সাহিত্য সঞ্চয়ন
নবম শ্রেণি বাংলা (প্রথম ভাষা)
আবহমান কবিতার SAQ প্রশ্নোত্তর নবম শ্রেণি বাংলা | Abohoman Kobitar SAQ Question Answer Class 9 Bengali wbbse
📌নবম শ্রেণি ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
📌 নবম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here
ব্যাখ্যাভিত্তিক সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর আবহমান কবিতা নবম শ্রেণি বাংলা | Class 9 Bengali Abohoman Kobitar Question Answer wbbse
∆ কমবেশি ৬০ শব্দের মধ্যে উত্তর দাও : প্রতিটি প্রশ্নের মান-৩
১. যা গিয়ে ওই উঠানে তোর দাঁড়া”— উদ্ধৃত অংশে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন ?
উত্তরঃ ‘আবহমান’ কবিতায় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী নাগরিক জীবনে ক্লান্ত মানুষকে তার একদা ফেলে-আসা গ্রামবাংলার উঠোনে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন। কারণ, জীবন সেখানে অনাবিল এবং সহজভাবে বয়ে চলে আজও। লাউমাচায় সন্ধ্যার বাতাসে দুলতে থাকা ছোট্ট ফুল সেই স্নিগ্ধ জীবনের প্রতীক। এই জীবনই ক্লান্ত মানুষকে বেঁচে থাকার আশ্বাস দিতে পারে, অবসন্নতার পরে তাকে আবার প্রাণময় করে তুলতে পারে। এইজন্যই কবি গ্রামবাংলার উঠোনে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন।
২.’ছোট্ট একটা ফুল দুলছে, ফুল দুলছে, ফুল / সন্ধ্যার বাতাসে।- এখানে কোন্ ফুলের কথা বলা হয়েছে ? উক্তিটির প্রাসঙ্গিকতা আলোচনা করো।
উত্তরঃ কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় ‘ছোট্ট ফুল’ বলতে গ্রামবাংলার পরিচিত লাউ ফুলের কথা বলেছেন। পল্লিগ্রামের শান্ত-স্নিগ্ধ পরিবেশে লাউ ফুল একটি অত্যন্ত পরিচিত দৃশ্য, যা সন্ধ্যার মৃদু বাতাসে দুলতে থাকে। এই উক্তির প্রাসঙ্গিকতা বোঝায় যে, লাউ ফুল গ্রামবাংলার এক চিরায়ত অঙ্গ এবং এটি একটি বিশেষ দৃশ্য, যা সাধারণত গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়। কবি এখানে এই পরিচিত দৃশ্যের মাধ্যমে দেশহারা মানুষের স্মৃতিকে উজ্জীবিত করতে চেয়েছেন।
গ্রামবাংলার শান্ত পরিবেশ এবং সন্ধ্যার বাতাসে লাউ ফুলের মৃদু দোলনা, স্মৃতির এক তাজা ছবি সৃষ্টি করে, যা বাংলার সাধারণ মানুষের মননে গেঁথে থাকে। এভাবেই কবি গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এবং শৈশবের স্মৃতির সঙ্গে কবিতার প্রাসঙ্গিকতা জড়িয়ে দিয়েছেন।
৩. ‘কে এইখানে ঘর বেঁধেছে নিবিড় অনুরাগে’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ?
উত্তরঃ ‘আবহমান’ কবিতায় কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আলোচ্য পঙক্তিটির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন যে, অনাদি অতীতে এই বাংলার ভূখণ্ডে প্রথম মানুষরা বসবাস করতে এসেছিলেন তার কথা কোনো ইতিহাস বইয়ের পাতায় লেখা নেই। কিন্তু যিনি বা যাঁরা এখানে এসেছিলেন, তাঁরা এই সুজলা সুফলা-শস্যশ্যামলা দেশকে ভালোবেসেই এখানে বসতি গড়েছিলেন। পরম মমতায় তাঁরা এই দেশকে নিজেদের আত্মার আত্মীয় করে নিয়েছিলেন।
৪. “কে এইখানে ঘর বেঁধেছে”— ‘ঘর বেঁধেছে’ কথাটির তাৎপর্য কী ?
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘আবহমান’ কবিতা থেকে উদ্ধৃতিটি নেওয়া হয়েছে। মানুষের জীবনধারণের প্রাথমিক তিনটি চাহিদা হল অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান। বাস করতে মানুষ ঘরবাড়ি তৈরি করে। কিন্তু ঘর বাঁধা কথাটি ব্যাপকতর অর্থে ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ শুধু ইট-কাঠ-পাথর দিয়ে বাসস্থান তৈরি করা নয়। এর ভিত তৈরি হয় স্নেহ-মমতামাখা সম্পর্কের উষ্ণতা দিয়ে এবং আপন করে নেওয়ার চেষ্টা থেকেই। বাংলায় আসা মানুষজনও সেভাবেই এদেশকে ভালোবেসে এখানে ঘর বেঁধেছে।
৫. “কে এইখানে হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসে”— পঙক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘আবহমান’ কবিতা থেকে এই উদ্ধৃতাংশটি নেওয়া হয়েছে। কবিতায় যে মানুষ একদিন গভীর অনুরাগ দিয়ে গ্রামসভ্যতা গড়ে তুলেছিল সেই মানুষই নগরসভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য আর সমৃদ্ধির টানে গ্রাম ছেড়ে শহরে গিয়ে বাসা বেঁধেছিল। কিন্তু শহরের জীবন ঐশ্বর্য আর সমৃদ্ধি দিলেও মানুষকে শান্তি দিতে পারেনি। তাই ‘এইখানে হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসে’ অর্থাৎ গ্রাম্যজীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া মানুষ আবার শান্তির খোঁজে গ্রামেই ফিরে আসে।
৬. “কে এইখানে হারিয়ে গিয়েও আবার ফিরে আসে”– উদ্ধৃত পঙক্তিটিতে কবির বক্তব্য সংক্ষেপে বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘আবহমান’ কবিতায় নগরজীবনের যান্ত্রিকতায় ক্লান্ত মানুষের গ্রাম্যজীবনের টানে ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে। একদা মানুষ তার গভীর ভালোবাসায় আশ্রয় নিয়েছিল গ্রামবাংলায়। আপন করে নিয়েছিল তার আশ্রয়কে। কিন্তু গ্রামীণ সভ্যতার ভাঙন ঘটিয়ে নগরসভ্যতার বিকাশে মানুষ শহরমুখী হয়। কিন্তু স্বাচ্ছন্দ্য, বিলাস, আড়ম্বরের উল্টোদিকে সেখানে তৈরি হয় ব্যস্ততা, ক্লান্তি, অবসাদ। মানুষকে তাই বারবার শিকড়ের সন্ধানে বেঁচে থাকার তাগিদে ফিরে আসতে হয় তার ফেলে আসা গ্রাম আর প্রকৃতির কাছে।
৭. ‘এই মাটিকে এই হাওয়াকে আবার ভালোবাসে।’– এই মাটি হাওয়াকে আবার ভালোবাসার কারণ কী ?
উত্তরঃ জীবন সৃষ্টির শুরু থেকে মাটি ও হাওয়ার উপরেই নির্ভর করেই জীবন গড়ে উঠেছে। মাটি তার বাসস্থান, বাতাস তার শ্বাসবায়ু। তার পর কতযুগ চলে গেছে কিন্তু মানুষের ঘর বাঁধার আকাঙ্ক্ষা এখনো অটুট আছে। যে জন্মভূমির মাটিতে সে বড় হয়ে উঠেছে, সেই মাটিতে ফিরে আসার তাঁর ইচ্ছা চিরন্তন। মানুষের এই চিরকালীন ঘর বাঁধার ইচ্ছা, ফেলে আসা ঘরের প্রতি তাঁর মমতা, জন্মভূমির প্রতি অদম্য আকর্ষণ তাঁর চিরন্তন। বারংবার এই মাটির টানে মানুষ ফিরে আসে, ভালোবেসে ঘর বাঁধে। বারংবার এই ঘর বাঁধার তাগিদ, জন্মভিটের টান, এইগুলো বোঝাতে কবি ‘আবার’ কথাটা ব্যবহার করেছেন।
৮. এই মাটিকে এই হাওয়াকে আবার ভালোবাসে।’– ‘মাটি’ ও ‘হাওয়া’কে ভালোবাসার কারণ কী ?
উত্তরঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে মাতৃভূমিহারা মানুষের চিরকালীন আবেগ ও ভালোবাসার কথা ধ্বনিত হয়েছে। পল্লিপ্রকৃতির কোনো এক নিভৃত অন্তরে নিবিড় অনুরাগে তারা ঘর বেঁধেছিল। সেখানকার উঠান-লাউমাচা ছোটো ফুল-ঘাসের প্রাণময় গন্ধ বাগানের শুভ্র কুন্দফুলের হাসি অর্থাৎ হাওয়া ও মাটির অমোঘ আকর্ষণই তাকে বিচ্যুত স্বদেশে ফিরিয়ে আনে। কেননা শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত জন্মস্থানের মাটি-হাওয়ার চিরন্তন আহ্বানের আর্তি তার নির্বাসিত ব্যক্তিমনকে অফুরান মুক্তির আকুলতায় জীবনভর জাগিয়ে রাখে।
৯. ‘ফুরয় না তার কিছুই ফুরয় না’— উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বুঝিয়ে লেখো। ৩
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘আবহমান’ কবিতার অংশবিশেষ। নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্যের হাতছানিতে মানুষের গ্রাম ছেড়ে নগরযাত্রা আজও বিদ্যমান, কিন্তু কিছুটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর নাগরিক সভ্যতায় ক্লান্ত হয়ে মানুষ চায় মুক্তি। কবি সেইসব মানুষদের যারা এক সময় গ্রাম বাংলার প্রকৃতিকে গভীর ভাবে ভালোবেসে নিবিড় অনুরাগে ঘর বেঁধেছিল, তাদের পুনরায় ফিরে আসাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের অভয় দিতে তিনি প্রশ্নোদ্ভূত উক্তিটি করেছেন। অর্থাৎ তাদের শৈশবের লীলাভূমি আজও অটুট আছে।
১০. ‘ফুরয় না তার যাওয়া এবং ফুরয় না তার আসা।’– উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ নগরসভ্যতার সৃষ্টির সঙ্গেই গ্রাম থেকে মানুষের শহরের উদ্দেশ্যে চলা এক ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। সুখ-স্বাচ্ছ্যন্দের খোঁজে মানুষের এই চলা অবিরাম। কিন্তু ফিরে আসার প্রক্রিয়াও এর মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে থাকে। যন্ত্রসভ্যতার চাপে ক্লান্ত, অবসন্ন মানুষ চায় অবসর। তখনই সে ফিরে আসে গ্রামে। প্রকৃতির সহজ জীবনধারার সংস্পর্শে এসেই নাগরিক মানুষ পেতে চায় মুক্তির নিশ্বাস। এভাবেই অবিরাম যাওয়া-আসা চলতেই থাকে।
১১. ‘ফুরয় না সেই একগুঁয়েটার দুরন্ত পিপাসা।’– কোন্ পিপাসাকে, কেন দুরন্ত বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ পিপাসা কথার অর্থ হল তৃষ্ণা। তৃষ্ণার্ন্ত মানুষ তার পিপাসা নিবারণের জন্য জল পান করে। এই কবিতা অনুযায়ী পিপাসা বলতে বলা হয়েছে জন্মভূমির প্রতি টান যা মানুষের কাছে প্রবল আকাঙ্খা, যা মানুষ কখনো অস্বীকার করতে পারে না। জন্মভূমি প্রত্যেকেই তীব্র ভাবে আকৃষ্ট করে। গাছের শিকড় যেমন মাটির তলায় থাকে, কোনো ব্যাক্তি যেখানে বড় হয়ে ওঠে সেখানে তার শিকড় প্রোথিত হয়ে যায়। যদি কোনো কারণে জন্মভূমির সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ ঘটে, তবুও সে বারবার তাঁর জন্মভিটেতে ফিরে আসতে চায়। কারণ সেই জন্মস্থানের মাটির সঙ্গে তার আত্মিক যোগাযোগ। তাই তাঁর এই পিপাসা দুরন্ত।
১২. ‘সারাটা দিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে’,– উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ জন্মভিটে জন্মভূমির আকর্ষণ চিরন্তন। সব কিছুর মধ্যে মিশে আছে তার ভালোবাসা ভরা জন্মভূমির স্মৃতি। যা কখনো কোনোদিন ভোলা যায় না। মনে সবসময় তার প্রবল ইচ্ছা থাকে মাতৃভূমির বুকে ফিরে আসার জন্য। যখন সে এসে পৌঁছাতে পারে তার মাতৃভূমির কাছে তখন সে প্রকৃতির মধ্যে খুঁজে নিতে চায় তার পুরোনো সময়ের সুগন্ধ। আপন মনে স্মৃতিচারনায় সে থাকে নিমগ্ন। ঘাস জন্মায় মাটির বুক থেকে। সেই মাটির সঙ্গে মানুষের নিবিড় যোগাযোগ। সেই মাটির মধ্যে সে নিজেকে খুঁজে পায়। তাই এখানে কবি বলেছেন সারাটাদিন আপন মনে ঘাসের গন্ধ মাখে।
১৩. ‘সারাটা রাত তারায় তারায় স্বপ্ন এঁকে রাখে।’– কে, কেন স্বপ্ন আঁকে ? ১+২=৩
উত্তরঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে কবি শহরে নির্বাসিত ব্যক্তিমনের স্মৃতিমেদুরতার স্বরূপ উন্মোচন করেছেন। আজন্ম চেনা নদী-হাওয়া-মাটির অন্তর্লীন অনুভূতির শিকড় সত্তার গভীরে বহমান। তাই ছিন্নমূল মানুষ তার প্রিয় প্রকৃতিলোকে পুনরায় ফেরার ব্যাকুলতায় অস্থির হয়। এই ব্যাকুলতার তীব্রতায় অন্ধকার রাতের নির্জন প্রহরে সে একাকী এক স্বপ্নে পাড়ি দেয়। সে ফেলে আসা অতীতের সুখস্মৃতি এবং তা ফিরে না পাওয়ার অপূর্ণ বাসনা-সম্বল নানান ছবি যেন সুদূর তারায়-তারায় এঁকে চলে নিজস্ব খেয়ালে।
১৪. “নটে গাছটা বুড়িয়ে ওঠে, কিন্তু মুড়য় না”– পংক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁর ‘আবহমান’ কবিতায় দেখিয়েছেন যে, একদা মানুষ নিবিড় অনুরাগে ঘর বেঁধেছিল গ্রামবাংলায়। পরবর্তীকালে গ্রামসভ্যতার সমৃদ্ধি নষ্ট হয়ে যায় নাগরিক সভ্যতার আগ্রাসনে। কিন্তু প্রকৃতি সেখানে নিজের হাতে একইভাবে সাজিয়ে রাখে, জীবন বয়ে চলে স্বচ্ছন্দ সহজ গতিতে। আর শহরের ক্লান্ত মানুষেরা শান্তির খোঁজে বারবার ফিরে আসে তার কাছে। ‘নটে গাছটা বুড়িয়ে ওঠে; কিন্তু ‘মুড়য় না’ অর্থাৎ গ্রামবাংলা প্রাচীন হলেও তার গ্রহণযোগ্যতা শেষ হয় না।
১৫. “নেভে না তার যন্ত্রণা যে, দুঃখ হয় না বাসি”– উদ্ধৃত অংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ উদ্ধৃত পংক্তিটি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর “আবহমান” কবিতা থেকে নেওয়া। এই পংক্তির অর্থ হল, “যন্ত্রণা শেষ হয় না, দুঃখও বাসি হয় না”।
এই পংক্তিটিতে কবি দুঃখ এবং যন্ত্রণার চিরন্তনতাকে তুলে ধরেছেন। তার মতে, দুঃখ বা যন্ত্রণা কখনো শেষ হয়ে যায় না, বরং তা সময়ের সাথে সাথে আরও গভীর হয়। “আবহমান” কবিতাটিতে দুঃখ এবং কষ্টের এই চিরন্তন স্রোতকে “নটেগাছ” এর সাথে তুলনা করা হয়েছে, যা সময়ের সাথে সাথে বড় হয়, কিন্তু মরে যায় না। কবি এই পংক্তির মাধ্যমে জীবনের দুঃখ-কষ্টের গভীরতা এবং অবিরামতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন।
১৬. “হারায় না তার বাগান থেকে কুন্দফুলের হাসি”– পঙক্তিটির মধ্য দিয়ে কবি কোন্ জীবনসত্যকে তুলে ধরেছেন ?
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘আবহমান’ কবিতায় কবি গ্রাম-বাংলার সহজসরল, অনাবিল জীবনধারার কথা তুলে ধরেছেন। প্রকৃতিলালিত এই জীবনধারা গ্রামের মধ্যে চিরবহমান। সেখানে দুঃখ-যন্ত্রণা অব্যাহত থাকলেও প্রকৃতির স্নিগ্ধতা কোনোভাবেই বিঘ্নিত হয় না। জীবনের সহজ প্রবাহ এবং প্রকৃতির সৌন্দর্যের এই অবিনশ্বরতাকে বোঝাতে “হারায় না তার বাগান থেকে কুন্দফুলের হাসি” কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে।
১৭. তেমনই করেই সূর্য ওঠে, তেমনি করেই ছায়া / নামলে আবার ছুটে সান্ধ্য নদীর হাওয়া।’– উদ্ধৃতাংশটির অন্তর্নিহিত অর্থ বা তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর ‘অন্ধকার বারন্দা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘আবহমান’ কবিতা থেকে এই আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে।
বহু বহু বছর আগে মানুষ তার জীবন শুরু করেছিল প্রকৃতির মাঝে। ভালোবাসা দিয়ে সে গড়ে তুলেছিল তার বসতি। সময় চলে গেছে দিন বদলেছে, কিন্তু মানুষের তার জন্মভিটের প্রতি আকর্ষণ আজও অমলিন। তাই বারবার সে জন্মভূমিতে ফিরে আসে। সময় বদলায়, হয়তো তার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষগুলোও বদলে যায়। কিন্তু মানুষের এই ঘর বাঁধার ইচ্ছে, প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়ার ইচ্ছে, জন্মভিটের প্রতি টান- এগুলো বদলায় না। এগুলো অপরিবর্তনীয় থেকে যায়। কারণ এই টান চিরন্তন। একই ভাবে যুগ যুগ ধরে প্রকৃতিও কোনো পরিবর্তন ঘটে নি। এই প্রসঙ্গে কবি এই কথা বলেছেন।
১৮. ‘এখনও সেই ফুল দুলছে,’—কথাটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ বাংলার গ্রাম সভ্যতার শ্রীবৃদ্ধি ও গৌরব অনেকটাই নষ্ট হয়েছে নগর সভ্যতার অভিঘাতে। কিন্তু গ্রাম বাংলার যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তা শাশ্বত কালের। তা হারিয়ে যায়নি। তা এখনও গ্রাম বাংলার সম্পদ হয়েই আছে। যে মাটি আর হাওয়াকে ভালোবেসে গড়ে উঠেছিল গ্রামসভ্যতা, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার গৌরব নষ্ট হয়ে গেলেও প্রকৃতির সৌন্দর্যের গরিমা একইরকম থাকে। ‘এখনও সেই ফুল দুলছে’ কথাটির মধ্য দিয়ে গ্রামজীবন ও গ্রাম্য প্রকৃতির সেই চিরকালীনতাকেই বোঝানো হয়েছে।
📌 আরো দেখুনঃ
📌নবম শ্রেণি ইউনিট টেস্ট প্রশ্নপত্র Click Here
📌 নবম শ্রেণি বাংলা প্রশ্নোত্তর Click Here