— সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। পেটের খিদের আগুনে মানুষ জ্বলতে থাকে। খাদ্যের জন্য ছুটে বেড়ানো মানুষ ক্রমে ক্ষুব্ধ ও বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। ফলে ‘আগুন’ শুধু ক্ষুধার প্রতীক নয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকটেরও প্রতীক হয়ে ওঠে।

সার্থকতা বিচার : এ নাটকের নামকরণ অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত। ‘আগুন’ শব্দে একদিকে খিদের তীব্রতা, অন্যদিকে দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ, মজুতদারি ও মানবিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের ইঙ্গিত ধরা দিয়েছে। তাই নামটি ব্যঞ্জনাধর্মী ও যথার্থ।

৩.২ ‘আগুন’ নাটকের চতুর্থ দৃশ্যে হরেকৃষ্ণ ও মনোরমার সংলাপের মধ্য দিয়ে যে ছবিটি ফুটে উঠেছে তা নিজের ভাষায় লেখো। ২+৩=৫

৪। অনধিক একশো পঞ্চাশ শব্দে যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×২=১০

৪.১ ‘পঁচিশে বৈশাখ’ প্রবন্ধে সৈয়দ মুজতবা আলি গান ছাড়া রবীন্দ্রনাথের অন্য কোন্ কোন্ গুণের উল্লেখ করেছেন ? তাঁর কাছে কবির গান অসম্পূর্ণ রূপে প্রতিভাত হয় না কেন ? ২+৩=৫

৪.২ ‘আজব শহর কলকেতা’য় ফরাসী বইয়ের দোকান দেখে লেখকের মনে কিরুপ ভাবের উদয় হয়েছিল ? দোকানের ভিতর ঢুকে লেখক কীরূপ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলেন ? ২+৩=৫

৪.৩ মার্ক টুয়েনের লাইব্রেরীর বিশেষত্ব কী ছিল ? আঁদ্রে জিদে কীভাবে তার লেখক বন্ধুদের শিক্ষা দিয়েছিলেন ? ২+৩=৫

৪.৪ “বাড়ির আড্ডায় ‘মেল’ মেলে না”- এরূপ উক্তির কারণ কী ? লেখক কোথায় কাদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন ? ২+৩=৫

৫। অনধিক একশো পঞ্চাশ শব্দে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×১=৫

৫.১ বাংলা গদ্যের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করো। ৫

৫.২ বাংলা কাব্যে জীবনানন্দ দাশের অবদান সম্পর্কে লেখো। ৫

৫.৩ ঔপন্যাসিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে আলোচনা করো। ৫

৬। নিম্নলিখিত যে-কোনো ১টি বিষয় নির্বাচন করে, নির্দেশ অনুসারে কমবেশি ৪০০ শব্দের মধ্যে ১টি প্রবন্ধ রচনা করো। ১০×১= ১০

৬.১ নিম্নে প্রদত্ত মানস-মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা করো। ১০

৬.২ প্রতিপক্ষের যুক্তির অসারতা প্রমান করে স্বপক্ষে যুক্তিক্রম বিন্যাস করে প্রবন্ধ রচনা করো। ১০

দূরদর্শন মানবজীবনকে সমস্যা জর্জরিত করে তুলেছেঃ

দূরদর্শনের অপকারিতা নিয়ে আজ অনেকেই সোচ্চার। এটি মানুষকে নেশাগ্রস্ত করে তুলেছে। নানাধরণের অনুষ্ঠানের আকর্ষণে বহু মানুষ এখন অনেকটা সময় দূরদর্শনের সামনে বসে কাটায়। ফলে তাদের নিত্যকর্মে বিঘ্ন ঘটে। এর আকর্ষণে শিক্ষার্থী ভুলে যায় পঠন-পাঠনের কথা, মানুষ ভুলতে বসেছে সামাজিক আদান-প্রদানের প্রয়োজনীয়তা, এর কোনো কোনো অনুষ্ঠানে থাকে নৈতিক অধঃপতনের বীজ। বর্তমান সমাজে কিশোর অপরাধীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য অনেকেই দূরদর্শনকে দায়ী করে। তাই বলা যায় দূরদর্শন মানবজীবনে যতই আনন্দের
আয়োজন করে থাক, তার কু-প্রভাব কোনো অংশে কম নয়।

📌 আরো দেখুনঃ

📌 একাদশ শ্রেণি প্রশ্নপত্র সেমি-২ Click Here

📌 একাদশ শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here

📌 একাদশ শ্রেণি বাংলা সিলেবাস Click Here

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

Leave a Reply

  • Post comments:0 Comments
  • Reading time:6 mins read