SECOND SUMMATIVE EVALUATION
CLASS 10 (X) WBBSE
GEOGRAPHY QUESTION PAPER
Class 10 Geography 2nd Unit Test Question Paper Set-1 wbbse | দশম শ্রেণির ভূগোল প্রশ্নপত্র দ্বিতীয় ইউনিট টেস্ট সেট-১
📌দশম শ্রেণির ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র সমস্ত বিষয় | Class 10 All Subject Unit Test Question Paper Click Here
Set-1
দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
দশম শ্রেণি বিষয় : ভূগোল
সময় : ১.২০ মিনিট পূর্ণমান : ৪০
১। সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো : ১x৮=৮
১.১ জীবজগতের ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলের গুরুত্বপূর্ণ গ্যাসীয় উপাদান হল—
(ক) নাইট্রোজেন (খ) অক্সিজেন
(গ) কার্বন ডাই অক্সাইড (ঘ) হাইড্রোজেন
উত্তরঃ (খ) অক্সিজেন।
১.২ ওজোন গহ্বর সৃষ্টি হয়েছে—
(ক) কানাডায় (খ) অ্যান্টার্কটিকায়
(গ) সাইবেরিয়ায় (ঘ) গ্রিনল্যান্ডে
উত্তরঃ (খ) অ্যান্টার্কটিকায়।
১.৩ বায়ুর আদ্রতার পরিমাপ করা হয় কোন যন্ত্রে ?
(ক) হাইগ্রোমিটার (খ) হাইড্রোমিটার
(গ) রেনগজ (ঘ) ব্যারোমিটার।
উত্তরঃ (ক) হাইগ্রোমিটার।
১.৪ সূর্য ও পৃথিবীর সরলরৈখিক অবস্থানকে বলে—
(ক) অ্যাপোজি (খ) পেরেজি (গ) সিজিগি (ঘ) অপসুর
উত্তরঃ (গ) সিজিগি।
১.৫ পৃথিবীর বৃহত্তম মগ্নচড়াটি হল—
(ক) ডগার্স ব্যাংক (খ) রকম ব্যাংক
(গ) সেবল ব্যাংক (ঘ) গ্রান্ড ব্যাংক
উত্তরঃ (ক) ডগার্স ব্যাংক
১.৬ ধান উৎপাদনে ভারতের প্রথম স্থানাধিকারী হল—
(ক) পশ্চিমবঙ্গ (খ) উত্তর প্রদেশ
(গ) অন্ধ্রপ্রদেশ (ঘ) পাঞ্জাব
উত্তরঃ (ক) পশ্চিমবঙ্গ।
১.৭ পশ্চিমবঙ্গে প্রথম পাটকল গড়ে ওঠে—
(ক) ঘুষুড়িতে (খ) শ্রীরামপুরে (গ) হাওড়ায় (ঘ) রিষড়াতে
উত্তরঃ (ঘ) রিষড়াতে।
১.৮ ২০১১ খ্রিস্টাব্দে আদমশুমারি অনুসারে ভারতের সর্বাধিক জনঘনত্বপূর্ণ রাজ্যটি হল—
(ক) কেরল (খ) বিহার (গ) পশ্চিমবঙ্গ (ঘ) উত্তর প্রদেশ
উত্তরঃ (খ) বিহার।
২। (ক) নীচের প্রশ্নগুলির নির্দেশ মতো উত্তর দাও : ১×২=২
২.১ সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুচাপের পরিমাণ কত ?
উত্তরঃ গড় সমুদ্রপৃষ্ঠীয় চাপের পরিমাণ ১,০১৩.২৫ মিলিবার (১০১.৩২৫ কিলোপ্যাসকেল; ২.৯২১ পারদ ইঞ্চি; ৭৬০ পারদ মিমি)।
অথবা,
কোন জলবায়ু অঞ্চলে প্রতিদিন বিকেলে বৃষ্টিপাত হয় ?
উত্তরঃ নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে প্রতিদিন বিকেলে বৃষ্টিপাত হয়। উষ্ণতা ও আর্দ্রতার কারণে প্রতিদিন পরিচলন বৃষ্টি দেখা যায়।
২.২ ইন্টারনেট কী ?
উত্তরঃ ইন্টারনেট হল বিভিন্ন নেটওয়ার্কের একটি বিশাল জাল যা সারা বিশ্বে বিস্তৃত এবং ব্যবহারকারীদের একে অপরের সাথে সংযুক্ত করে।
অথবা,
ভারতের দীর্ঘতম জাতীয় সড়ক পথ কোনটি ?
উত্তরঃ ভারতের দীর্ঘতম জাতীয় সড়ক পথ হল NH 44. এটি শ্রীনগর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এর দৈর্ঘ্য প্রায় 3,745 কিলোমিটার।
(খ) শূন্যস্থান পূরণ করো : ১×২=২
২.৩ জোয়ারের প্রাবল্য সর্বাধিক হয় _________ তিথিতে।
উত্তরঃ পূর্ণিমা ও অমাবস্যা।
অথবা,
একই স্থানে দুটি ভাটার মধ্যে সময়ের ব্যবধান ___________।
উত্তরঃ ১২ ঘণ্টা ২৬ মিনিট।
২.৪ বায়ুর উষ্ণতা বাড়লে বায়ুর চাপ __________ যায়।
উত্তরঃ কমে।
(গ) নীচের বিবৃতিগুলি শুদ্ধ হলে ‘শু’ এবং অশুদ্ধ হলে ‘অ’ লেখো : ১×২=২
২.৫ “হ্যারিকেন’ চীন সাগরে উৎপন্ন হয়।
উত্তরঃ ‘অ’
অথবা,
আপেক্ষিক আদ্রতা শতকরা এককে মাপা হয়।
উত্তরঃ ‘শু’
২.৬ এল-নিনো পেরু-ইকুয়েডর উপকূল দিয়ে প্রবাহিত হয়।
উত্তরঃ ‘অ’
(ঘ) বামদিকের সঙ্গে ডানদিক মেলাও :১×৪=৪
বামদিক | ডানদিক |
(১) মিলেট এর গবেষণাগার | (ক) কলকাতা |
(২) বৃহত্তম পেট্রোরসায়ন শিল্প | (খ) যোধপুর |
(৩) রেল ইঞ্জিন কারখানা | (গ) জামনগর |
(৪) ভারতের প্রথম মেট্রোরেল চালু | (ঘ) চিত্তরঞ্জন |
উত্তরঃ
বামদিক | ডানদিক |
(১) মিলেট এর গবেষণাগার | (খ) যোধপুর |
(২) বৃহত্তম পেট্রোরসায়ন শিল্প | (গ) জামনগর |
(৩) রেল ইঞ্জিন কারখানা | (ঘ) চিত্তরঞ্জন |
(৪) ভারতের প্রথম মেট্রোরেল চালু | (ক) কলকাতা |
৩। নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও (বিকল্প প্রশ্নগুলি লক্ষ্যণীয়) : ২×৪=৮
৩.১ বিশ্ব উষ্ণায়ন কি ?
উত্তরঃ বিশ্ব উষ্ণায়ন হলো পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। মানুষের বিভিন্ন কার্যকলাপের কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধির ঘটনাকে বিশ্ব উষ্ণায়ন বলা হয়। এই গ্যাসগুলি সূর্যের তাপ আটকে রেখে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
অথবা, বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল কাকে বলে ?
উত্তরঃ পর্বতের যে ঢালে আর্দ্র বায়ু বাধাপ্রাপ্ত হয় সেই ঢালে অর্থাৎ প্রতিবাত ঢালে বৃষ্টিপাত বেশি হয়। কিন্তু পর্বত অতিক্রম করে ওই বায়ু যখন বিপরীত ঢালে বা অনুবাত ঢালে পৌঁছােয়, তখন সেই বায়ুর মধ্যেকার জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যায়। এ ছাড়া, পর্বত অতিক্রম করে ওই বায়ু পর্বতের ঢাল বেয়ে নীচে নামে বলে তার উষ্ণতা ও জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা উভয়ই বৃদ্ধি পায়। এর ফলে অনুবাত ঢালে বৃষ্টিপাত বেশ কম হয়। এই অল্প বৃষ্টিপাতযুক্ত বা প্রায় বৃষ্টিহীন এলাকাকে বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল বলে।
৩.২ হিমপ্রাচীর কাকে বলে ?
উত্তরঃ উত্তর আটল্যান্টিক মহাসাগরে সুমেরু অঞ্চল থেকে আগত লাব্রাডর স্রোতের শীতল ও গাঢ় সবুজ রঙের জল এবং উপসাগরীয় স্রোতের উষ্ণ ও গাঢ় নীল জল বেশ কিছু দূর পর্যন্ত পাশাপাশি কিন্তু বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়েছে । এই দুই বিপরীতমুখী স্রোতের মাঝে একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা স্পষ্ট দেখা যায়, এই সীমারেখাকে হিমপ্রাচীর বলে।
অথবা, শৈবাল সাগর কী ?
উত্তরঃ শৈবাল সাগর হল একটি বিশেষ ধরনের জলাশয় যেখানে শৈবাল বা অ্যালগি প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এটি সাধারণত উষ্ণ এবং শান্ত জলাশয়ে ঘটে, যেখানে সূর্যের আলো প্রবাহিত হয় এবং পুষ্টির উপস্থিতি বেশি থাকে। শৈবাল সাগর পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি অক্সিজেন উৎপাদন করে এবং জলজ জীববৈচিত্র্যের জন্য আবাসস্থল সরবরাহ করে।
৩.৩ রবিশস্য ও খারিফ শস্যের পার্থক্য লেখো।
উত্তরঃ (i) বর্ষাকাল বা দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনকালের ওপর ভিত্তি করে ভারতে যেসব শস্য চাষ করা হয়, সেই সমস্ত শস্যগুলি খরিফ শস্য নামে পরিচিত।
অন্যদিকে, শীতকালে বা উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর আগমনকালে ভারতে যেসব শস্য চাষ করা হয়, সেই সমস্ত শস্য রবি শস্য নামে পরিচিত।
(ii) রবিশস্য চাষের জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার প্রয়ােজন। অন্যদিকে, খারিফ শস্য চাষের সময় শীতল ও শুষ্ক আবওহাওয়া প্রয়ােজন।
৩.৪ কাকে কেন ভারতের ‘রূঢ়’ বলা হয় ?
উত্তরঃ দুর্গাপুরকে ভারতের রুর বলার কারণ : জার্মানির বিখ্যাত রুঢ় উপনদীর উপত্যকায় উন্নতমানের কয়লাখনিকে কেন্দ্র করে রুঢ় উপত্যকা ও তার নিকটবর্তী অঞ্চলে বড়াে বড়াে লােহা ও ইস্পাত, ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন প্রভৃতি কারখানা গড়ে উঠেছে। এই সমগ্র অঞ্চলটি রুঢ় শিল্পাঞ্চল নামে খ্যাত। ভারতেও একইরকমভাবে দামােদর উপত্যকার নিকটবর্তী রানিগঞ্জ, অণ্ডাল, দিশেরগড় প্রভৃতি কয়লা খনিকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুরে লােহা ও ইস্পাত, ভারী যন্ত্রপাতি নির্মাণ, রাসায়নিক সার প্রভৃতির কারখানা নির্মিত হয়েছে। এজন্য দুর্গাপুরকে ভারতের রুঢ় বলা হয়।
অথবা, কোন শিল্পকে কেন শিকড় আলগা শিল্প বলে ?
উত্তরঃ বিশুদ্ধ কাঁচামালভিত্তিক শিল্পকে শিকড় আলগা শিল্প বলা হয়। এই ধরনের শিল্পের ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় যে পরিবহন ব্যয়ের গুরুত্ব খুব কম হওয়ায় শিল্পকেন্দ্রগুলি কাঁচামালের উৎস অঞ্চলে, বাজারের নিকট কিংবা এই দুই-এর মাঝের কোনো অঞ্চলে অথবা উক্তস্থানগুলির বাইরে কোনো স্থানে গড়ে উঠতে পারে। তাই এই ধরনের শিল্পকে শিকড় আলগা শিল্প বা Foot Loose Industry বলা হয়। উদাহরন: কার্পাস বয়নশিল্প, বৈদ্যুতিক শিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প।
৪। যে-কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৩x২=৬
৪.১ নিরক্ষীয় জলবায়ু ও ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর তুলনা করো।
অথবা, আয়োনোস্ফিয়ারের গুরুত্ব লেখো।
উত্তরঃ আয়োনোস্ফিয়ার (Ionosphere) : মেসোস্ফিয়ার স্তরের শেষ সীমা হল মেসোপজ। আর এই মেসোপজের ওপরে প্রায় ৫০০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুমণ্ডলের স্তরকে আয়নোস্ফিয়ার বলে। এই স্তরে গ্যাসীয় কণাগুলি তড়িৎ-আধানযুক্ত বা আয়নিত অবস্থায় থাকে বলে, এই স্তরটিকে আয়নোস্ফিয়ার বলা হয়। এখানে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, ওজোন প্রভৃতি গ্যাস আয়নিত অবস্থায় থাকে। এই স্তরের নীচের অংশে উষ্ণতা অত্যন্ত দ্রুতহারে বৃদ্ধি পায় বলে স্তরটি থার্মোস্ফিয়ার (Thermosphere) নামেও পরিচিত। মেসোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমায় অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কম বেশি – ৯৩° সেলসিয়াস থেকে বাড়তে বাড়তে ৪৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় প্রায় ১২৩২° সেলসিয়াসে পরিণত হয়।
(১) ভূপৃষ্ঠের ঊর্ধ্বে ৮০ – ৬৪০ কিমি. পর্যন্ত বিস্তৃত হালকা বায়ুস্তরকে আয়নোস্ফিয়ার বলে।
(২) তড়িৎযুক্ত কণা বা আয়নের উপস্থিতির জন্য এই স্তর আয়নোস্ফিয়ার নামে পরিচিত।
(৩) এখানে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, ওজোন প্রভৃতি গ্যাস আয়নিত অবস্থায় থাকে।
(৪) প্রখর সূর্য কিরণের জন্য হালকা বায়ু দিয়ে গঠিত এই স্তরে বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের মাত্র ০.৫% আছে।
(৫) ভূপৃষ্ঠের বেতার তরঙ্গগুলো আয়নোস্ফিয়ার স্তর ভেদ করে আরও ওপরে যেতে পারে না বলে এই স্তর থেকে বেতার তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসে, তাই বিভিন্ন রেডিও স্টেশন থেকে প্রচারিত গান, বাজনা, নাটক, কবিতা, সংবাদ প্রভৃতি আমরা রেডিও মারফত বাড়ি বসে শুনতে পাই ।
৪.২ মুখ্য জোয়ার ও গৌণ জোয়ারের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
অথবা, বায়ুপ্রবাহ কীভাবে সমুদ্রস্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করে ?
৫। যে-কোনো দুইটি প্রশ্নের উত্তর দাও : ৫×২=১০
৫.১ বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তরঃ বায়ুমণ্ডলে বায়ুর চাপের তারতম্যের কারণসমুহ
বায়ুমণ্ডলে বায়ুর চাপের তারতম্য যে কারণগুলির জন্য ঘটে, সেগুলি হল—
(1) উষ্ণতার প্রভাব : (i) উন্নতা বৃদ্ধি ও বায়ুর চাপ: বায়ু উষ্ণ হলে প্রসারিত হয়। ফলে তার ঘনত্ব কমে যায় অর্থাৎ চাপ হাস পায়। এই কারণে নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর চাপ কম হয়। (ii) উষ্ণতা হ্রাস ও বায়ুর চাপ:উষ্ণতা কমলে বায়ু সংকুচিত হয়, ফলে তার ঘনত্ব বাস সুতরাং, চাপও বৃদ্ধি পায়। উভয় মেরু অঞ্চলে অতিরিক্ত ঠান্ডার বায়ুর চাপ বেশি হয়।
(2) বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ : জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায় বায়ুর তুলনায় হালকা হয় বলে এর চাপও কম হয়। এজন্য যে অঞলের বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে সেখানে বাহন চাপ কম হয়।
(3) উচ্চতার প্রভাব : সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ওপরের দিকে উঠলে বায়ুস্তরের গভীরতা বা বায়ুমণ্ডলীয় ভর ক্রমশ কমে যায় এবং এর ফলে বায়ুর চাপও হ্রাস পায়। এজন্য দুটি ভিন্ন উচ্চতায় অবস্থিত স্থানের মধ্যে যেটির উচ্চতা বেশি সেখানে বায়ুর চাপও অপেক্ষাকৃত কম হয়। যেমন— অসমের শিবসাগর ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং প্রায় একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও বেশি উচ্চতার জন্য দার্জিলিঙে বায়ুর চাপ শিবসাগরের তুলনায় অনেক কম থাকে।
(4) পৃথিবীর আবর্তন গতির প্রভাব : পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্যও বায়ুচাপের তারতম্য হয়। যেমন—পৃথিবীর আবর্তনের গতিবেগ দুই মেরুর তুলনায় মেরুবৃত্তপ্রদেশে বেশি বলে মেরুবৃত্তপ্রদেশের বায়ু বেশি পরিমাণে বিক্ষিপ্ত হয়। এর ফলে বায়ুর ঘনত্ব কমে গিয়ে। মেরুবৃত্তপ্রদেশে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে।
(5) স্থলভাগ ও জলভাগের বণ্টন : স্থলভাগ ও জলভাগের বিপরীতধর্মী চরিত্রের প্রভাবেও বায়ুর চাপের তারতম্য হয়। দিনের বেলা জলভাগ অপেক্ষা স্থলভাগ তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়। এর ফলে ভূপৃষ্ঠের বায়ু উত্তপ্ত ও হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায় ও নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। আবার রাতেরবেলায় স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে। শীতল হয়ে পড়ে এবং উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। এইভাবে স্থলভাগ ও জলভাগের বণ্টনের জন্য চাপের তারতম্য ঘটে।
অথবা,
পৃথিবীর প্রধান বায়ুচাপ বলয়গুলির সাথে নিয়ত বায়ুপ্রবাহের সম্পর্ক চিত্রসহ ব্যাখ্যা করো।
৫.২ চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের বিবরণ দাও।
উত্তরঃ চা চাষের উপযুক্ত ভৌগােলিক পরিবেশ—
ভারতের প্রধান পানীয় ফসল চা। চায়ের উৎপাদনে ভারত বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান (2017) অধিকার করে। চা চাষের জন্য উপযুক্ত ভৌগােলিক পরিবেশগুলি হল—
(ক) প্রাকৃতিক পরিবেশ—
(1) জলবায়ু : অল্প উষ্ণ, অধিক আর্দ্র মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলের উচ্চভূমি বা পর্বতের ঢালে চায়ের চাষ হয়।
(i) উষ্ণতা : চা চাষের জন্য গড়ে 16°সে-30°সে উষ্ণতা প্রয়ােজন। চা গাছ সমান বেশি উষ্ণতা বা অনেকটা ঠান্ডা আবহাওয়া সহ্য করতে পারলেও শীতকালে তুষারপাত এবং গ্রীষ্মকালে শিলাবৃষ্টিতে চা চাষের খুব ক্ষতি হয়।
(ii) বৃষ্টিপাত : চা চাষের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাতের প্রয়ােজন হয়, বছরে প্রায় 150-250 সেমি।
(iii) অন্যান্য : বৃষ্টিহীন গুমােট আবহাওয়া, ঘন কুয়াশা, শিশির বা তুহিন এবং তীব্র রােদ চা চাষের পক্ষে ক্ষতিকর।
(2) মৃত্তিকা : লৌহসমৃদ্ধ উর্বর দোআঁশ মাটি এবং পার্বত্য তৃণভূমির জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ মাটিতে (চারনোজেম মৃত্তিকা) চা চাষ ভালাে হয়।
(3) ঢালু জমি : চা গাছের গােড়ায় জল জমলে গাছের ক্ষতি হয়। এজন্য মালভূমি বা পাহাড়ের ঢালে চা চাষ করা হয়।
(4) উচ্চতা : তুষারপাতের সম্ভাবনা মুক্ত খুব উঁচু পার্বত্য ঢালে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট চা উৎপন্ন হয়। ভারতে তরাই অঞ্চলে 90 মিটার উচ্চতা থেকে শুরু করে দার্জিলিঙে 1980 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত চা বাগিচা রয়েছে।
(খ) অর্থনৈতিক পরিবেশ—
(1) শ্রমিক : চা গাছ থেকে বছরের বিভিন্ন সময়ে পাতা তােলা এবং বাগিচার পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রচুর নিপুণ শ্রমিকের প্রয়ােজন হয়। চা পাতা তােলার কাজে সাধারণত নারী ও শ্রমিক নিয়ােগ করা হয়।
(2) অনান্য : চা বাগিচা ফসল। আধুনিক যন্ত্রপাতি, সার, কীটনাশক প্রভৃতি ব্যবহারের সুযােগসুবিধা, যথেষ্ট মূলধন, উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাহিদা প্রভৃতির ওপর চা চাষ নির্ভরশীল।
অথবা,
পশ্চিম ভারতের কার্পাস শিল্প কেন্দ্রীভবনের কারণ ব্যাখ্যা করো।